somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“ভয়ের অনুপস্থিতির নাম সাহস নয় বরং সাহস হচ্ছে এই বিচারবোধ যে, ভয়ের চাইতে গুরুত্বপূর্ণ অন্যকিছু আছে।”-এ্যাম্বরোজ রেডমুন।

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিখ্যাত কিছু মনিষীর উক্তি দিয়ে লেখটা শুরু করি ...
“সাহস হচ্ছে মৃত্যু থেকে ভীত হওয়া, কিন্তু বাঁচার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা।”-জন ওয়েন।

“ভয়ের অনুপস্থিতির নাম সাহস নয় বরং সাহস হচ্ছে এই বিচারবোধ যে, ভয়ের চাইতে গুরুত্বপূর্ণ অন্যকিছু আছে।”-এ্যাম্বরোজ রেডমুন।

“সাহস হচ্ছে ভয়কে রোধ করা, ভয়ের উপর প্রাধান্য বিস্তার করা। ভয়ের অনুপস্থিতি নয়।”-মার্ক টোয়াইন।

আমি কিছুদিন আগে একটা মুভি দেখেছিলাম "After Earth" এই মুভির নায়ক Will Smith তার ছেলে Jaden Smith কে একটা দুরসাহসিক অভিযানে পাঠানোর সময় একটা কথা বলেনঃ
“Fear is not real. The only place that fear can exist is in our thoughts of the future. It is a product of our imagination, causing us to fear things that do not at present and may not ever exist. That is near insanity. Do not misunderstand me danger is very real but fear is a choice.”

যারা সাহসী ও সফল মানুষ তারা ভয় পান না তা নয়। আপনার মত তাঁরাও ভয় পান কিন্তু তারা ভয়ের সামনে স্তব্ধ হয়ে যান না। আসল ব্যাপার হলো, তারা ভয় পাওয়া সত্বেও এগিয়ে চলেন এবং সফলতা লাভ করেন। সফল মানুষেরা জানেন যে, ইঁদুর হয়ে বাঁচার চাইতে মানুষ হয়ে মরাও ভাল। যদিও ইঁদুরের চাইতে মানুষের বাঁচার সম্ভাবনাই বেশী। তাই আপনি আর একটু সাহস দেখালে সকলের জন্যই তা ভাল হবে। আপনি তা করবেন কি?

কাজেই ভয়কে ঝেড়ে ফেলে অথবা ভয় পাওয়া সত্বেও দৃঢ়সংকল্পে আপন কাজে অগ্রগামী হওয়াই মানুষের মত আচরণ। তাই ভয়কে অনুসরণ না করে বরং ভয়কে ভয়ের জায়গায় রেখেই আপনি আপনার কাজে অগ্রসর হোন। ভয় সত্বেও আপনি যত এগোতে পারেন আপনি ততখানিই মানুষ। আর ভয়কে অনুসরণ করে যতই আপনি ভয় পেতে থাকেন ততই আপনি ইঁদুর কিংম্বা অন্য কোনো নিুশ্রেণীর প্রাণী। এটি কোনো কথার কথা নয়, কোনো আবেগের কথাও নয়।

আপনার দৈনন্দিন জীবনে সাহসিকতার গুণটি কিন্তু তেমন মনোযোগ পায়না। সাহসিকতা গুণটি যেন সৈনিক, যোদ্ধা আর কর্মীদের জন্যই তোলা থাকে। আজকাল নিরাপত্তার ব্যাপরটিই যেন সব। সম্ভবত আপনি সবসময় দৃঢ় এবং সাহসী হওয়ার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত হয়েই এসেছেন। “এটা খুবই বিপদজনক। এ কাজ করো না। অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নিও না। জনতার মধ্যে নিজের দিকে মনোযোগ টেনো না। পারিবারিক ঐতিহ্য অনুসরণ কর। অপরিচিতদের সথে কথা বলো না। সন্দেহজনক লোকজনের ব্যাপারে সতর্ক থেকো। নিরাপদ থেকো।”- আপনি সবসময় এইসব কথাই শুনে এসেছেন।

আমাদের পিতামাতা সবসময় আমাদেরকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ব্যাপারে জোর দিয়ে চলার শিক্ষা দিতে চেয়েছেন। কিন্তু ব্যক্তিগত নিরাপত্তার উপর বেশী জোর দিয়ে চলার কুফল এই যে, এটা আপনাকে প্রতিক্রিয়াশীল করে গড়ে তোলে। কোনো ঘটনায় অংশ নেয়া বা কোনো ব্যাপারে দায়িত্ব নেয়ার পরিবর্তে ঘটনার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জীবন চালানোর অভ্যাস তৈরী হয়। অর্থাৎ তখন নিজস্ব লক্ষ্য স্থাপনের বদলে, লক্ষ্য অর্জনের পরিকল্পনা করার বদলে এবং সেগুলির পিছনে আকাঙ্খা নিয়ে ধাবিত হওয়ার বদলে আপনি সেগুলি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলেন।
কোনো কাজে বা ঘটনায় অংশ নিয়ে কিছু ফল লাভ করার চিন্তা আপনার জন্য ভীতিকর হয়ে উঠে। কোনো কাজ শুরু করার আগেই সেই কাজে কি কি বিপদ বা ঝুঁকি থাকতে পারে তা চিন্তা করে পছন্দের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে আপনার সাহস হয় না।
আপনি ঘটনাকে প্রভাবিত করতে পারেন না বরং ঘটনাই আপনাকে ভয় পাইয়ে দেয়। প্রতিক্রিয়া স্বরূপ আপনি কাজ করার চিন্তা বাদ দিয়ে পিছিয়ে আসেন। অবশেষে নিজের পছন্দনীয় একটি কাজে সফলতা লাভ করার পরিবর্তে আপনার অপছন্দনীয় বিরক্তিকর একটা কাজ নিয়ে আপনাকে থাকতে হয় যদিও তা আপনাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। দুনিয়া আপনাকে দয়া করে যা দেয় তার থেকে বেশী কিছু আপনি আদায় করে নিতে সাহস করেন না। অসফলতার অনুভূতি বয়ে নিয়ে আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও অন্যদের সাথে অসন্তোষপূর্ণ সম্পর্ক চালিয়ে যেতে হয় যদিও আপনি মনে মনে সফলতা লাভের গোপন বাসনা নিয়ে ভিতরে ভিতরে অবসন্ন বোধ করতে থাকেন।

