রোহিঙ্গারা চান তাদের স্বাধীন ভূমিতে নিরাপদে বসবাস করতে। যেখানে মগরা তাদের অত্যাচার করতে পারবে না। স্বাধীনভাবে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে চান তারা। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে তাদের সঙ্গে কথা বলে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।
কথা হয় ১৪ বছরের আয়াসের সঙ্গে। সে জানায় তার বাড়ি আরাকান রাজ্যের বাংলাদেশ লাগোয়া ফকির পাড়ায়। তারা যেদিন বাংলাদেশে চলে আসে সেদিন মগরা তাদের বাড়ি থেকে বিতারিত করার জন্য হামলা চালায়। এসময় তারা মগদের বিরুদ্ধে হান্ডা (গুলতি) দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তাদের প্রতিরোধে মগরা পেরে উঠতে না পারায় সেনাবাহিনীর সাহায্য চায়। সেনাবাহিনী আসতে দেখে আয়াসের পরিবার বাংলাদেশের দিকে পালাতে থাকে। সর্তক থাকায় তাদের পরিবারের কোন সদস্য মারা যায়নি। কিন্তু স্বাধীনতার জন্য এই ছেলে উন্মুখ হয়ে আছে।
আয়াস জানায়, তারা চায় নিজেদের স্বাধীন ভূমিতে স্বাধীন ভাবে বাঁচতে। কিন্তু মগদের জন্য তা পারছে না। তাই ১৪ বছরের এই কিশোর বলে, ‘মগগো থিকা আমাগো হিম্মত বেশি, অস্ত্র দেন মগরা আমাগো লগে পারবো না।’
গুলতি দিয়ে কি ধরণের প্রতিরোধ করা যায় স্থানীয়রা জানান, এইটি এমন এক প্রচলিত আদিম অস্ত্র যা ঠিকমত মারতে পারলে মানুষ মারা যায়। তাই এই অস্ত্র দিয়ে রোহিঙ্গারা প্রায়ই প্রতিরোধ করে থাকে।
কথা হয় একই ক্যাম্পের ১২ বছর বয়সের আরাকানের মন্ডু এলাকার মো. আলম আর নোকায়তের সঙ্গে। তাদের কথায়ও আয়াসের প্রতিধ্বনি পাওয়া গেছে। সেনাদের গুলিতে আলমের ৪ বোন আর নোকায়েতের এক বোন মারা গেছে।
অন্য এক ক্যাম্পের ৩২ বছরের আবু সিদ্দিক। স্ত্রী, ৫ সন্তান, মা আর ৪ বোন নিয়ে সড়গাজির বিলে বাস করতেন। রোহিঙ্গা বিতারণ শুরু হলে সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশে আসার পথে সন্তানসম্ভবা স্ত্রী সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা যায়। এখন তিনি চান অস্ত্র। অস্ত্র পেলে তারা নাসাকার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবেন।
এই বিষয়ে বান্দরবানের বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সত্যিই রোহিঙ্গাদের সাহস বেশি সহযোগিতা পেলে নাসাকা ওদের সাথে পারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:০২