
তুমি পাগল!
কেন বলছি! তুমি যে কবি! কবিদের পাগল হতে হয়...
সৃষ্টিছাড়া, নিয়ম ভাঙা, শেকল ছেঁড়া....
পাগল না হলে পথ ভুলে বিপথে পা রাখতে কি করে! তোমার ঝোলায় কেবল একটা সোনালী পাখির পালক আর এক টুকরো মেঘ। অথচ থাকতে পারতো থোক থোক টাকা, নাম, যশ, খ্যাতি........কিংবা সমুদ্র সমান ভালবাসা........তুমি নিলে না..........
পাখির পালকটাই তোমার সবচেয়ে বড় সম্পদ। পাখিটাকে তুমি উড়িয়েও দিলে না। পালক ছিঁড়ে রেখে দিলে। তার আকাশ কেড়ে নিলে। তাকে তোমার সবটা দিতেও ভয়, আবার অধিকার ছেড়ে দেবার মত উদারও তুমি হতে পারো নি।
তুমি পাগল.......স্তুতির, তোষামোদের, অন্ধকারের.......ভালবাসার নও। ভালবাসা তোমার কবিতার একটা উপকরণ মাত্র, যেমন তোমার ঝোলার মেঘের টুকরোটা, কিংবা মুগ্ধচোখে যে কাশফুলকে দেখো তুমি শরতে.......শরৎ চলে গেলে তুমি তাকে সাদা কাগজের কাল অক্ষরে বেঁধে রাখো কেবল। তার আর কোন মূল্য তোমার কাছে নেই।
তুমি পাগল! তাই বোকা পাখিটার এক আকাশ ভালবাসা উপেক্ষা করার নিদারুণ দু:সাহস তোমার হয়। এক টুকরো মেঘ নিয়েই তুমি সন্তুষ্ট! তুমি পাগল এবং নির্বোধ.......কারণ তুমি কবি..........
পাগল আমিও!
কেন বলছি! কারণ আমি তুচ্ছাতিতুচ্ছ এক বোকা পাখি ভালবেসেছি কবিকে! যুক্তিহীন, বাঁধন হারা, লাগাম ছেঁড়া...
পাগল বলেই তোমার নিদারুণ উপেক্ষা আর অবহেলার কঠিন আকর্ষণে বাঁধা পড়ে ঘুরপাক খাচ্ছি প্রতিনিয়ত, যেমন কেন্দ্রকে ঘিরে আবর্তিত হয় গ্রহাণু!
আমার অমূল্য সোনার পালক ছিঁড়ে সযত্নে গুছিয়ে দিয়েছি তোমার ঝোলায়। ওড়ার অধিকার, কিংবা ক্ষমতা হারিয়েও হাসিমুখে তোমায় খুশি করি রাংতা মোড়ানো স্তুতিবাক্যে অবিরত, যার আবরণে ঢাকা পড়ে যায় আমার ভোরের কুয়াশা ধোয়া সজীব ভালবাসা।
আমি পাগল, তাই আমার ভালবাসাটুকু তোলা থাকে তোমার দাক্ষিণ্যের প্রতীক্ষায়। তার সহজ, সাবলীলতা নিয়ে সে ফুটে উঠতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়...ভীত হয়...
চিরকালের আমি বাঁধা পড়ে থাকি ছোট ছোট কাল অক্ষরে.......আর কোন মানসিক কি আত্মিক মূল্য আমার আছে বলে মনে করতেও ভয় পাই।
তুমি পাগল!
পাগল না হলে কবি হওয়া যায় না!
আমিও পাগল!
তা না হলে মিথ্যে হয়ে যেতো আকাশ উপুড় ভালবাসা!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:১৫