somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম দর্শন/ধর্মের ইতিবৃত্ত-৩

১০ ই অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা যাকে আলো-আঁধার বলি,তার সূত্রের অস্তিত্ব রঙিন চশমার মতোই আপেক্ষিক। সূর্য আলো দেয়,তার আলোতে আমরা দেখি,ডুবে গেলে আর দেখি না;দেখি না যে তা নয়;যা দেখি তাকে অন্ধকার বলি। অন্ধকার কে দেয়!! পক্ষান্তরে একই জগত একই মাটি একই রক্ত-মাংসের তৈরি অসংখ্য নিশাচর,আমাদের ঠিক উল্টো। আমরা দেখার জন্য সূর্য উদয়ের অপেক্ষায় থাকি;ওরা দেখার জন্য সূর্য অস্ত যাওয়ার অপেক্ষায় থাকে! না ওরা এ সূর্যটি দেখতেই পায় না বরং ওরা ওদের সূর্য উদয়ের অপেক্ষায় থাকে;যার অস্তিত্ব বিজ্ঞান আজও আবিষ্কারের চেষ্টায় রত! সম্ভবত ওদের সূর্যও ঠিক পূর্ব-পশ্চিমে উদয়-অস্ত যায়। আর সে কারণেই হয়তো কোরান ঘোষণা করে,“রাব্বুল মোসরেকাইনে অ-রাব্বুল মাগরেবাইনে” [৫৫: আর-রহমান-১৭] অর্থ: দু’টি পূর্ব ও দু’টি পশ্চিমের রব আল্লাহ।
এ দু’টি ব্যতিরেকে আরো একটি জীব-জগত আছে,যারা আমাদের বর্ণিত আলো-আঁধার, নিশাচরদের আলো-আঁধার কোনোটাই স্বীকার করে না। তারা হল উভয়চর। এরা দিন-রাত্র বলতে কিছুই বোঝে না,হয়তো অনেক কিছু বোঝে কিন্তু আমাদের মতো অবশ্যই নয়।
একই জগত ও পরিবেশে উল্লিখিত একের মধ্যে তিন জাতির ধ্যান-ধারণা ও ঈমান,স্ব-স্ব গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং সকলেই জড়,বস্তু ও বাস্তব। পক্ষান্তরে,একে অন্যের কাছে অদৃশ্য অবস্তু ও অবাস্তব বা গায়েব বটে! তাদের বিশ্বাস,বিজ্ঞান-গবেষণা ইত্যাদি পরস্পরবিপরীত,বিতর্কীত। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিচার করলে সবই সন্দেহজনক ও আপেক্ষিক। মূলত প্রত্যেক জীবকে নির্দিষ্ট,সীমাবদ্ধ ও সীমিত জ্ঞান,গুণ ও ক্ষমতা দিয়েই তৈরি করা হয়েছে। অতএব স্ব-স্ব দলীয় ঈমান-আকিদা যথাসত্য নয়।
চন্দ্রের আলো,ওটা তার নিজস্ব আলো,সূর্য থেকে ধার করেনি: ‘হু- আল্লাজী- নূরান।‘ [১০: ইউনুস- ৫] অর্থ: তিনি সূর্যকে তেজোদীপ্ত ও চন্দ্রকে স্নিগ্ধময় করেছেন। অর্থাৎ দুটোরই অস্তিত্ব ও গুণের স্বতন্ত্রতার সাক্ষ্য দেয়। বিজ্ঞান বলে পৃথিবীরও আলো আছে। আলো আছে সৃষ্ট-অসৃষ্ট প্রত্যেকটি বস্তু অবস্তুর। আল্লাহু নূরুচ্ছামাঅতে অল আর্দ [২৪: নূর-৩৫] অর্থ: দৃশ্য-অদৃশ্য, বস্তু-অবস্তু,অর্থাৎ আকাশ ও জমিনের জ্যোতি বা জীবনই আল্লাহ্। আলো-আঁধার দেখা যায়,অনুভব ও উপলব্ধি করা যায়,সনাক্ত করা যায় অথচ তা বস্তু বলে কেউ স্বীকার করে না। অদৃশ্য অবস্তু বলেও কেউ ঘোষণা করে না। তবে তার পরিচয় বা বিষয়বস্তু কী! এবং কিসের তৈরি তা আজও ধারণা ব্যতীত অজানা। জীবনের পরিচয় আজও দুর্ভেদ্য,রহস্যাবৃত। জীব-জীবের দেহ দেখে কিন্তু জীবন দেখে না।
কোনো বস্তুতে জীবনের সঞ্চার হলে,জীব নামে আখ্যায়িত হয়। এই জীবনের সূত্রও নিম্নরূপ:
আলিফ-লাম-মীম।
ক. স্থুল জীবন দেহ খ. সূক্ষ্ম জীবনদেহ গ. নূর বা জ্যোতি জীবনদেহ।

