somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরিবর্তন আসতেই হবে।

১৬ ই জুন, ২০১২ রাত ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুসলিম দেশের সঠিক শাসন ব্যবস্থাপনা কী হওয়া উচিৎ সে ব্যাপারে মুসলিম বিশ্ব ও পশ্চিমা মহলে অনেকেই ভিন্নমত প্রকাশ করেন। মুসলিম সমাজেও এ বিতর্কের অন্ত নাই। কিন্তু মুসলিম বিশ্বে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বিশেষ করে এসব দেশের প্রশাসন যে ভাবে চলছে তার অবসান হওয়া একান্ত দরকার এবং এর পরিবর্তন অবশ্যই আসতে হবে।

দূর্ভাগ্য হল মুসলিম দেশগুলাতে দীর্ঘ দিনের ইউরোপীয় শাসকদের উপনিবেশ তথা কলোনীয়্যল শাসনের পর সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের ঔরসে জন্ম-লাভকারী আযোগ্য, অসৎ ও ক্ষমতালোভী স্বৈরাচারী শাসক গোষ্টীর অগণতান্ত্রিক শাসনে বিপর্যস্ত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার কারণে মুসলিম বিশ্বের অবস্থা আজ এমন এক পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে, অন্যায়, অবিচার, জুলুম, যুদ্ধ, রক্তপাত, হত্যা, ধর্ষণ, বেকারত্ব, দারিদ্র্য, অশান্তি আর হতাশা হচ্ছে নিত্যদিনের ব্যাপার। পৃথিবীর এমন কোনও মুসলিম দেশ নেই যেখানে প্রতিদিন সংঘাত, সংঘর্ষ হচ্ছে না। দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার, দরিদ্রের উপর ধনীর বঞ্চনা ও শোষণে, শাসিতের উপর শাসকের অবিচার, ন্যায়ের উপর অন্যায়ের বিজয়ে, সরল মানুষের উপর ধূর্তের বঞ্চনায় পৃথিবী বিশেষ করে মুসলিম বিশ্ব আজ মানুষের বাসের অযোগ্য হতে চলছে! চারদিক থেকে মানুষের হাহাকার উঠছে- শান্তি চাই, শান্তি চাই।

তাই মুসলিম বিশ্বের অনেকে এ থেকে মুক্তি পেতে ইসলামী বিশ্বজনীন তথা ইউনিভার্স্যল ন্যায় নীতি ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখলেও প্রশ্ন হচ্ছে এ স্বপ্ন অদূর ভবিষ্যতে পূরণ করা কি সম্ভব হবে? আর ইসলামী রাষ্ট্র বলতে কি বুঝায় সে ব্যপারেই বা কয়জনের কাছে স্পষ্ট ধারণা আছে? আধুনিক মিডিয়ার বদৌলতে ইসলামকে সন্ত্রাস, উগ্রতা ও অজ্ঞতার সাথে এমনভাবে সম্পৃক্ত করা হয়েছে যে সাধারণ মানুষের মনে ইসলাম সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণা বৃদ্ধির প্রয়াস চলছে দিবারাত্র। আর এ জন্য ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার (complete code of life) পরিবর্তে ইসলামকে নিছক একটা ধর্ম হিসাবে মনে করাই সঠিক বলে দাবী করা হয় বিভিন্ন মহলে! অধিকন্তু পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার প্রভাবিত মিডিয়ার পক্ষে ইসলাম বিদ্বেষী প্রচারণা করতে আরো সহজ হচ্ছে ইদানীং মুসলিম বিশ্বে উগ্রবাদী, বোমাবাজী ও হিংসাত্মক আত্মঘাতী, মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে। অবশ্য এ সব সন্ত্রাসী কর্ম কাণ্ডের নেপথ্যেও যে কোন এক বিশেষ গোষ্টীর ইন্ধন নাই তা অস্বীকার করা যায় না। অনেকের ধারণা মুসলিমদের শত্রু যাতে মুসলিমদের ভিতর থেকেই সৃষ্টি হয় সে জন্য চলছে এ অপপ্রয়াস। সাধারণ মানুষ তো এদেরকে অর্থ বা অন্য কোন সাহায্য ও সহযোগীতা করে না। তাহলে এদেরকে কারা মদত দিয়ে থাকে এবং কারাই অস্ত্রের জাগান দেয়? সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী, প্রফেসর আর্নল্ড জোসেফ টয়নবি সেই ১৯৪৮ সালে তার লিখা Civilization on Trial গ্রন্থে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা লিখেছিলেন যা এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়। তিনি লিখেছেন "যে কোন সভ্যতা যখন চাপের মুখে পড়ে বা পতনের লক্ষণ দেখা দেয় তখন তাকে টিকে থাকার জন্য শত্রুর সন্ধানে লিপ্ত হতে হয়! তার মতে পশ্চিমা সভ্যতার কমিউনিজম ছিল তখনকার শত্রু কিন্তু ভবিষ্যতে একদিন আসবে ইসলামকেও আবার সে অবস্থার মোকাবিলা করতে হবে।" গত দশক থেকে মুসলিম ও ইসলামের বিপক্ষে পশ্চিমা বিশ্বের বিশেষ মহলের আচরণ ও তাদের মিডিয়ার অপপ্রচার দেখলে আর্নল্ড জোসেফ টয়নবির উপরোক্ত কথার সাথে কি আশ্চর্য মিল পাওয়া যায়! (সূত্র: Civilization on trial By Arnold Joseph Toynbee, Oxford Press 1948)

