কেএফসি ক্রাশার খেতে টাকাও লাগে আবার সময়সাপেক্ষও। কিন্তু বর্তমানে ক্রাশ খাওয়া চোখের পলক ফেলার আগেই হয়ে যায়। আমি যার উপর প্রথম ক্রাশ খেয়েছিলাম সে কিন্তু বাংলাদেশী না,ফ্রেঞ্চ। অতি সুদর্শন সেই ভদ্রলোকের প্রথম দেখা যখন পাই তখন আমি কলেজের ফাস্ট ইয়ারে পড়ি। সে আমাদের কলেজে এসেছিলো ফ্রেঞ্চ কালচারাল সেন্টারের প্রমোশন টাইপ কাজে। সারাদিন ওয়ার্কশপ আর সেমিনার শেষে যখন যাওয়ার বেলা এলো সাহস করে আমি তার মেইল আইডি চেয়ে বসলাম। বিস্ময়ভরা ছোট ছোট চোখে আমার দিকে তাকিয়ে সে তার একটা card আমার দিকে বাড়িয়ে ধরলো। আমি তো মেঘ না চাইতে বৃষ্টি টাইপ খুশি হয়ে বিশাল এক হাসি দিলাম(চাইলাম মেইল আইডি,পেয়ে গেলাম ফোন নাম্বার,ঠিকানা সব)
অতি আনন্দে card টা এপ্রনের পকেটে রাখলাম এবং বাসায় গিয়ে ডোরেমন দেখতে বসে ওটার কথা ভুলেও গেলাম। দুইদিন পর যখন মনে পড়লো তখন আর এপ্রনই খুঁজে পাচ্ছিলাম না।আম্মাজানকে জিজ্ঞেস করে জানলাম ওইটা তিনি ধুয়ে ইস্ত্রি করতে পাঠিয়ে দিয়েছেন এবং card এর ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।
২.
উপরোক্ত ঘটনার পর প্রায় ৭বছর কেটে গেছে। আমি এখন পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্নকাজও করি(আউটসোর্সিং স্পেশিয়ালি)। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ধরনের মানুষের সাথে আমার প্রায় প্রতিদিনই কথা/কাজ করতে হয়। তো আজ বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে একটা সেমিনার পেপারের কাজের জন্য আমাকে এবং মি হাউ নামের এক চায়নিজ ছেলেকে হায়ার করে Alliance Francaise de Dhaka. বিকালে গেলাম তাদের সাথে কথাবার্তা বলতে,পেপার জমা দিতে এবং এডিট করতে হলে এডিটের কাজ করতে। কাজ শেষ করে যখন সৌজন্যমূলকভাবে গ্যালারি ঘুরে দেখছিলাম,হঠাত এক দরজা দিয়ে দেখি সেইইইইইই সুদর্শন ভদ্রলোক....জীবনের প্রথম ক্রাশ ভারিক্কিচালে এগিয়ে আসছে আমাদের দিকেই। মি হাউ এটা দেখেই গলার টাইটা আরেকটু টেনে টানটান করে দাঁড়ালো আর আমি তো বেকুবের মতো তাকিয়ে ছিলাম(ভাবটা এমন ইহা আমি কি দেখিলাম? কাহাকে দেখিলাম?)
বিশুদ্ধ ফ্রেঞ্চটানের ইংরেজীতে(ট কে তারা ত এর মতো উচ্চারণ করে) সে বললো:হ্যালো প্রিতি লেডী!!
আমি:হ্যালো
সে:ডিড উই মিট বিফোর?
আমি: আই ডোন্ট থিংক সো।
সে: সিমস লাইক বাংলাদেশী পিপল আর অলসো বিকামিং লাইক চাইনিজ পিপল...এভরিওয়ান ইজ সেম টু সেম। হাহাহাহা
সে: হেহেহেহে(পে স্লিপে উহার সাইন লাগবে,তাই ফালতু জোকেও হাসলাম)
বেরিয়ে এসে মি আমাকে জিজ্ঞেস করলো,তুমি মিথ্যে বলেছো কেনো? আমি দেখেই বুঝতে পেরেছি তুমি ওই লোককে আগে থেকেই চিনতে।
আমি:চেনা মানুষকেও মাঝেমাঝে অচেনা বলতে হয়,কারণ এতে করে পুরোনো মায়া কাটানো যায় আর অনেক ব্যাখ্যা এড়ানো যায়। যার জন্য নয়-তার জন্য মিথ্যে বলাই ভালো....