মধ্যপ্রাচ্যের ভু-রাজনীতি ও রাজনীতি জানা সম্পন্ন কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়- আচ্ছা, বলেন তো, ইসরায়েলের বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা ও যুক্তরাস্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রনের পথে সবচেয়ে বড় বাধা কে ?
একটুও সময় না নিয়ে তিনি উত্তর দিবেন-ইরান,সিরিয়া, হিজবুল্লাহ ও হামাস । কারণ এই চার শক্তি বাদে মধ্যপ্রাচ্যে আর ৫ম কোন শক্তিই নেই যে ইসরায়েলের আগ্রাসন ঠেকাতে পারে । এর আগে ইসরায়েলে বিরোধী যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিল একসময়কার মিশর । সেই মিশর আর আনোয়ার সাদাত, হোসনি মোবারকের মিশর ও মুরসির মিশর এক নয় বরং ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দানকারী মুসলমান দেশগুলির মধ্যে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ হল মিশর। জর্ডান, সৌদি, কাতার, আরব আমিরাত , তুরস্ক এদের সম্পর্কে বলার মত কিছু নেই । এরদোগানের তুরস্ক মাঝে মধ্যে একটু উচ্চবাচ্য করলেও কাজের সময় ঠিকই বিড়াল অন্দোরেমহলে চলে যায় । আর ইসরায়েলের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক ও সামরিক সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই ।
বৃহত্তর ইসরায়েল কি ?
ইহুদিবাদের ইউটোপিয়ান হল বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা। ।সত্যিকারভাবেই ইহুদিবাদ বলতে এক বিশেষ রক্ষনশীর ইহুদি সম্প্রদায়কে বলা হয় যারা বৃহত্তর ইসরায়ের সম্পর্কে অবগত এবং এর বাস্তবায়ন করাকে ঈশ্বরের পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করেন।ওদের বিশ্বাস অনুসারে, ঈশ্বর ইহুদিদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে নীল নদ থেকে ফোরাত পর্যন্ত সমগ্রভুখন্ড ইহুদিদের জন্য নির্ধারিত যা আজকের মিশর, জর্ডান, ইরাক, সিরিয়া ও ফিলিস্তিন তো আছেই। এই বিশ্বাস থেকে এই জন্য ইসরায়েল এখনো তাদের দেশের মানচিত্র অঙ্কন করেনি আর করার কথাও না।
৯/১১ এর ঘটনা ও এর তৎপরবর্তী ঘটনাসমূহ পর্যালোচনা করলেই এটা স্পষ্ট হবে যে মধ্যপ্রাচ্যে যা কিছু ঘটতেছে এর পিছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইহুদীবাদের হাত আছে। এনিয়ে প্রকাশ্যে মাহাথির মোহাম্মদ , ইরানের প্রেসিডেন্টসহ অনেক পশ্চিমা বিশ্লেষকগণ মন্তব্য করেছেন যে ৯/১১ সম্পূর্ণ ইহুদীবাদের চক্রান্ত । এর মূল উদ্দেশ্য হল ইসরায়েলের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা ।এই প্রেক্ষাপটে বলা যায় আফগানিস্থান আক্রমন ও ইরাক আক্রমন এরসবকিছুই হয়েছে প্রথমত ইসরায়েলের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা, বৃহত্তর ইসরায়েল প্রতিষ্ঠায় সহায়তা ও দ্বিতীয়ত মধ্যপ্রাচ্যের তেল সম্পদের উপর একচ্ছত্র মার্কিন আধিপত্য প্রতিষ্ঠা যেখানে ইসরোয়েল হল শুধুমাত্র পশ্চিমাদের মধ্যপ্রাচ্যের পাহাড়াদার।এমনকি আরব বসন্ত ও সেই আরব বসন্তকে হাইজ্যাকও হল ইসরায়েল ও মার্কিন লবির কাজ।
