সন্ধ্যা হবে হবে এই মুহুর্তে প্রায়ই মন খারাপ হয়ে যায়। ঠিক কী কারণে এমন হয় তার কোনো যথাযথ উত্তর বের করতে পারি না৷ মনে মনে একটা হাইপোথিসিস দাঁড় করাই। হয়তো এতক্ষণ এই স্নিগ্ধ বিকালকে উপভোগ করছিলাম। হঠাৎ সন্ধ্যার থাবায় বিকেলের মৃত্যু হয়েছে৷ এই বোধ হয়ত আমার অবচেতন মনে নিজের মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয়। যার কারণেই সম্ভবত সবকিছু বিষণ্ণ লাগে অধিকাংশ সন্ধ্যায়।
এমনিতে মৃত্যু নিয়ে বেশিক্ষণ ভাবতে পারি না আমি। রাতে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে কোনোকোনোদিন চোখ বুজে ভাবি অচেনা এক জগতের কথা৷ তখন মৃত্যুর সাথে সাথে আরও আনুষঙ্গিক জিনিস ভর করে মাথায়৷ শেষ বিচারের কথা মনে পড়ে, মনে পড়ে জান্নাত-জাহান্নামের কথাও। পাপ-পূণ্যের কাঠগড়ায় দাঁড় করাই নিজেকে আর ভাবি এরথেকে তো আদৌ কোনো পরিত্রাণ নেই৷ কিছুক্ষণপর এলোমেলো লাগে সবকিছু৷ মনে হয় মাথার ভেতর সবকিছু জট পাকিয়ে গেছে৷
মৃত্যু নিয়ে ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মনে পড়ে যায় নয় বছর বয়সী একটা মেয়ের কথা৷ ক্যান্সার ধরা পড়ে তার। ডাক্তার আয়ু বেধে দেয় কয়েকমাস। হাসপাতালে রাখা হয় তাকে৷ এমনিতে শান্তই থাকতো সে কিন্তু যখনই তার বাবা-মা দেখা করতে আসতো তখনই চিৎকার, গালাগালি শুরু করে দিতো৷ একজন নার্স তাকে একাকী জিজ্ঞেস করে এমন করার কারণ। সে জানায়, ‘আমি যদি এখন ভালো আচরণ করি তাহলে আমার মৃত্যুর পর বাবা-মা আমার কথা মনে করে খুব কষ্ট পাবে৷ ভাববে মেয়েটা কতো ভালো ছিলো। তারা হয়তো তখন খুব কাঁদবে৷ তারচেয়ে যদি খারাপ ব্যবহার করি তাহলে আমার চলে যাওয়ার পর তাদের কষ্ট কম হবে’।