তবে যাবতীয় বিভ্রান্তি ও ধুম্রজালের মধ্যেও বিবেকবান মানুষ সত্যকে উপলব্ধি করতে সক্ষম হচ্ছে ধীরে ধীরে। মুসলিম বিশ্বে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে গণতন্ত্র না ধর্ম-তন্ত্র (Theocracy)? ব্যক্তি স্বাধীনতাকে উপেক্ষা করে কর্তৃপক্ষের, বিশেষত ধর্মীয় অনুশাসন ভিত্তিক রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের বশ্যতা স্বীকারের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা তথা Authoritarian সংস্কৃতির সঙ্গে গণতন্ত্র কীভাবে চলতে পারে? প্রশ্ন জাগে গণতন্ত্র ও শরীয়া আইন কি এক সাথে রাখা সম্ভব? অনেকের মতে রাজনীতিতে ধর্ম মিশালে গণতন্ত্র থাকবেনা। তারা মনে করেন রাজনীতিতে যদি ধর্মীয় অনুশাসন আসে তাহলে সমাজে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার বিলুপ্ত হবে।

এবার দেখা যাক উপরোক্ত প্রশ্নগুলার পর্য্যালোচনা করলে কি দাড়ায়? প্রথমত ‘ব্যক্তি স্বাধীনতার’ যে দোহাই পাড়া হয়, সেই ব্যক্তি স্বাধীনতাকে আধুনিক বিশ্বের বাস্তবতার সাথে যাচাই করে দেখতে হবে বর্তমানে এই স্বাধীনতা কতটুকু এবং কীভাবে বিরাজ করছে? বর্তমানে মিডিয়া মেনিপুলেটেড পদ্ধতিতে যেভাবে জনমত তৈরি করা হয়, তাতে ব্যক্তি স্বাধীনতা কতটুকু থাকে -তা দেখতে হবে। তারপর জাতীয় সম্পদাদির ব্যাপারে যে ধরণের কারসাজি করা হয়, তাতে কি জনগণের মত প্রকাশ পায়? দেশের আয় উন্নতির খাতে যে ব্যয় হয়, তাতে কি জনগণের মত প্রকাশ পায়? যদি না পায় তবে কাদের অভিমত জনগণের উপর চেপে আছে? কারা এথেকে স্বার্থ আদায় করছে? দ্বিতীয় প্রশ্নের আশংকার বিষয় অর্থাৎ ইসলামি ব্যবস্থায় ব্যক্তি ও সমাজের স্বাধীনতা কীভাবে নিশ্চিত হয়? মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত হয়। ইসলামী সিস্টেমে সমাজের সংখ্যালঘু অর্থাৎ মাইনরিটি বর্তমান চেয়ে কতটুকু বেশী স্বাধিকার অর্জন করবে ইত্যাদি ব্যাপারে কথা হচ্ছে বস্তুর নাম কি –সেটা আসল কথা নয়। বস্তুর মান ও গুণ কি তা যাচাই করতে হবে। থিওক্রেসী কি আপনাতেই একটি মন্দ বস্তু আর ডেমক্রেসী কি আপনাতেই একটি পবিত্র বস্তু যে তার নামের করণেই সমাজে শান্তির বন্যা বইতে