
তখনো সন্ধ্যা লাগে নি । আমি বোর্ড বাজারের একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী হতে বেরতেই থমকে গেলাম একটি ডাক শুনে। চেয়ে দেখি আমারই বয়সের একটি তরুণ যুবক , কোলে ২/৩ বছরের একটি মেয়ে। ঘুমিয়ে গেছে। আর একটু পাশেই , দুরে দাড়িয়ে আছে তার স্ত্রী। যুবকটির চেহারায় আমি প্রচন্ড বিষন্নতা দেখলাম। শার্ট-প্যান্ট ইন করা এবং চামড়ার স্যান্ডেল পায়ে। তার স্ত্রীর সাজ-গোজ মোটামুটি ভালো। বুঝলাম একেবারে নিম্নবিত্ত না হলেও অনেক পরিশ্রম করে সংসার কোন রকম চলে যায়। অভাবের সংসারে সুখ না থাকলেও শান্তির অভাব নেই !
আমি এগোতেই যুবকটি বলল , তার বাড়ি শেরপুর। ঢাকায় গিয়েছিল আত্নিয়ের বাসায় বেড়াতে। বাসে ভাড়া দিতে গিয়ে দ্যাখে মানিব্যাগ খোয়া গেছে এবং বাসের সুপার ভাইজার তাদের এখানে নামিয়ে দিয়েছে। এখন বাড়ি যেতে পারছে না টাকার অভাবে । এ পর্যন্ত অনেক মানুষের কাছে সে সাহায্য চেয়েছে কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। যুবকটি ছলছল করে কেঁদে দিল। তার স্ত্রী বোধ হয় মানুষের কাছে স্বামীর এ হাত পাতা , মেনে নিতে পারছে না লজ্জায় ।
সেই অনেক মানুষের আমিও একজন হয়ে গেলাম। যুবকটির কোন কথা না শোনার ভান করে আমিও এগিয়ে গেলাম দ্রুত পায়ে বাসের টিকেট নেবার জন্য..........। শুধু পেছনে রেখে এলাম আমার ভাইঝির মতো দেখতে ঘুমন্ত , ফুটফুটে এক বাচ্চা মেয়েকে !
২৭.০৫.০৮
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০০৮ সকাল ৯:৩৮