somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোর তো পুড়েই মরবার কথা

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সূত্রঃ এপি

'নিমতলীর কথা মনে আছে?'
'হ ভাই'
'তাইলে ঐহানে গেছিলি ক্যান, তুইতো হালারপো পুইড়াই মরবি'
'আপনে কেডা ভাই?'
'আমি নিমতলীতে মরছিলাম'

প্রতিক্রিয়ার প্রতিক্রিয়াঃ

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ- ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ওই এলাকায় থাকা একাধিক কেমিক্যাল গোডাউনের কারণে খুব দ্রুত আগুন আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে।

অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের সময় ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলি আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, একটি সিএনজি বহনকারী পিকআপ ট্রাকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পরপরই পাশে থাকা গোডাউনের দোকানে আগুন লেগে যায়, ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন
"...... এটা হচ্ছে সিলিন্ডার ব্লাস্ট। ..... যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা কেমিক্যাল এরিয়া না, এখানে কেমিক্যালের কোনো অস্তিত্ব নেই, কোনো গোডাউনও ছিল না। পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসা বংশ পরম্পরা। এটাতো বন্ধ করা যাবে না। এর সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত। আমি পুরান ঢাকার মানুষ। আমি জানি।"

নিমতলির ঘটনার প্রায় ১০ বছর পরও কেমিক্যাল গোডাউন সরানো গেলো না কেনো, এমন প্রশ্নর জবাবে মন্ত্রী বলেন, "আপনারা কি ভীনগ্রহ থেকে এসেছেন নাকি? আমরা কি ঢাকা শহর গুড়িয়ে দেবো? তারা (ব্যবসায়ীরা) যেতে চায় না। আমরা শিল্পনগরী গড়ে তুলছি। এটা দেখতে আরো ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে না। আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে। অর্থনৈতিক প্রবাহ বন্ধ করা যাবে না।"

আবাসিক এলাকায় কেমিক্যাল ব্যবসা বন্ধ হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "না। আমরা কাউকে উচ্ছেদ করবো না। তবে তাদের নির্দ্দিষ্ট এলাকায় নেওয়া হবে।"


প্রশ্নঃ
১। আগুন লাগার কারণ হিসেবে কার বক্তব্য সঠিক? ঘটনাস্থলে পাওয়া রাসায়নকি ও দাহ্য পণ্যের চিহ্ন কী বলে?
২। এসব আবাসিক এলাকায়, বাড়ির নিচ তলায় কেমিক্যাল গোডাউন করার অনুমতি কে দিল? তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কী ব্যবস্থা নেয়া হবে?
৩। বৈধ ব্যবসা অবৈধ এলাকায় করলে সেটা অবৈধ হয়ে যায়। বংশ পরম্পরা হলেই কি কোনকিছু বৈধতা পেয়ে যাবে? বৈধতার এই নিয়ম কবে থেকে চালু হলো? বাপ-দাদা মানুষ ঠকাইলে কি আমার জন্য সেটা বৈধ হয়ে যায়!
৪। জী মহারাজ! আগুন লাগলেই যদি ৭০-১০০ জন মারা যায়, এবং ১০ বছরেও যদি অবস্থার উন্নতি না করতে পারেন তাহলে বসবাসের অনুপযোগী ঐ এলাকা। এটা গুঁড়িয়ে দিতেই হবে। মানুষ ভাজার কারখানা গুড়িয়েই দিতে হবে।
৫। শিল্পনগরী করতে ১০ বছর লাগে? তাহলে আগের ১০ বছর করছেন কী!


সূত্র

নিমতলী অগ্নিকান্ডের পর গঠিত তদন্ত কমিটির অন্যতম সুপারিশ ছিল ঢাকার রাসায়নিকের কারখানা আর গুদামগুলো সরিয়ে নেওয়া। এটা বাস্তবায়িত হয়নি। কারণঃ
- পুরান ঢাকার মানুষ যারা এসব গোডাউন ভাড়া দিয়ে প্রচুর টাকা পান তারা রাজী ছিলেন না।
- কেমিকেল ব্যাবসায়ীরা রাজী ছিলেন না
- শিল্প মন্ত্রনালয়ের অসহযোগিতা
- ব্যবসায়ীদের বড় সংগঠন এফবিসিসিআইর অনুরোধ