কারণ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে দীর্ঘদিন স্বৈরাচারী আরব বাদশাহগণ শাসন করাতে আরব জনগণ অনেকটা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল । আরব জাগরণের পূর্বেই বিভিন্ন সংস্থা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবিষয়ে সতর্কবানী উচ্চারণ করেছিলেন । সেই আরব জাগরণ যাতে ১৯৭৯ সালের ইরানের ইসলামি বিপ্লবের মত না হয় সেজন্য মার্কিন ও ইহুদী লবীরা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে । কারণ হল ইরানিরা সেই বিপ্লবে আমেরিকা ও ইসরায়েলকে গলা ধাক্কা দিয়ে তাদের দেশ থেকে বের করে দিয়েছিল ! এর বাস্তব প্রমান হল এখন যেসব দেশে আরব জাগরণ হয়েছে সেসব দেশ নতুন করে আবার ইসরায়েল ও আমেরিকা মুখী হয়েছে । যেমন লিবিয়া, মিশর।আসলে বলা যায়, এই আরবজাগরণ হল একটা বৃত্তের মত । যাদের কারণে ও যেখা্ন থেকে আরব বসেন্তর শুরু সেই ঢেউ সেখানেই এসে ও তাদের সাথেই আবার মিলিত হয়েছে।
আরব জাগরণ হাইজ্যাকের সর্বশেষ পিনটা ঠুকে দেওয়া হয়েছে সিরিয়ায় ও তার আগের পিনটা ঠুকে দেওয়া হয়েছিল লিবিয়ায়। এর কারণ আগেই বলেছিলাম, সেই আরব বসন্তের ঢেউ যাতে আর বাদবাকী আরব দেশগুলিতে না লাগে তার জন্য চুড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । আমেরিকা ও ইসরায়েলের দরকার ছিল পুরাতন বোতলে নতুন মদ । হয়েছেও তাই ।
যাইহোক, ইসরায়েলের পথের সবচেয়ে বড় কাটা ছিল সাদ্দামের ইরাক । সেটা অপসারণ হয়েছে কিন্তু সেই সাদ্দামের চেয়েও ইসরায়েলের জন্য আরো ভয়ংকর ও দু:স্বপ্ন হল ইরান । কারণ ইরান আর যাইহোক ইরাক বা লিবিয়ার মত নয় । তাছাড়া ইরান যেভাবে তার নিরাপত্তা বলয় সাজিয়েছে সেই দুর্গে হানা দেওয়া ছিল ইসরায়েল -আমেরিকার জন্য একটা দিবা স্বপ্ন !
না,এই আরব বসন্তকে পুজি করে সেটা এখন আর দিবা স্বপ্ন নয় । এটা এখন বলা যায় অনেকটা বাস্তবায়নের পথে। কারণ ইরান, হিজবুল্লাহ ও হামাসকে দুর্বল ও নিস্ক্রিয় করতে হলে তাদের যোগাযোগের মূল মাধ্যম সিরিয়াকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। যখন কোন আরব রাস্ট্রই সাহস পায়নি হামাস নেতাদের আশ্রয় দিতে তখন এই আসাদের সিরিয়ায় তাদের আশ্রয় দিয়েছিল আর হামাস ও হিজবুল্লাহর কাছে ইরানী সহায়তা যায় সিরিয়ার হাত হয়ে । তাই মাথা কাটতে হলে আগে তাদের হাত কাটতে হবে । সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ ২০০৮ সালে বুশকে বলেছিলেনও তাই ।
সাবেক মার্কিন পররাস্ট্রমন্ত্রী হেনরী কিসিন্জার একবার বলেছিলেন-মিশর ছাড়া আরবরা যুদ্ধ করতে সক্ষম নয়। আর আমি বলতেছি সিরিয়া ছাড়া আরব ও ইরান ইসরায়েলকে থামাতে সক্ষম নয়। যদি কোন ভাবেই আসাদের পতন ঘটে অনেকটা নিশ্চিত করে বলা যায় হিজবুল্লাহরও পতন বিশ্ববাসী অচিরেই দেখবে। হিজবুল্লাহর পতন হলে লড়াকু ও নির্ভিক হামাসের মুত্যৃ নিয়ে ভবিষ্যৎবানী করার কোন প্রয়োজন নেই । আর সিরিয়া না থাকলে ইরানকে হয়তো মার্কিন বিরোধী ভূমিকা পরিত্যাগ করতে হবে অথবা নিজেকে জ্বলে পুড়ে মরতে হবে । আর রাশিয়া ও চীনের মত দেশগুলিও এ থেকে বাদ যাবে না । সেই আগুন তাদেরও স্পর্শ করবে।কারণ সিরিয়া বধের পরের দৃশ্যে আছে ইরান বধ আর সেখানে সফল হলে যুক্তরাস্ট্রের নেতৃত্বাধীন হায়েনার দল চাপ বাড়াবে রাশিয়া, চীন ও ভারতের মত দেশগুলির উপর তাদের খেয়াল খুশিমত চলতে।
আর সুচতুর ইসরায়েল এই সুযোগে অবশিষ্ট ফিলিস্তিন ভূমি ও হয়তো আরবের কিছু অংশ লাইক ১৯৬৭ দখল করে নিবে কারণ ইসরায়েলকে প্রতিরোধ করার মত কোন শক্তি আর তখন নেই । মেরুদন্ডহীন ও মর্কিন পাপেট আরবরা সাময়িক লাভের জন্য যে ভুল পথে পা বাড়িয়েছে বুক চাপড়ানো ছাড়া প্রায়শ্চিত্ত করার মত তাদের আর কিছু থাকবে না !
