রোহিঙ্গাদের সহায়তায় প্রতিদিন দেশ এবং বিদেশ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ হচ্ছে। এসব ত্রাণের কিছুটা রেখে বেশির ভাগই বিক্রি করে দিচ্ছে অন্যত্র। তাই বিক্রি যোগ্য ক্রাণ বা ক্রাণের টোকেনই তাদের কাছে বেশি কদর। মূলত নগদ টাকাই তাদের মূল লক্ষ্য। এর বাইরে কিছু তারা নিতে চান না। এর প্রমান উখিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে ফেলে দেওয়া পোশাকের স্তুপ।
কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের উখিয়া কুতুপালং থেকে টেকনাফ কানজরপাড়া পর্যন্ত আর কুতুপালং থেকে ঘুমধুম জলপাইতলি বাশবাগান এলাকায় উভয় পাশে রোহিঙ্গাদের জটলা। সেনাবাহিনী কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনলেও পণ্যবাহী ট্রাক কিংবা প্রাইভেট গাড়ি দেখলেই এরা হাত বাড়ায় ত্রাণের জন্য। শুধু তাই না, বাঙ্গালি দেখলেই হাত পেতে বলে মামু টাকা।
দেখা গেছে, অপেক্ষাকৃত সবল পুরুষ-নারী-যুবকরাই ত্রাণের জন্য হামলে পড়ে। তবে নাস্তার দুই ধারে বোরতা পড়া মহিলাদেরকেই দেখা গেছে। এরাই বারবার ত্রাণ লুফে নেই। বঞ্চিত হয় বৃদ্ধ নারী-পুরুষ ও শিশুরা। আর এ অসম বণ্টনের জন্য রোহিঙ্গাদেরই দায়ী করছেন কিজিবি।
তাদের সাথে কথা কলে জানা গেছে, এদের মধ্যে একতার অভাব রয়েছে। একজনকে আরেকজন সহায়তাও তরে না। এমন কি কৃদ্ধদের ক্রাণের কস্তাটাও কেউ তার ঝুপড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দেয় না।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও তা মানছে রোহিঙ্গারা। আবার যারা ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন তারাও চান নিজ হাতে দিতে। ফলে উভয় সংতটে রয়েছে প্রশাসন।
উখিয়া থেকে হোয়াইক্যং কানজরপাড়া পর্যন্ত দীর্ঘ এই সড়কপথে রোহিঙ্গাদের ভিড়, গাড়ি দেখলেই হাত বাড়িয়ে দেয়, তাদের চাই ত্রাণ আর ত্রাণ, নিয়মকানুন বুঝি না। এরই মধ্যে ত্রাণের জন্য রাস্তায় এসে প্রাণ গেছে কয়েকজন রোহিঙ্গার। ছেলেধরা বলেও একজনকে গণপিটুনি দিয়ে মারা হয়েছে। পরে জানা গেছে, একটা বাচ্চা রান্তায় চলে গেলে তাকে বাচাতে লোকটা বাচ্চাটাকে কুলে নিলে বাচ্চার মা চিৎকার দিলে লোকজন তার উপর হামলা করে।
প্রতিদিনই মাইকিং করে রাস্তার উভয় পাশে অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে আনাতে চেষ্টা করছে প্রশাসন। রাস্তায় জানজট ও প্রাণহানি থামাতে নিয়োজিত রয়েছে বিজিবি, পুলিশ, ত্রাণ পুলিশ, আনসার ও কমিউনিটি পুলিশ সদস্যরা। টেকনাফ কানজরপাড়া উনছিপ্রাং রইক্যং, লম্বাবিল এলাকায় অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় অনেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ পেয়েছেন।
এসব ত্রাণের বেশিরভাগই বিক্রি করে দিচ্ছে রোহিঙ্গানা। এসব ত্রাণ কেনার জন্য একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটও তৈরি হয়েছে। কম দাদে এসব ত্রাণ কিনে তারা অধিক মুনাফা করছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলি হোছাইন জানান, প্রতিদিন অনেক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ত্রাণ জমা দিচ্ছে। ১৩টি পয়েন্টে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। অনেকে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ও নির্দিষ্ট স্পটে নিজ উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করছে। এতে সহযোগিতা দিচ্ছে প্রশাসন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ২:১২