"If the cuckoo does not sing, kill it."
সেনাপতি বসে আছেন চিন্তিতমুখে। পিছনে তার অনুগত ৩০০০ সৈনিক। প্রত্যেকেই তার জন্য জান কুরবান। কিন্তু ভদ্রলোকের চিন্তার কারণ সামনে। বিপক্ষদলের সৈনিকের সংখ্যা হাজার ২৫ এর কিছু বেশি। তিনি জানেন তিনি জিতবেন; কিন্তু তার সৈনিকরা খুব একটা সাহস পাচ্ছে না আক্রমণের।
যুদ্ধের যাত্রাপথে একটা মন্দির পড়ে। সেনাপতি মন্দিরের সামনে আসতেই বলে উঠলেন, আমি এখন ভেতরে গিয়ে প্রার্থনা করব। তারপর বের হয়ে একটা মুদ্রা নিক্ষেপ করব। মাথা উঠলে জিতে গেসি; আর লেজ পড়লে কিছু করার নেই। আজকে সব কিছু ভাগ্যের হাতেই ছেড়ে দিলাম।
প্রার্থনা শেষ হল। সেনাপতি সাহেব বের হয়ে সবার সামনে মুদ্রা নিক্ষেপ করলেন। মাথা উঠল। সব সৈনিক এমনভাবে চিৎকার করতে লাগলো যেন তারা ইতিমধ্যেই যুদ্ধ জিতে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা-ই হয়েছিল।
যুদ্ধ শেষে তার সহকারী তাকে বললেন, ভাগ্যকে তো কেউ বদলাতে পারে না !
তিনি জবাব দিলেন, অবশ্যই। বলেই দুই পাশেই মাথাওয়ালা মুদ্রাটা বের করে সহকারীকে দেখালেন।
সেনাপতির নাম নবুনাগা।
পুরো জাপানকে এক পতাকাতলে আনার জন্য যে কয়জনের নাম ইতিহাসে লেখা নবুনাগা (১৫৩৪ - ১৫৮২) তাদের মধ্যে অন্যতম। জাপানের ইতিহাসে নবুনাগা অবশ্য সবসময়েই কম বেশি ভিলেনিয়াস চরিত্র হিসেবেই খ্যাত; যার অন্যতম প্রধান কারণ ১৫৭১ এ একটা বৌদ্ধ মন্দির এবং এর ভিতরে থাকা বহু সন্ন্যাসীকে পুড়িয়ে মারা।
নবুনাগা ইতিহাসের পাতা ছেড়ে উঠে এসেছে জাপানের সাহিত্য উপন্যাস কিংবা এনিমের জগতে। সেই রকমই একটা সিরিজ "nobunaga concerto" যা মুলত "সাবুরো"র সময় ভ্রমণের মাধ্যমে অতীতে চলে যাওয়ার গল্পের মাধ্যমে নবুনাগার গল্প শোনায় আমাদের।
সাবুরো বর্তমান সময়ের জাপানের এক স্কুলের অমনোযোগী এক ছাত্র; ইতিহাসে বরাবরই দুর্বল। একদিন হটাত করেই তার জীবনে ঘটে যায় এক অদ্ভুত ঘটনা। হটাত করেই সাবুরো সময় ভ্রমণের মাধ্যমে নিজেকে আবিস্কার করে মধ্যযুগের জাপানে; নবুনাগার সমসাময়িক সময়ে। তারপর কি ঘটল তাই নিয়েই এই সিরিজ।
ভাল দিকঃ ক্লিশে নাই; সেন্স অফ হিউমার চমৎকার; পছন্দনীয় চরিত্র; দুর্দান্ত ভয়েস এক্টিং; অনেকটা ইতিহাসকে অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ; ভাল সাউন্ডট্র্যাক।
খারাপ দিকঃ ব্যাতিক্রমী এনিমেশন; সময় অগ্রগতির সামঞ্জস্যহীন গতি।
যদিও খুব একটা হইচই নেই; কিন্তু নবুনাগা কন্সার্ট ইতিহাস আর কমেডির মিশেলে চমৎকার একটি সিরিজ।
রিকমেন্ডেড।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:০৭