রাশিয়া সেটা ভাল করেই বুঝেছে । লিবিয়ায় সফল হয়েছে পশ্চিমারা, এবার সিরিয়া বধের চেষ্টা চলছে, তারপরে হয়তো বধ হবে ইরান তারপর রাশিয়া ও চীনও । তাই তো রাশিয়া পশ্চিমাদের শত আপত্তি ও বাধা উপেক্ষা করে সিরিয়ার সাথে করা সামরিক চুক্তি অনুসারে সিরিয়াকে দিচ্ছে অস্ত্র, জঙ্গী বিমান ও অতি শীঘ্রই দেওয়ার কথা এস-৩০০ ।সিরিয়াকে মিগ-২৯ এর উন্নত সংস্করণ দেওয়ার জন্য নতুন করে আলোচনা করতেছে ! এইসব সাহসী সিদ্ধান্তের জন্য অভিনন্দন রাশিয়াকে।আর সম্ভবত ইরান দিচ্ছে লজিস্টিক সাপোর্টসহ কুটনীতিক বিভিন্ন সহায়তা ।
সিরিয়াকে নিয়ে খেলা জমে উঠেছে । তবে এই খেলায় বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সিরিয়ায় বর্তমানে যা হচ্ছে তাকে পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ ছাড়া আর কিছু বলা যায় না । একদিকে সিরিয়ার জঙ্গী গোষ্ঠী ওহাবী ও সালাফি ও এদের দোসর পাপেট আরব শাসকগণ, তুর্কি, যুক্তরাস্ট্রসহ গোটা ইউরোপ আর অন্যদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদ ও তার মিত্র রাশিয়া, ইরান ও চীন । কেউ কাউ কারো চেয়ে কম নয় ।যে সিরিয়া ছিল শিক্ষায় দীক্ষায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আরব দেশগুলির মধ্যে অগ্রগামী বিদেশী হায়েনা ও দেশীয় কিছু রাজাকার ও ক্ষমতালোভী মোনাফেকদের কারণে আজ সেই সিরিয়া ধ্বংসের পথে !!!
মূলত যুক্তরাস্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্ব, পাপেট আরব বিশ্ব ও জঙ্গীরাই এজন্য দায়ী । একটা প্রতিষ্ঠিত সরকার ও প্রতিষ্ঠিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আর যাই হোক যুদ্ধ সমর্থন করা যায় না । ওরা সিরিয়ার নাগরিক নয় -ওরা বিদেশীদের দালাল, পশ্চিমা বিশ্ব ও ইসরায়েলের পুতুল । পশ্চিমা বিশ্বের উদ্দেশ্য হল আসাদকে উৎখাত করে সিরিয়ায় একটি ধর্মভিত্তিক জঙ্গী সরকার প্রতিস্থাপিত করা । এই ধর্মভিত্তিক জঙ্গী রাস্ট্রের বিষ থাকবে কিন্তু কোন বিষ দাঁত থাকবে না । কারণ তাদের বিষে জর্জরিত হবে সিরিয়াসহ পুরো্ আরব বিশ্ব কিন্তু বিষদাঁত না থাকার দরুণ তারা যুক্তরাস্ট্র ও ইসরায়েলের জন্য কোন হুমকি হবে না, যেমন সৌদি আরব ও আফগানিস্থানের ছিল তালেবান।
ইসরায়েলী পত্রিকার রিপোর্ট অনুসারে ইসরায়েল সিরিয়ায় আল কায়েদা ভিত্তিক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জোর প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে । কারণ লক্ষ্য ইরান । আর এই উগ্র সালাফি, ওহাবীদের লক্ষ্য হল শিয়া তথা ইরান ! মধ্যপ্রাচ্যে ইতিমধ্যেই শিয়া-সুন্নি যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে - মিশরে গত রোববার সালাফি সম্প্রদায়ের শত শত উগ্র ব্যক্তি গিজা প্রদেশের আবু মুসালাম গ্রামে ঢুকে প্রভাবশালী শিয়া আলেম শেখ হাসান আবু শেহাতার বাড়িতে হামলা চালায়। এর ফলে ওই আলেম ও তার তিন সহযোগী নিহত হন। হত্যার পর তাদের মৃতদেহকে টেনে-হিচড়ে রাস্তায় নিয়ে আসে চরম উগ্রবাদীরা।এতদিনে জানতাম পাকিস্থানে শিয়া মুসলমানদের হত্যা করা সওয়াবের কাজ, তারপর ইরাকে, লেবাননে আর এখন দেখতেছি মিশরেও সওয়াবের কাজ ! এই আরবরা পারে না ইসরায়েলের একটা লোম ছিড়তে , পারে না গাজায় ত্রাণ পাঠাতে, পারে না একটা বুলেট পাঠাতে, অথচ তারা রণসজ্জায় সেজেছে শিয়া নিধনে ! সিরিয়ার যুদ্ধটাকে শিয়া-সুন্নি যুদ্ধে রুপ দেওয়া হল ইসরায়েল আমেরিকার বড় সফলতা । আমেরিকা ইসরায়েলের এখন ভাবনা- নে বাবা কাটাকাটি মারামারি কর তোরা নিজেরাই , যত পারিস একে অপরকে হত্যা কর, ফুয়েল যত লাগে আমরা দিব । এখন আশিয়ান সিটির খাটি সরিষার তেল নাকে দিয়ে একটা বড়সড় ঘুম দেই !
