বহুদিন নিজ পানে চায়নি চারুলতা
লেখেনি কাঁপা হাতে আঁকাবাঁকা কোনো চিঠি,
তবু বহুদিন পর, আজ আবার তার
হয়ে যেতে ইচ্ছে করে একটি নিমগাছ।
চারুলতা আর বাঁধেনা চুল নতুন নতুন ছাঁদে
আঁকে না চোখে কাজল যতন
সেও বহুদিন হলো আজ।
আটপৌরে সংসারেতে কত শতই না কাজ।
সময় কই এত?
কিই বা হবে সাজে?
কাজ ফুরোতেই রাত ১১ বাঁজে।
চারুলতা জানে খুব ভোরে ওঠা
ধুয়ে নাও মুখ হাত,
লেগে যাও কাজে খুব তাড়াতাড়ি
রাঁধো ভর্তা গরম ভাত।
চারুলতা দেখে বেলা চড়তেই
সেরে ফেলো রাঁধা বাড়া
অফিস- কাঁচারি স্কুল বা কলেজ
সকলেইর আছে তাড়া।
চারুলতা আর আলতা পরে না পায়ে,
আঁকে না কপালে কাঁচপোকা কাঁটা টিপ
বহুদিন হলো শেওলা জমেছে গায়ে
নেই মাথা ব্যাথা চন্দনে উপটানে।
চারুলতা আজ আটকা পড়েছে
ঘেরাটোপ সংসারে।
-------- বহুদিন পর----------
চারুলতা আজ হঠাৎ চমকে ওঠে.....
ডাকলো কোকিল বসন্ত এলো বুঝি.....
বিকেল গড়ায় মেঝের উপর একরাশ খোলা চুলে
চারুলতা আজ নিজেকেই নিজে নিজের ভেতরে খোঁজে.....
বহুদিন পর চারুলতা খোলে তোরঙ্গে তোলা চিঠি
মলিন ধুসর কাগজের পরে অশ্রুর ফোটা পড়ে
শুনেছে অপুদা ফিরেছে আবার একুশ বছর পরে।
খবর দিয়েছে একবার শুধু, শুধুই একটি বার
দূর থেকে দেখে চলে যাবে ফিরে নেই কোনো দাবী তার....
বহুদিন পর আরশীতে ফের মুখ তোলে চারুলতা।
পারেনা চিনতে নিজেই নিজেকে আর।
বহুদিন বাদে স্নান ঘরে চারুলতা -
খুঁজে ফেরে সেই বালিকা প্রহর সুগন্ধী চুল
ধুসর চাউনী স্থুল জমা কাঁধ মানছে না বাঁধ
আকুল হয়ে চারুলতা আজ কাঁদে।
---------------- তখন গোধুলীকাল----------------
অপুদা বলেন তুমি সুন্দর আজও
বহুদিন পর নিজপানে আজ তাকায় চারুলতা
ফের হয়ে যেতে ইচ্ছেটি করে একটি নিমের গাছ।
চলে যেতে চায় ঐ পথিকের সাথে।
চারুলতা আজ সত্যি নিমের গাছ
শেঁকড় প্রোথিত উঠানের মাঝখানে ......
(বহুক্ষন ধরে মনের মত ছবি না পেয়ে প্রথম আলোর পাতা থেকে এই ছবি দিয়ে দিলাম।)
আর এই কবিতাটা মেহবুবা আপুকেই দিলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৪৯