somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

★★শেষ বিকেলের গল্প ★★

০৩ রা মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হ্যালো ভাইয়া।
:বলো
:ভাইয়া আপনি আমাকে ফোন দেন না ক্যান?
:ব্যস্ত থাকি তো। বোঝই তো মেডিকেলের স্টুডেন্ট।
:এইটা কোন কথা না। আপনি ইচ্ছা করলেই আমাকে ফোন দিতে পারেন। আপনি কেন দ্যান না?
:বললামই তো একটু ব্যস্ত থাকি।
:এখন কি ব্যস্ত?
:না একটু ফ্রি। রাতে ডিউটি আছে।
:ভাইয়া।
:বল
:না থাক কিছু না।
:আচ্ছা ঠিক আছে।
:আপনি কি জানতে চান না?
:কি জানতে চাইব?
:উফ। আপনি একটা ছাগল।
:ঠিক বলেছ আমি ছাগল।
:আপনি গাধা একটা।
:হ্যা আমি গাধা।
:ধুরর!!!
:কি হয়েছে?
:কিছুনা।
:আচ্ছা।
:ভাইয়া।
:বলো
:আপনার মনে আছে?
:কি?
:আমি ছোট থাকতে ১ম একটা চিঠি দিয়েছিলাম আপনাকে?যখন আপনারা আমাদের পাশের বাসায় ছিলেন?
:হুম মনে আছে?
:পড়েছিলেন?
:খেয়াল নেই
:কি লিখেছি মনে আছে?
:না মনে নেই।
:ও। কি করেছেন চিঠিটা?
:মনে নেই।
:আপনি এরকম কেন?
:কিরকম?
:কেমন বোকা বোকা।
:জানি না তো
:আপনি কি আগের মতই আছেন ? নাকি মোটা হয়েছেন আরো?
:হুম মোটা হয়েছি।
:ভাবি মাইর দেয় না।
:থাকলে অবশ্যই দিত।
:আপনাকে আমার মাইর দিতে ইচ্ছা করে। দেই?
:দাও।
:না থাক। বোকা মানুষকে মারা ঠিক না। মা নিষেধ করেছেন। আপনি একজন সহজ সরল বোকা সোকা ভদ্র ভাল মানুষ।
:হুম
:বিয়ে করবেন কবে?
:দেরী আছে
:কেন?
:টাকা পয়সা নাই। বউ না খেয়ে মারা যাবে।
:আন্টি কেমন আছেন?
:ভালো। তোমার বাবা মা?
:ভাল। আপনার ছোট বোন কিসে পড়ে?
:ইন্টার।
:ঢাকায়?
:হুম।তোমার বড় ভাই কোথায় এখন?
:ভাইয়া বিদেশে। সামনের মাসে আসবেন।
:ও আচ্ছা।
:আপনি এমন ক্যান। জানেন আমি আপনাকে সেই ক্লাস এইট,এস এস সি, এইচ এস সি সব কিছুর রেজাল্ট জানিয়েছি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে আমি আপনাকেই প্রথম জানাই?
:না জানতাম না। এখন জানলাম।
:আপনি আমাকে কখনই বুঝলেন না।
:হয়ত
:আসলেই আপনি বোঝেন না।
:হুম
:আপনাকে আমি মোট আটটা চিঠি দিয়েছিলাম। একটাও পড়েছেন?
:মনে নেই।
:কই সেগুলো?
:জানি না।
:থাক জানার দরকার নেই।একটা কথা ছিল।
:বলো
:আপনাকে আমার এটাই শেষ কল।আমি আর আপনাকে ফোন দিব না।
:এই নিয়ে কয়বার বলেছ এমন?
:অনেকবার। কিন্তু এবার আমি সিরিয়াস।
:ও আচ্ছা।
:ভাইয়া
:কি?
:আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। সামনের মাসের শেষে বিয়ে। ভাইয়া অবশ্যই আসবেন। আপনাকে এ কথা জানাতেই ফোন দিয়েছি। কার্ড ছাপানো শেষ। আপনাদের বাসায় কয়েকদিনেই তা পৌছে যাবে।
:কংগ্রাটস!!
:বিয়েতে আসবেন।
:অবশ্যই আসব।
:ভাইয়া
:কি?
:একটা কথা বলতে চাই।
:বল
:আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন না?
:জানি না,মনে হয় না।
:আপনি একটা মিথ্যুক।
:তুমিও মিথ্যুক।
:কেন???
:এ নিয়ে ৪ ৫ বার তোমার বিয়ের কথা আমায় বলেছ।সবই মিথ্যা।এবারেরটাও মিথ্যা।
:তারমানে আপনি আমাকে ভালোবাসেন?
:(চুপ)
:প্লিজ ভাইয়া একবার শুধু শুনতে চাই আপনার মুখ থেকে,প্লিজ।
:বোকা মেয়ে ফোন রাখ। বোকা বোকা কথা বলা বন্ধ করো।
:(কিছুক্ষন চুপ করে থেকে) ভাইয়া এবার আমি সত্যিই বলছি।
:ওকে
:আমি আপনাকে ভালোবাসি।
: .......
:রাখি ভাইয়া। আর কথা হবে না
: .......
:রাখি
:রাখো।
:আপনি একটা ভীতুর ডিম
:হুম।
মেয়েটা ফোন রেখে দিলো। পরে আসলেই ওর বিয়ের কার্ড পেয়েছিলাম। বাসার সবাই গিয়েছিল।আমি যাই নি।
আকাশে কালো কালো মেঘ। পশ্চিমে একটু খোলা আকাশের সন্ধান পেয়ে তা থেকেই ঠিকরে পড়ছে আলো। বৃষ্টির দিনে বুড়িগঙ্গার পানি পরিষ্কার। ক্যাম্পাসের পেছনের গেট থেকে বের হয়ে সোজা বুড়িগঙ্গার পাড়ে যাই। গুনে গুনে আটটা কাগজের নৌকা বানাই ও ছেড়ে দেই।নৌকাগুলো ভেসে যাচ্ছে।
শেষ বিকেলের আলো,নদীর জলে প্রতিফলন তার মাঝে নৌকাগুলোর ভেসে যাওয়ার দৃশ্যটা সত্যিই অদ্ভুত। সেদিকে তাকিয়ে আছি। যতক্ষণ পারলাম তাকিয়ে ছিলাম। ফিরে আসার আগ মুহুর্তে মনে হল আমি কাঁদছি। সূর্য অস্ত গেল। ধীরে ধীরে মনের মত, ব্যস্ত শহরটাও একসময় ডুবে গেল অন্ধকারে।
অদ্ভুদ সেই সময়টা!

জীবন থেকে নেয়া !!!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×