শুরু করে? আমরা তো এগুলো কোথাও দেখিনা। তেমনি একটি সমাজ ব্যবস্থায় অথরিটিরও বিকল্প নেই। অথোরিটি বর্তমান ব্যবস্থায়ও আছে এবং তা করাপ্ট শ্রেণীর হাতে আছে। ইসলামী শাসন ব্যবস্থা যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আসে, তবে দেশ তার আপন গণতান্ত্রিক কাঠামোতেই থেকে যায়, কেবল মূল্যবোধের পরিবর্তন আসে। এখানে যারা আতংক সৃষ্টি (scare-mongering) করেন তারা যুক্তি-হীনভাবেই করে থাকেন কায়েমি স্বার্থ বজায় রাখতে। তবে ইসলামী রাষ্ট্রে কিছু কিছু ক্ষেত্রে, (ইউরোপীয় ব্যাখ্যায়), ব্যক্তি স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ হবে, এই অর্থে যে যেখানে আল্লাহর আইন সুস্পষ্ট, যেখানে ৫০+% দিয়ে হুট করে তা উড়িয়ে দেয়া যাবে না। তবে এসব ক্ষেত্র খুবই কম এবং যেগুলো উড়িয়ে দেয়া যাবে না, সেগুলো মানবতার কল্যাণের স্বার্থে থাকবে। মূল কথা হচ্ছে ইউরোপীয় গণতন্ত্র ‘গণস্বার্বভৌমত্বের’নামে যা করছে তা পক্ষান্তরে এক বিশেষ শ্রেণীর উপকারিতার স্বার্থে। এতে মানুষ গোলামীর আষ্টে-পৃষ্ঠেই আবদ্ধ থাকে। রাজনীতিতে ধর্ম মিশালে গণতন্ত্র থাকবেনা –এই কথা স্বার্থ-বাজ শ্রেণীর। ধর্মীয় আঙ্গিকের গণতন্ত্রের নমুনা ও সেক্যুলার আঙ্গিকের গণতন্ত্রের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য থাকবে, কিন্তু এজন্য গণতন্ত্র থাকবে না বলে দাবি করা ভুল হবে। সবচেয়ে বড় চাপাবাজি হচ্ছে এই যে অতি অল্প সংখ্যক সেক্যুলার/নাস্তিক ‘সাম্প্রদায়িকতার’দোয়াই দিয়ে ইসলামের ন্যায় বিচার ও মানব কল্যাণের আদর্শকে সরিয়ে রাখছে। তাছাড়া প্রশ্ন হল সংখ্যালঘুদের কারণে কি সংখ্যাগুরুরা তাদের মত ও পথ অবলম্বন থেকে বিরত হবে? এখানে গণতন্ত্র রইল কোথায়? তারপর ধাপ্পাবাজি হল এই যে সংখ্যাগুরু মুসলিমদের মত ও পথ রহিত করে যে অবস্থান খালি করা হল, সেই খালি স্থানটি কাদের মত ও পথ দখল করে আছে? সেটা কাদের আদর্শ? সেক্যুলারদের! বানরের পীঠাভাগ! ইসলামী আইনে সংখ্যা লঘুরা চাইলে তাদের নিজদের মধ্যে নিজের আইনি ব্যবস্থা চালু করতে পারবে। মূলত ইসলামী মূল্যবোধের রাষ্ট্রে সংখ্যালঘুদের অবস্থা বর্তমানের চেয়ে ভাল থাকবে এবং এতে লাভবান হবে।