এগুলো আমার নয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এর মেয়রের কথা। ২০১০ সালে রাজধানীর রাসায়নিক কারখানা ও গুদাম কেরানীগঞ্জে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও ‘বিসিক কেমিক্যাল পল্লী, ঢাকা’ প্রকল্প একনেকের অনুমোদন পায় আট বছর পর গত বছরের ৩০ অক্টোবর।এই কাজে ধরিগতির জন্যও শিল্প মন্ত্রণালয়কে দূষছেন মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, “শিল্প মন্ত্রণালয় কেমিক্যাল পল্লী করার দায়িত্ব নিলেও তারা খুব ধীরে তা করছে। ২০১০ সালে যখন নিমতলী ট্র্যাজেডি হয় তখনই এই পল্লী হয়ে যাওয়ার কথা। ওদেরকে আমরা তাগিদ দিয়েছি তাড়াতাড়ি করার জন্য। তবে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা থাকায় তারা এগোতে পারেনি। তারা এর কাজ এখন মাত্র শুরু করেছে।” অন্যদিকে বিসিক কর্মকর্তারা বিলম্বের জন্য রাসায়নিকের ব্যবসায়ীদের অসহযোগিতাকে দায়ী করেছেন।

নিমতলী ঘটনার পর আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি ২০১১ সালে কেরানীগঞ্জের সোনাকান্দা মৌজায় ২০ একর জমি চিহ্নিত করে সেখানে ১৭তলা করে কয়েকটি ভবন তৈরি করে রাসায়নিকের কারখানা ও গুদামের জন্য বরাদ্দ দিতে ডিপিপিও করা হয়েছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে রাসায়নিক কারখানা মালিকদের তিনটি সংগঠনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইয়ের জন্য একাধিকবার বসলেও তারা সে সময় কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি বলে জানিয়েছেন বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) খোন্দকার আমিনুজ্জামান।

তিনি বলেন, “সভা ডাকলেও সেসব সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাতে উপস্থিত থাকতেন না। তারা এমওইউ স্বাক্ষর করেনি, টালবাহানা করেছে। তাদের কাছ থেকে আমরা যথাসময়ে সহায়তা পাইনি।

“এক সমিতি আসে তো দুই সমিতি আসে না। তিন সমিতিকে একত্রে পাওয়াও যায় না। পরে অনেক অনুরোধ করে তাদেরকে আনতে পেরেছি। শেষে শিল্প মন্ত্রণালয়ে একটা সভায় তারা জানায়, ভবন করলে তারা যাবেন না, প্লট করলে যাবেন।”

পরে আবার নতুন করে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করতে হয়েছে বলে জানান খোন্দকার আমিনুজ্জামান।
সূত্র

আপনারা একে অন্যকে দোষারোপ করেন আর হোমো সেপিয়েন্স কড়কড়ে ভাজা হয়ে লস এঞ্জেলেসের আসমানে উড়াল দিক!



সূত্রঃ এপি

শ্রম মন্ত্রণালয়: আগুনে পুড়ে মারা যাওয়াদের মধ্যে যারা শ্রমিক তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে এক লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হবে। আর আহতদের দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা করে।

প্রতিক্রিয়াঃ এত দাম দিলেন! দু টেকার মানুষ অত টেকা লইয়া কী করবো?

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এই মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটি সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব।

প্রতিক্রিয়াঃ আপনার দপ্তরের তদন্ত কমিটির সাফল্যের রেটটা বলেন।


পুলিশ অধিদপ্তর: পুলিশ মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক পদার্থের গোডাউন সরানো দরকার। এখনই সময়। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর সিদ্ধান্ত নিলে পুলিশ সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে।

প্রতিক্রিয়াঃ ভাল কথা বলছেন। একটু খবর নিয়া দেখেন তো এসব এলাকার ওসি রা এই গোডাউনগুল থেইকা দান খয়রাত পাইত কি না ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন: মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক গুদাম সরাতে তাঁরা দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ। এখন তাঁরা জোর পদক্ষেপ নেবেন।

প্রতিক্রিয়াঃ পদক্ষেপ জোর হওয়ার জন্য দুই দফায় ১৮০ জনরে মরা লাগল। এখনি নিবেন না আরেকটু ভাববেন।


সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আজ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, আজকের এই ঘটনায় তাঁরা আবারও শিক্ষা পেয়েছেন।

প্রতিক্রিয়াঃ আহারে। আপনাগো একবারে শিক্ষা হয় না। কার শিক্ষা হইতে কয়বার লাগে সেটা একটু ওয়েবসাইটে দিয়া দেন। আমরা তাইলে আগে থেকেই জানবো, হুদাই আশায় থাকবো না।

বিস্ফোরক অধিদপ্তর: অধিদপ্তর বলছে, রাজ্জাক ভবনে রাসায়নিক পদার্থের অবৈধ মজুত ছিল।

প্রতিক্রিয়াঃ তাই নাকি! ওইটা অবৈধ ছিল! আপনাগো কামডা জানি কি !

সূত্র

'তুই চুড়িহাট্টা গেছিলি ক্যান'
'ব্যবসা ছিল'
'কিয়ের'
'কেমিকেলের'
'আয় হারামজাদা, তোরে আরেকবার ভাজি।'
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:১০
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×