স্থূল জীবনদেহ: হাড্ডি,মজ্জা, রক্ত,মাংস ও রস সম্বলিত জীবনদেহ।

সূক্ষ্ম জীবনদেহ: স্থূল দেহ ব্যাপিয়াই তার অবস্থান। রূপ,স্বরূপ,আকার আকৃতি সবই অবিকল স্থুলদেহানুরূপ। দুই দেহ একাকার,আবার স্বতন্ত্রও বটে। সূক্ষ্ম দেহ স্থূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইচ্ছামতো স্বাধীন চলাফেরা করতে পারে।সংক্ষিপ্ত কথায়: যিনি বা যাকে স্বপ্নে দেখেন,তিনিই সূক্ষ্ম জীবনদেহ। জীবের ঘুম মানেই স্বপ্নে দেখা ;যতক্ষণ ঘুমায় ততক্ষণই স্বপ্ন দেখে। যা দেখে তাই বস্তু,তাই বাস্তব এবং তাই-ই কট্টর সত্য। ঘুম ভাঙলেই তা অবস্তু,অবাস্তব ও অসত্য। অথচ মনে থাকে অনেক কিছু ;আবার ঘুমিয়ে গেলে এই কট্টর,কঠিন ও বাস্তব জগত মুহূর্তের মধ্যেই অবস্তু,অবাস্তব ও মিথ্যা হয়ে যায়;এমনকি অণুমান,ধারণা বা কল্পনারও বাইরে। ঘুমিয়ে গেলে ধর্মকর্ম,আল্লাহ রাছুল, বিজ্ঞান,অবিজ্ঞান সবই মিথ্যা,অর্থাৎ কিছুই না। আর ঐ যে ‘কিছুই না’ তা-ও কিছু না। এটাই কোরানে বলছে: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ নাই কিছু,কিছু ব্যতীত;অর্থাৎ এই নাই,এই আছে।
স্থূল দেহ অনেক ক্ষেত্রেই সূক্ষ্ম দেহের অধীন বা তার প্রতিচ্ছায়াও বলা যায়। এর সঙ্গে সম্পর্ক যত গভীর ও নিবিড় হয়,স্বপ্ন ততই স্মরণ থাকে ;এমনকি জাগরণ অবস্থায়ই স্বপ্ন দর্শন স্বাভাবিক হয়ে যায়। তখন স্বপ্ন আর শুধু স্বপ্নই নয় বরং বাস্তব হয়ে যায়। ঘুমন্ত অবস্থায়ও অনুরূপ চেতন থাকে। ঠিক উভচরের মতোই। এর নামই চৈতন্য প্রাপ্তি। চৈতন্য প্রাপ্তি হলে অতীত ও ভবিষ্যতে ভ্রমণ করা যায়। এই চেতনাপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এ যাবত ধর্মা-ধর্মের যাই করা হল তা সবই পণ্ডশ্রম অর্থাৎ কোনো ছোয়াব বা পুণ্য (লাভ) হয়নি।(চলবে-শেষ পর্ব)
বিনীত।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:০৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×