এ বছরের বইমেলায় দাঁড়িকমা প্রকাশনী [স্টল নং ৬৬৬, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান] থেকে বেরিয়েছে আমার উপন্যাসিকা 'গুড মর্নিং বাংলাদেশ'। তা নিয়ে দু'চারটি কথা।
উপন্যাসিকার কাঠামো
এর বিশেষত্ব কাঠামোতে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক দুষ্টচক্র-কে তুলে ধরেছে এই উপন্যাসিকা। খুবই কনটেম্পোরারি কিছু বিষয়কে তুলে আনা হয়েছে সহজ ভাবে, একটি বিশেষ ছাঁচে ফেলে। নির্দিষ্ট কোনো একজন নায়ক/নায়িকা বা প্রধান চরিত্র নেই এখানে। আছে অনেকগুলো চরিত্র - সবাই গুরুত্বপূর্ণ।
- একজন রাজনৈতিক নেতা যিনি খুব ভাল বাবা, ছাত্রনেতাদের কি পরামর্শ দিচ্ছেন?
- একজন পুলিশ কর্মকর্তা যিনি খুব ভাল স্বামী,হত্যা মামলার আসামীদের সাথে কী করছেন?
- সর্বজনশ্রদ্ধেয় ঐ সাংবাদিক লোকটি আসলেই কতটা ভাল?
- পার্টিতে জড়ো হয়েছেন একদল ডাক্তার। ক্লিনিক, ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের মালিকরা সেখানে কী করছে?
- একাকী মা, গার্মেন্টস কর্মী রাতে অজান্তে কার জন্য অপেক্ষা করে?
- মন্দায় ডুবতে থাকা একজন শিল্পপতি কি তার পুরনো বন্ধুর কাছে সাহায্য পাবে?
- এনজিও কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী হোটেল কক্ষে কেন? কি ঘটে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে? ছাত্রীটি কি কর্মকর্তার ফাঁদে পা দেবে?
- মাদকাসক্ত ছেলেটি তার সচিব বাবার উপর কেনই বা এত ক্ষিপ্ত?
- ভোররাতে ড্রাগ ব্যবসায়ীরা মসজিদের ইমামের কাছে কেন এসেছে?
চিত্রঃ উপন্যাসের কাঠামো (বাংলাদেশের কল্পিত রাজনৈতিক-আর্থ-সামাজিক দুষ্টচক্র)
আপাতদৃষ্টিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই মানুষগুলোর মধ্যে যোগসূত্র কোথায়? বাংলাদেশের বর্তমান বা ভবিষ্যতের সাথেই বা এরা কীভাবে সম্পর্কিত? এর উত্তর পেতে ৪৮ পৃষ্টার ছোট এই বইটি পড়তে হবে। খরচ হবে ১০০ টাকা। এটা আমার গল্প, আপনার গল্প, আমাদের গল্প, আমাদের বৃত্তবন্দী হয়ে থাকবার গল্প, আমাদের বৃত্ত ভাঙ্গবার গল্প।
আমি পাঠক খুঁজি, টাকা নয়। আজ যদি ১০০০ পাঠক বলে আমরা বইটি পড়তে চাই কিন্তু টাকা দিতে পারবো না, আমি নিজ খরচে তাদের বই পাঠিয়ে দেব (যতটুকু সামর্থ্যে কুলায়)। কিন্তু সেরকম পাঠক হওয়া চাই। বইটি যদি মুষ্টিমেয় কিছু প্রকৃত পাঠকের কাছেও পৌঁছায়, আমি তাতেই খুশি। মধ্যবিত্তের অহম আমার পুরোটুকু - অর্থ নয়, লোভ যশে।
আশা বা হতাশার গল্পঃ বইটি লিখি ২০১১ সালের ডিসেম্বরে, ৯দিনে। তখন আমি ভয়ানক এক অসুস্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। শুতে পারিনা, বিছানায় বসে থাকি, বসে বসে ঘুমাই। বিছানায় বসেই বইটি লেখা। স্বপ্ন দেখি সুস্থ হয়ে সিনেমা বানাবো, একেবা্রেই নতুন এক সিনেমা। যার মূল চমক থাকবে কাঠামো আর প্রেজেন্টেশনে। পুরোপুরি সুস্থ হতে সময় লেগে যায়, অনেক কিছু ঘটে যায় জীবনে, সিনেমা আর বানানো হয় না। উপন্যাসিকাটি সেই সিনেমার কাহিনী। এটি পড়ে কেউ যদি মনে করেন এরকম সিনেমা হওয়া উচিত এবং এর সাথে থাকতে চান সুস্বাগতম। সিনেমাটা আমি এখনো বানাতে চাই। আবার ভেবে বসবেননা আমি বিনে পয়সার উপকার চাইছি !!!!
একই প্রকাশনী থেকে আরেকটি বই বেরিয়েছে - ঈসপের সেরা ৫০ গল্প - ঈসপের বাছাই করা ৫০ গল্পের অনুবাদ, বাচ্চাদের জন্য। এটি শুক্রবার থেকে পাওয়া যাওয়ার কথা। সেটিও সংগ্রহে রাখতে পারেন আপনার প্রিয় কমবয়েসী পাঠকটির জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:০৩