গণতন্ত্র বলতে যা বুঝায় তা হল দেশের অধিকাংশ জনমতের পক্ষে জনগণের নির্বাচিত সরকার। অনেক মুসলিম ও পশ্চিমা বিশ্বের সরকার গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, স্বাধিকার অর্থ বলতে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি মনে করলেও বাস্তবে স্বাধীনতা, স্বাধিকার বলতে মুসলিম বিশ্বের জনগণ ধর্মনিরপেক্ষতার রাজনীতি মনে করে না যার প্রমাণ পাওয়া যায় সাম্প্রতিক আরব বিশ্বের গণজাগরণের পরবর্তী নির্বাচনের ফলাফল দেখলে। তাই নির্বাচনের ফলাফল যখন ইরাকের শিয়াদের এবং ফিলিস্তিনে হামাসের পক্ষে যায় তখন পশ্চিমা বিশ্বের ও ধর্মনিরপেক্ষতা-বাদীদের কাছে তা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সাথে সাংঘর্ষিক মনে হয়। এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নাই বিশ্বে প্রচলিত ধর্মনিরপেক্ষতার গণতন্ত্র বর্তমানে পুঁজিবাদী দুর্নীতির কবলে বন্দী যার ফলে গণতান্ত্রিক সরকারের নামে যারা যেখানেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসে তারা জনগণের স্বার্থ না দেখে পুঁজিপতিদেরই স্বার্থ রক্ষা করে। অন্য কথায় বাহ্যত জনগণের সরকার বলে দাবী করলেও আসলে তারা পুঁজিপতিদেরই সরকার। বিশ্বের চলমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দাবীদার খোদ আমেরিকার অবস্থার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় সেখানে আজ গণতন্ত্র বলতে অভিজাত সম্প্রদায়ের শাসন ব্যবস্থা ছাড়া আর কিছু নয়। সত্যিকার অর্থে অমেরিকার রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক সরকার না বলে অভিজাত সম্প্রদায়ের পরিচালিত একটি স্বৈরাচারী Plutonomy (dictated) তথা অভিজাততন্ত্রের সমাজ ব্যবস্থা বলা যায়। প্লুটনমী বলতে কি বুঝায় তা বুঝতে চাইলে এই লিংক দেখুন।

মুসলিম বিশ্বের বাস্তবতা হল কোথায়ও ইসলাম অথবা জনগণের সঠিক প্রতিনিধিত্ব করার সক্ষম লিডারশীপ বা নেতৃত্ব দেয়ার মত কোন একক ব্যক্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর সে রকম এক নেতৃত্ব গড়ে উঠা বা খুঁজে পাওয়ার যোগ্যতার প্রকট অভাব মুসলিম সমাজে। কেননা বৃহত্তর জনগোষ্টি এখনও অশিক্ষিত ও অজ্ঞতায় নিমজ্জিত। ইসলাম এমন কোন জীবন ব্যবস্থা নয় যে এটা মানুষের উপর জোর করে গ্রহণযোগ্য করা যাবে। ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা উপর থেকে নিচে যায় না বরং ইসলামী সমাজ গড়ে নীচ থেকে উপরের দিকে। সাধারণ মানুষের মাঝে যতটুকু ইসলামী চেতনা ও আদর্শের অনুসরণ ও অনুপ্রেরণা থাকবে তার চেয়ে বেশী কিছু জাতীয় পর্যায়ে পাওয়ার আশা করা যায় না। তাই আজকে সময়ের দাবী হচ্ছে মুসলিম সমাজে গণতন্ত্রের অভ্যাস করতে হলে প্রথমে তৃণমূল পর্যায়ে মানুষকে গণতন্ত্র কি তা শিক্ষা দিতে হবে। গণতন্ত্র কি ভাবে কাজ করে, এবং এটাকে নিরাপদ রাখতে ও সফলকাম করতে কি প্রয়োজন তা জানতে হবে। প্রশিক্ষণ শুরু করতে হবে মসজিদে, গ্রামে তথা তৃণমূল পর্যায়ে এবং তা করতে পারলে এক সময় আসবে জাতীয় পর্যায়ে ইসলামী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়া সক্ষম হবে। মিশরের ৩৫ বছরের অত্যাচারী শাসনের ফলেও সে দেশের জনগণের সাথে ইসলামী আদর্শের অনুসারী মুসলিম ব্রাদারহুডের সম্পর্ক মুছে ফেলা সম্ভব হয় নাই। কেননা তারা বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক কাজের মধ্যমে জনগণের সাথে সম্পৃক্ত ছিল। পুঁজিবাদী দূর্নীতির কবলে বন্দী পশ্চিমা গণতন্ত্রের বিকল্প হিসাবে ইসলামী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ছাড়া বিশ্ব মুসলিমদের মুক্তির কোন উপায় নাই এ উপলব্ধি অনুভব হচ্ছে সর্বত্র। তবে এ প্রেরণাকে সফল করতে দরকার:

