ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে সচিবালয় অবরোধ করে রাখা আনসার সদস্যদের পেছনে থেকে কারা কলকাঠি নেড়েছেন তাঁদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া অত্যাবশ্যক। স্রেফ চাকুরী স্থায়ীকরণের জন্য এ সহিংস অবরোধ ঘটানো হয়েছে ধরে নিলে ভুল হবে। ভবিষ্যতে আরো বড়ো ধরণের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড ঘটানোর মহড়া হতে পারে এটি। নিঃসন্দেহে, অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতই চক্রগুলোর লক্ষ্য।
এসব ষড়যন্ত্রের মুলে রয়েছেন অঢেল অর্থসম্পদের মালিক দুর্নীতিবাজ রাজনীতিক এবং প্রশাসনের একাংশ। প্রশাসন বলতে পুলিশ এবং সিভিল প্রশাসন, দুপক্ষেরই হাত থাকতে পারে এতে। কারণ, হাসিনা আমলে অবৈধ পন্থায় তাঁরা যে বিশাল অর্থ-বৈভবের মালিক হয়েছেন তা যথাযথভাবে উপভোগ করতে হলে হাসিনার দুঃশাসনই এ গোষ্ঠীর একান্ত প্রয়োজন। তাই, তাঁরা মরণ কামড় দিয়ে বারবার চেষ্টা করবে অন্তর্বর্তী সরকারকে হটিয়ে দিয়ে পুনরায় স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করতে। নিজেদের স্বার্থেই সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থায়নেও এরা পিছপা হবে না।
এ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কিছু সাহসী ভূমিকা নিতে হবে দ্রুত। কিভাবে শুরু করা যেতে পারে এ ধরণের পদক্ষেপ?
পতিত স্বৈরাচারের দালাল হিসেবে সুপরিচিত, জ্ঞাত আয়বহির্ভুত অর্থসম্পদের মালিক, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়েছেন, বা স্বৈরাচারী শাসনামলে দ্রুত পদোন্নতি পেয়েছেন, এমন কিছু কর্মচারী-কর্মকর্তাকে চাকুরী হতে বরখাস্ত করে বিচারের উদ্দেশ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। শুরুটা করতে হবে বর্তমানে চাকুরীরতদের দিয়ে; তবে, ধীরে ধীরে অবসরে যাওয়া লুণ্ঠনকারীদের দিকেও নজর দিতে হবে।
প্রশাসনের কিছু পদে রদবদল বা কিছু কর্মকর্তাকে দায়িত্ব হতে প্রত্যাহার করে নেয়াই এক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। কেননা, তেমন ব্যবস্থায় স্বৈরাচারী হাসিনার প্রেতাত্মারা গোপনে সংগঠিত হয়ে নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটানোর সুযোগ পাবে। ষড়যন্ত্রকারীরা যাতে সরকারের বাদবাকি কর্মচারীদের সাথে যোগাযোগ করতে না পারে তেমন ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। সাময়িক বরখাস্ত করে তাঁদের অন্য সকল সরকারি কর্মচারী হতে আলাদা বা আইসোলেট করা জনপ্রশাসনে চলমান নৈরাজ্য ও সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র অবসানের লক্ষ্যে একান্ত প্রয়োজন; আর এ কাজটি করতে হবে যথাসম্ভব দ্রুততার সাথে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১১:৪৪