ব্যক্তি
ব্যক্তি জানা জগতে
আমি তুমি সে
এ-তিন ব্যতিরেকে
ব্যক্তি হয় না ভূতলে।
‘আমিত্বে’ ঠেঁসে থাকা
অহঙ্কারী হয় পাকা
অভিশপ্ত হয় পরিণামে।
যেমন হয়েছে ইবলিছগণে।
‘তুমিত্বে’ প্রকাশে নিঃস্বার্থ
জেগে রাখে জ্বলন্ত প্রেম
ব্যাপী সপ্ততল দিগন্ত।
‘সে’ থাকে সর্বদা অজানা
উহাই অ-আল্লামা আদামাল আছমা।
জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রসারে ‘সে’
‘আমিত্বে’ প্রেরণা জাগিয়ে।
‘তুমিত্বে’ বরকত অজানা
নিশ্চয়ই পাবে আল্লাহু রাব্বানা।
আমি=সত্তানুভূতি। তুমি=প্রেম। সে=জ্ঞান। ‘আমি’র আমিত্ব দিয়ে অফুরন্ত জ্ঞান রাজ্যের যে যতটুকু জেনে প্রেমডোরে ‘তুমি’ করতে পারে,সে ততটুকু আল্লাহবোধ অনুভূতি করে। [প্রেরণাবাণী;পৃ: ২০; প্রে. প্রা. মজিবুল হক]
আলিফ-লাম-মিম =আনা-লতিফা-মুনজিল= স্থুলদেহ- সূক্ষ্মদেহ- জ্যোতিদেহ= আমি- তুমি- সে।
সহজ ও সরল ভাষায় উল্লিখিত ব্যাখ্যাই যথাসর্বস্ব। শব্দত্রয় অতীত,বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এবং বিশ্বের যাবতীয় সৃষ্টি-অসৃষ্টির পরিচয়। ‘আমি’ অর্থাৎ আপন সত্তানুভুতি দিয়ে,‘তুমি’র আবিষ্কার হয় অতঃপর ‘তুমি’র অনুসরণেই ‘সে’ অকল্পনীয়,অদৃশ্য জগতের জ্ঞান ও বিশ্বাস নিশ্চিত হয়।
আমি,তুমি,সে এই সূত্রের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সৃষ্টি-অসৃষ্টি, প্রকৃতি-অপ্রকৃতি,ব্যাপিয়া। এটাই মহাপ্রকৃতি,মহাগ্রন্থ বা লাওহে মাহফুজ। এই প্রাকৃতিক মহাগ্রন্থ সম্বন্ধে কোনোই সন্দেহ নেই।
আমি আমার সত্তা বা অস্তিত্ব উপলব্দি করাতেই তুমি’র প্রতি আকর্ষণ হয়, তুমি’কে বুঝতে পারলে অজানা সে’র সন্ধান পায় এবং সে থেকেই যে বিবর্তনের ধারায় তুমি অতঃপর আমি’র সৃষ্টি হয়,এই উপলব্ধি নিশ্চিত হয়। আর সে সর্বদাই ধরা-ছোঁয়া বা কল্পনার উর্ধ্বে এবং ইহাই আল্লাহ। এই অমোঘ সূত্রের বিশ্বাসী ভক্তগণ গবেষণা ও অনুশীলণের মাধ্যমেই ব্যক্তি ও বিশ্বের যাবতীয় প্রশ্ন ও সমস্যার সমাধান পায়। এর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ কালের আবর্তন-বিবর্তনের সঙ্গে জড়িত, তাই নিত্য নব নব বলেই হাজার-লক্ষ সমুদ্রের পানি কালি ও সৃষ্টির সকল গাছ কলম করে লিখতে থাকলেও কোরানের বাণী কস্মিনকালেও শেষ হবার নয় (দ্র: ৩১: ২৭;১৮: ১০৯)। সূত্রটির সহজ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপমাস্বরূপ নিম্নরূপ:
আলিফ লাম মিম= আমি- তুমি-সে= ক. মাংস দেহ খ. কঙ্কাল দেহ গ. সার দেহ।
মাংস দেহ: চামড়া,রক্ত মাংস সম্বলিত দেহ।
কংকাল দেহ: হাড়-হাড্ডি সম্বলিত দেহ।
সার দেহ: কঙ্কাল বা হাড্ডির মধ্যে মজ্জা বা রস দেহ।
এই তিন দেহের সমাহারে একটি দেহধারী মানুষ। তাদের স্বতন্ত্রতা এবং বৈশিষ্ট্য উপমাস্বরূপ ভিন্ন ভিন্ন ক্যামেরার চোখে দর্শন করলে মুল বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে।(চলবে-২)
বিনীত।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:৪১