১) ধর্মীয় নেতৃত্বে যারা আছেন তাদেরকে আধুনিক জ্ঞানে শিক্ষিত হওয়ার এবং বাক্সবন্দী মানষিকতার অবসান করার।

২) মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রদান, যার অভাব বর্তমান মুসলিম সমাজে প্রচুর।

৩) গণতান্ত্রিক সমাজে সকল কাজে জনগণের অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা, যা শত শত বছর ধরে মুসলিম সমাজে অবহেলিত।

৪) নতুন প্রজন্মের কাছে ইসলামী মূল্যবোধের আদর্শ প্রতিফলিত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া। ইসলামের বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্ববোধ, ন্যয়বিচার, মানবাধিকার ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ সম্পন্ন একটি সুশিক্ষত যুবসমাজ গড়ে তোলা এবং সে প্রচেষ্টা সমাজের সর্ব মহলে বিশেষ করে প্রতিটি পরিবার থেকে শুরু করা।

৫) অসৎ ও অযোগ্য ব্যক্তিদেরকে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের নেতৃত্বে আসা থেকে বিরত রাখা এবং সে জন্য জনমত গড়ে তুলতে ইন্টারনেট ব্লগ, সামাজিক নেটওয়ার্ক থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরে সর্বদা সোচ্চার থাকা ।

৬) একই সাথে প্রয়োজন সম্পদের সুষম বন্টন এবং সবার জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের ন্যায্য সুযোগ প্রদান যাতে কোন বিশেষ গোষ্ঠী প্রয়োজনতিরিক্ত ধনী হবার সুযোগ না পায়।

বিশ্বজনীন ন্যয়-নীতি ভিত্তিক ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যপারে রাসুল (সঃ) এঁর ভবিষ্যত বাণী কী তা জানতে বিশিষ্ট ইসলামী স্কলার ড: তারিক সুয়েদানের নিচের ভিডিও শুনার অনুরোধ করব।


তাহলে বিশ্বাসীদের জন্য সুখবর হল পরিবর্তন অবশ্যই আসছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কবে? তবে তার আগে যে প্রশ্ন আমাদেরকে করতে হবে তা হল এ পরিবর্তনের জন্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে একজন মুসলিম হিসাবে কী করছি? আমরা বিশ্বের পরিবর্তন চাই কিন্তু নিজেকে পরিবর্তন করতে চাই না! আর এই মনোবৃত্তির পরিবর্তন না এলে মুসলিম বিশ্বে পরিবর্তন আসবে না এটা নিশ্চিত। মুসলিম পরিবারে জন্ম নিলেই মুসলিম হওয়া যায়না। একজন অবিশ্বাসীর সন্তান যেমন মুসলিম হতে পারে, তেমনি মুসলিমের সন্তানও কট্টর অমুসলিম হতে পারে। একজন মুসলিম হওয়ার অর্থ শুধু বিশ্বাসী হওয়া নয়, বরং সে বিশ্বাসের পক্ষে নিষ্ঠাবান কর্মীও হওয়া। তাই একজন মুসলিম তার বিশ্বাসকে কখনোই চেতনায় বন্দী রাখে না; বরং কর্ম, আচরণ, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও যুদ্ধবিগ্রহসহ সকল ক্ষেত্রে সে বিশ্বাসের প্রকাশ ঘটায়
সুত্র: সংলাপব্লগ ডট.কম
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০১২ রাত ১১:০৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×