ঢাকার রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির উতসব চলছে। বাতাসে প্রচুর ধুলা। সর্দি-কাশি বেড়ে গেছে।
ঢাকার ব্রাঞ্চগুলিতে প্রচুর চাপ। হবিগঞ্জে ছয়টার মধ্যে হিসাব মিলিয়ে ফেললেও এখানে সাড়ে সাতটা, আটটা বেজে যায়। মাঝেমধ্যে মনে হয় ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দেই।
ঢাকার রাস্তায় বের হলেই দেখি রিক্সা, মোটরসাইকেল উলটা দিকে চলছে। সব বাস গেইটলক করে ফেলা হয়েছে। বাস পেতে আধাঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়। লোকাল বাস যে কয়টা আছে সেগুলিতে এমনভাবে যাত্রী নেয়া হর যেন আমরা মানুষ না, আমরা গবাদিপশু। বিশ মিনিটের রাস্তা পারি দিতে একঘণ্টা লাগছে। এখন না হয় বাসার কাছেই অফিস, দূরে অফিস হলে কি অবস্থা হবে ভাবতেই ভয় লাগে।
বিকালবেলা নিজেদের চাইতে বড় ব্যাগ বহনকারী বাচ্চাকাচ্চাদের দেখে মন খারাপ হয়ে যায়। আজকাল হস্তাক্ষর শেখার জন্যও প্রাইভেট পড়তে হয়। হায়রে পড়ালেখা!
এতোসব বিষয় মনের উপর চাপ ফেলছে। ইদানীং খিটখিটে স্বভাবের হয়ে যাচ্ছি। অকারণে মেজাজ হারাই।
প্রায় এক বছর আগে ঢাকায় ফিরে এসেছি। চাকরির কারণে দুই বছর হবিগঞ্জে ছিলাম। অনেক নির্ঝঞ্ঝাট জীবন কাটিয়েছি। কিন্তু পৃথিবীর নিকৃষ্টতম শহরে ফিরে আসতেই হলো।
কারণ নাগরিক সুবিধা বলতে যা আছে তা ঢাকাতেই একটু পাওয়া যায়। দেশের ৮০% মানুষ বিদ্যুৎ সেবার আওতায় থাকলেও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পান শুধু ঢাকাবাসীরা। ঢাকার বাইরে বিদ্যুৎ যায় না মাঝেমাঝে আসে। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ভালো হাস্পাতাল নেই। সন্তানের লেখাপড়ার জন্য ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। ডিপ্লোমা পরীক্ষা হয় ঢাকায়, ট্রেনিং হয় ঢাকায়, প্রমোশনের ভাইভা হয় ঢাকায়। প্রত্যন্ত ব্রাঞ্চে থাকলে সময়মত প্রমোশন হবে না, চাকরিতে পিছিয়ে যেতে হবে।
দ্যাশের মানুষ সাধে ঢাকা শহরে আসে না আর দেশের মানুষ সাধে বিদেশ পারি জমায় না।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:০২