বায়ার্ন কে কাঁদিয়ে, দিয়েগো সিমিওনেই তো হাসলেন তৃপ্তির হাসি । আজ হাসবেন কে ? পেল্লেগ্রিনি নাকি জিদান ? রোনালদো নাকি আগুয়েরো ?
এ্যালিয়াঞ্জ এ্যারেনার লাল-উচ্ছাস উৎসবের হতে হতে হয়ে গেছে, জমাট বাঁধা রক্তের । গার্দিওলার ‘আক্রমণ এবং আক্রমণ’ কিংবা জার্মানদের জন্মগত ‘মরণপণ লড়াই’ কোনটাই বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি সিমিওনের দুর্দান্ত ট্যাকটিকসের সামনে । তিন বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে তাই এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ।
বছর দুয়েক আগে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরেই, রানার্স আপে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল সিমিওনের দলকে । এবারো ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে তিনি কি সেই নগর প্রতিদ্বন্ধীদের-ই পাচ্ছেন ?
ব্যক্তিগতভাবে আমি খুব করে চাই, চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফিরতি লেগে আজ ম্যানসিটিরই জয় হোক । ম্যানসিটির পাঁড় সমর্থক নই, বরং বলা চলে কিছুটা রিয়াল মাদ্রিদ বিদ্বেষী । স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের কাতালোনিয়ার শোষণ-পীড়ণ জেনেছি বলেই কি না, রিয়াল মাদ্রিদকে মনে হয় আধুনিক ফুটবলেও ‘অর্থ’ দিয়ে সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় লিপ্ত ! যদিও একটা সময় জিদান, কার্লোস, ফিগো, রোনালদোর ‘গ্যালাকটিকো’র রিয়াল মাদ্রিদকে পছন্দ করতাম । কিন্তু এখন কেন জানি একটুও ভাল লাগাতে পারি না ।
সুন্দর ফুটবলের পূজারী আমি । আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে ভরপুর ফুটবল, মুগ্ধ হয়ে দেখার চেষ্টা করি । তাই বায়ার্ন-বার্সা লড়াইয়ে ‘কে জিতল’ তার চেয়ে মূখ্য ব্যাপার থাকে, খেলা কতটা মনোমুগ্ধকর হলো । সেখানে বার্সালোনা জিতে গেলে ‘সোনায় সোহাগা’ আর হেরে গেলেও খুব একটা খারাপ লাগে না ।
সন্দেহ নেই, রিয়াল মাদ্রিদ আক্রমণাত্নক ফুটবল খেলে । বেল-রোনালদোর গতি আর পাওয়ার ফুটবল দেখাও চোখের জন্য প্রশান্তিদায়ক । তবুও ‘মাদ্রিদিস্তা’দের ভাল চোখে কেন যেন দেখতে পারি না !
ইত্তেহাদে, ম্যানসিটি-রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম লেগের ফার্ষ্ট হাফ দেখেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । কোন দলের খেলাই একটুও ভাল লাগেনি । তবে আজ মনে হয় সে হাহাকার ঘুচে যাবে । দুটি দলই নান্দনিক আক্রমণাত্নক ফুটবলই উপহার দেবে আশা করছি । এবং সব শেষে বার্নাব্যু’র সত্তর-আশি হাজার মাদ্রিদিস্তাকে স্তব্ধ করে দিয়ে, হাজার খানেক ‘ম্যানসিটি’ সমর্থকই কেঁড়ে নেবে সবটুকু আলো । বার্নাব্যুর রাতের আকাশ ভরে উঠবে আকাশী নীলের উচ্ছাসে !
আর যদি সত্যিই ম্যানসিটি বার্নাব্যুতে শোকের মাতম তুলতে সক্ষম হয়, তাহলে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ট্রফির পক্ষ থেকেও একটা ধন্যবাদ পেয়ে যেতে পারে তাঁরা ।
কারণ, তাহলে যে নতুন হাতের স্পর্শ নিশ্চিত হয়ে যাবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ট্রফিটারও । এর আগে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও ম্যানসিটি কেউই কখনো ইউরোপের সেরা হতে পারেনি । ম্যানসিটির সামনে এবার সুযোগ, অনেক কিছু করার । অনেক কিছু করে দেখানোর ।
_____
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১৬ রাত ১০:৪৬