আর সিরিয়ায় এই দালালরা যাদের বেশির ভাগই বিদেশী নাগরিক তারা সিরিয়ার ক্ষমতায় আসলে শুধু সিরিয়ার জনগণ নয় ওরা সারা বিশ্বের জন্যই বিপদ ! কারণ ওরা ক্ষমতায় আসেতেছে কাদের অস্ত্রে, কাদের সহায়তায় ? ইসরায়েল আমেরিকা তাদের ইসলাম কায়েম করার সুযোগ দিবে ? এটা কি করে ভাবেন যে ইসরায়েল, আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্ব সিরিয়ায় ইসলাম কায়েমের জন্য অর্থ ও অস্ত্র ব্যয় করতেছে ? আর ওরা ক্ষমতয় আসলেই কি যুক্তরাস্ট্র-ইসরায়েল তাদের মেনে নিবে ? হা ততক্ষনই তারা মানবে যতক্ষন না এই উগ্রবাদীরা তাদের স্বার্থের বিপদ হয়ে না দাড়ায় । দেখুন, আফগনিস্থানে তালেবানদের ক্ষমতায় আসতে সহযোগীতা করেছিল যুক্তরাস্ট্র, পাকিস্থান, সৌদি সহ গোটা পশ্চিমা বিশ্ব আর তখন আমেরিকার উদ্দেশ্য ছিল সোভিয়েত উৎখাত কিন্তু সেই উদ্দেশ্য সফল হওয়ার পর আমেরিকা তালেবান ও আল কায়েদাদের পঁচা নর্দমায় ছুড়ে ফেলতে একটু ইতস্ততবোধ করেনি ! আর আজকে আফগানিস্থানের করুণ পরিণতির কথা সবার জানা আছে আর সেই যুক্তরাস্ট্রই কি না করল তাদের একসময়কার মিত্র তালেবানদের সাথে !
তবে এটা এখন পরিষ্কার সিরিয়ার আসাদ সরকারের পতন সহজেই হচ্ছে না আর এটা আর এখন কোন ভবিষ্যৎবানী নয়।কোন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা না থাকলে আন্দোলন শুরু হওয়ার এরকম দুই বছর পরেও টিকতে পারত না এটাতে কোন সন্দেহ নেই । আমি এর আগেই এই বিষয়ে লিখেছিলাম সেখানে বলেছি সিরিয়ার গণআন্দোলনের শুরুতে যারা ভেবেছিলেন আসাদের পতন সময়ের ব্যাপার তারা ভূল হিসাব কষেছেন । সিরিয়ার রাজনৈতিক সমীকরণ এত সহজ নয় । সিরিয়ার বর্তমান শাসনযন্ত্রের সাথে জড়িত আছে পরাশক্তি ও আঞ্চলিক পরাশক্তিদের ভাগ্য । এই খেলায় যারা জয়ী হবে তারাই হবে নতুন মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রনকর্তা !
লিবিয়াতে রাশিয়া ও ইরান সেরকম বলিষ্ঠ কোন ভূমিকা নিতে পারেনি -সত্য কিন্তু এর অনেক কারণও ছিল যা গাদ্দাফির অস্থির ও ভ্রান্ত নীতিই মূলত দায়ী। কিন্তু সেই দিক দিয়ে আসাদ সরকারের কোন দুর্বলতা নেই । আর আরব দেশগুলির মধ্যে সিরিয়াই একমাত্র ইরান, রাশিয়া ও চীনের বিশ্বস্ত মিত্র । তাই ইরান ও রাশিয়া কিছুতেই হারাতে চায় না এই মিত্রকে । ইরান তো ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছে তারা যে কোন মূল্যে সিরিয়ার বর্তমান শাসন ব্যবস্থার পতন ঠেকাবে। বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের প্রত্যাশা রাশিয়া, চীন ও ইরান বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ও যুক্তরাস্ট্রের আগ্রাসী রাশ টেনে ধরতে আরো অগ্রণী ভূমিকা পালন করুক ।
জয় হোক মানবতার ও মুক্তিকামী মানুষের যারা নব্য উপনিবেশবাদের বলির পাঠা হতে চায় না ।
(সমাপ্ত)
১ম পর্বের লিংক
২য় পর্বের লিংক
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৩ রাত ১২:৩৪