মাঝে মাঝে মনে হয় দুনিয়ার সবকিছুকে বদলে দেবেন। কিন্তু সবকিছুকে উল্টে দেবেন এমনটি ভাবার আপনি কে? বরং জীবনে আপনার ভাগ্যকে বরণ করে নিন এবং সেখান থেকেই সবচে ভাল সুফলটি বের করে আনুন। জীবন আপনাকে এই মূহুর্তে যা দিয়েছে তা দিয়েই শুরু করুন। জীবনে আপনার বর্তমান অবস্থাকেই আপনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করুন। ভয় ঝেড়ে ফেলে সাহসের সাথে এগিয়ে যান। প্রথমে স্রোতের সাথে মিশে যান। আপনার একমাত্র আশা থাকবে যে, জীবনের স্রোত আপনাকে একটি অনুকূল অবস্থার দিকে নিয়ে যাবে।
সন্দেহ নেই যে, জীবনে সত্যিকারের কিছু বিপদ আছে যা আপনাকে এড়িয়েই চলতে হবে। কিন্তু সাহসিকতা এবং দুঃসাহসিকতার মধ্যে বিরাট পার্থক্য আছে। আমি এখানে বীরোচিত সাহসিকতার কথা বলছি না। আমি বলছি না যে, আপনি নিজের জীবন বিপন্ন করে কোনো জ্বলন্ত প্রাসাদ থেকে রাজকুমারীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসুন। সাহসিকতা বলতে আমি বুঝাতে চাচ্ছি কল্পিত সব ভয়কে সরাসরি জয় করুন এবং অনেক বেশী শক্তিশালী একটি জীবন গ্রহণ করুন যা থেকে আপনি নিজেকে বঞ্চিত করে এসেছেন। সফলতা লাভের পথে অসংখ্য কল্পিত ভয় আপনাকে তাড়া করে ফিরেছে। চিরজীবনের অভ্যাসমত ঘটনার নিয়ন্ত্রণ নেবার বদলে ঘটনা ঘটার আগেই বক্তিগত নিরাপত্তার চিন্তায় এবং অসফলতার ভয়ে প্রথমেই পথ ছেড়ে সরে এসেছেন। চিরজীবনের অভ্যাসের কারণে ঘটনাই আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। প্রতিক্রিয়া স্বরূপ আপনি সংঙ্কল্প বাদ দিয়ে যেমন-তেমন জীবন গ্রহণ করে নিয়েছেন। আপনি একটি সস্তা, একঘেঁয়ে, প্রতিক্রিয়াশীল জীবন যাপন করে এসেছেন। অথচ আপনি ইচ্ছা করলে ঘটনার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত না হয়ে বরং একটু সাহস দেখালেই ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

আমরা সফলতার চাপ নিতে চাই না। ফলে আমরা তাদেরকে যোগ্যতার আলোকে দেখি আর নিজেদেরকে দেখি অযোগ্যতার আলোকে যদিও তাদের মতই যোগ্যতা আমাদের আছে। সাফল্য বলতে আপনি কি বোঝেন সেটা যদিও আপনার নিজস্ব ব্যাপার। কখনও সাফল্য মানে একটি ভালো চাকুরী পাওয়া। কখনও সাফল্য মানে মনের মত জুটির সন্ধান পাওয়া। কখনও সাফল্য মানে অসংখ্য গুণগ্রাহী ও ভালো বন্ধুবান্ধব অর্জন করা। এমনকি কারো কাছে সাফল্য মানে সুন্দর একটি সব্জীর বাগান কিংম্বা বড় একটি মুরগীর খামার। অতএব সাফল্য মানে যে সবসময় অর্থসম্পদ লাভ তা নয়। হতে পারে খ্যাতি অথবা সম্মান অথবা প্রভাব-প্রতিপত্তি লাভ। আপনার কাছে সফলতার অর্থ যা-ই হোক না কেন তা অর্জনের উপায় হচ্ছে তাকে লাভ করার পর তাকে ধরে রাখতে সাহসী হওয়া। আর আগেই বলা হয়েছে “সাহস” অর্থ “ভয়”র অনুপস্থিতি নয় বরং ভয় পাওয়া সত্বেও নিজের কাজটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার নাম “সাহস”।

ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত

আমার সব সংগ্রহের লিংক
http://www.facebook.com/1015204995923210
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=632095143556714&id=135471029885797&__mref=message_bubble
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×