১৯৮৭ সাল। পাকিস্তানের উঠতি পপ সিঙ্গার হাসান জাহাঙ্গীরের একটি এলবাম বের হলো। এলবামের নাম 'হাওয়া হাওয়া'। এলবামটি রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। দু'একটা গান জনপ্রিয় হবে এমনটা আশা করলেও, কারুরই ধারণা ছিলনা সেটা এত আলোড়ন তুলবে। রিলিজের পর পাকিস্তান তো বটেই, পুরো উপমহাদেশ দাপিয়ে বেড়িয়েছে এলবামের গানগুলো। যারা সে সময়টা পার করেছে তাদের নিশ্চয়ই মনে আছে কতটা ক্রেজ ছিল হাসান জাহাঙ্গীরের সেই এলবাম - বিশেষ করে 'হাওয়া হাওয়া এ হাওয়া খুশবু লুটা দে' গানটি। তিন দশক পেরিয়ে গেছে। সেই সুর যে এখনো মানুষের মনে সমান আলোড়ন তুলতে সক্ষম তার প্রমাণ গত বছরের 'মুবারাকান' সিনেমার 'বয়ফ্রেন্ড বানা দে' গানটির শ্রোতাপ্রিয়তা দেখে। এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আট কোটিবার দেখা হয়েছে গানটি।
হাওয়া হাওয়া। সুর ও কন্ঠঃ হাসান জাহাঙ্গীর
তবে গানটিকে মৌলিক বলতে আমার আপত্তি আছে। মূল সুরের কৃতিত্ব দিতে হবে বিপ্লব-পূর্ববর্তী ইরানিয়ান শিল্পী কোরৌশ ইয়াঘমাঈ - কে। ইরানে psychedelic রকের জনক বলা হয় তাঁকে। ইরানিয়ানরা তাঁকে জিমি হেন্ড্রিক্স বা জিমি পেইজের সমতুল্য গিটারিস্ট মনে করতেন। ১৯৭৪ সালে বের হয় তাঁর প্রথম এলবাম 'গোল-এ-ইয়াখ'। সেই এলবামের একটি গান 'হাভার হাভার' (বাংলা অর্থ চিৎকার চিৎকার)। ইরানী দাদরা-য় আরোপিত সুরের গানটির প্রায় হুবহু কপি হাসান জাহাঙ্গীরের গানটি। যদিও পরে সাক্ষাৎকারে হাসান জাহাঙ্গীর সেটা স্বীকার করেছেন, আমার মনে হয় না উপমহাদেশে খুব বেশি লোক আশির দশকে এই তথ্যটি জানতেন।
হাভার হাভার
সে জন্যই বোধ করি মুবারাকান সিনেমার প্রযোজক জাহাঙ্গীরের অনুমতি না নিয়েই তাঁর সুর ব্যবহার করেন।
মুবারাকান সিনেমার হাওয়া হাওয়া গান। শিল্পী মিকা সিং ও প্রকৃতি কাকার
তবে এটাই প্রথম নয়। জাহাঙ্গীরের হাওয়া হাওয়া গানের কপি/রিমেক বলিউডে আগেও হয়েছে।
গানঃ জাওয়া জাওয়া ইশক জাওয়া মুভিঃ বিল্লু বাদশাহ (১৯৮৯) সুরকারঃ জগজিৎ সিং শিল্পীঃ গোবিন্দ
আয়া আয়া ও আয়া মুভিঃ আগ কা গোলা (১৯৮৯) সুরকারঃ বাপি লাহিড়ী শিল্পীঃ অলকা ইয়াগনিক, বাপি লাহিড়ী
বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই।
ও টুনির মা সুরঃ আজমির বাবু শিল্পী প্রমিত
ব্যবহৃত হচ্ছে ধর্মীয় শিক্ষার ক্ষেত্রেও !!
হুজুর গাইছেন 'ও টুনির মা'
আর আপনি গাইতে চাইলেঃ
হাওয়া হাওয়া কারাওকি
ঈদ মোবারাক সবাইকে!!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:২৬