১. মধ্যবিত্ত চাকমা ঘরের ছেলে। চট্টগ্রাম শহরের নামী একটা স্কুলে লেখাপড়া করেছে। এইচএসসি পাস করেছে নটরডেম কলেজ থেকে। ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় পিছিয়ে থাকলেও উপজাতি কোটায় ভালো একটা সাবজেক্ট পেয়ে যায়। চাকরির বাজারে সে সুবিধাবঞ্চিত। তার জন্য কোটা আছে।
২. দাদা মুক্তিযোদ্ধা। সে সুবাদে বাবা সরকারি চাকরি পেয়েছে। ছেলেও তার সুবিধা পাচ্ছে। দেশের নামকরা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাস করেও সে সুবিধাবঞ্চিত। তার জন্য কোটা আছে।
৩. বড়লোক বাবার আদরের মেয়ে। পড়ালেখায় মোটামুটি। সারা বছর প্রাইভেট কোচিংয়ে হাজিরা দিয়ে দুইটা জিপিএ ফাইভ সংগ্রহ করেছে। এরপর ব্যয়বহুল একটা প্রাইভেট ভার্সিটি থেকে অনার্স শেষ করেছে। বিয়ে হয়েছে বিসিএস ক্যাডারের সাথে। স্বামীর উৎসাহে বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। চাকরির বাজারে সেও সুবিধাবঞ্চিত। তার জন্য কোটা আছে।
৪. গ্রামের কৃষকের ছেলে। নিজেও পার্টটাইম কৃষক। সাইন্স পড়তে খরচ বেশি তাই কমার্সে পড়েছে। নিজের মেধা আর যোগ্যতায় ঢাবির একাউন্টিং ডিপার্টমেন্টে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। একাডেমিক পড়াশোনা আর চাকরির প্রস্তুতির সাথে টিউশানি করে পরিবারকে সাহায্য করেছে। পাস করার পরপরই অনেকগুলি প্রাইভেট ব্যাংকের লিখিত পরীক্ষায় উৎরে গেছে। কিন্তু গোল বাধছে ভাইভায়। আত্মীয়পরিজন সব চাষাভুষা, ব্যাংকের প্রয়োজন পড়লে ডিপোজিট আনবে কার কাছ থেকে? তার উপর কেতাদুরস্তও না। তার থেকে পিছিয়ে থাকা শহুরে স্মার্ট ছেলেপিলেরা ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার হয়ে যাচ্ছে। শেষ ভরসা সরকারি চাকরি। নিয়োগ পরীক্ষায় এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত চাকরিটা হচ্ছে না। কারণ সে সুবিধাভোগী। উপরের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আগে চাকরি দরকার।
পরিশিষ্ট: সরকারি-বেসরকারি কোন রকম সাহায্য না পেয়ে পচনশীল পলিথিনের উদ্ভাবক জাপান যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আমি বলে দিচ্ছি আগামী কয়েক বছর পর আমরা জাপান থেকে এই প্রযুক্তি আমদানি করব, নিজেরাই যেখানে রপ্তানি করতে পারতাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:১৪