বেশ ঘটা করে ঘোষণা দিয়ে ফেব্রুয়ারিতে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগ। তারা অবরোধ ও হরতালের মত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে বিএনপি দ্রুত নির্বাচন দাবী ও মাঠ পর্যায়ে গণসংযোগের আড়ালে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইন্টেরিম সরকারের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ কে কোন প্রকার আন্দোলন সংগ্রাম করতে দেয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। তাদের বক্তব্য যতক্ষণ পর্যন্ত না আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছে, শেখ হাসিনা কে মাইনাস করে ক্লিন নেতৃত্ব না আসছে আওয়ামী লীগের দেশের রাজনীতিতে কোন স্থান নেই। সমস্যা হইলো যেহেতু ইন্টেরিম সরকার আওয়ামী লীগ সংগঠনটি নিষিদ্ধ করেনি তাই তাদের যে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা সরকারের জন্য বুমেরাং হতে পারে। সরকারের এক প্রকার গাফিলতির কারণে মাত্র ছয় মাসের মাথায় আওয়ামী লীগ মাঠে নামার মতো সাহস দেখাচ্ছে । খুবই কমসংখ্যক আম্লিকের নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছে। বাকিরা টাকা দিয়ে সব ম্যানেজ করে ফেলছে।
আওয়ামী লীগের নিজ দলের মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে মাঠে নামাকে কেন্দ্র করে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। তৃণমূলের কর্মীরা পলাতক ক্রিমিনাল নেতাদের নেতৃত্ব মেনে নিতে নারাজ। তবে কি আওয়ামী লীগ বিভক্ত হতে যাচ্ছে ? আওয়ামী লীগ রাস্তায় নামার ঘোষণা এক ধরণের চালাকি হতে পারে গত বছরের নুর হোসেন দিবসের মতো। সকল বিরোধী শক্তিকে মাঠে নামিয়ে নিজেরা টিভিতে আরামসে খবর দেখবে। আওয়ামী লীগের কোন কর্মসূচির প্রতি জনসাধারণের সমর্থন থাকবে না। তবে সরকারের দিক থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো সতর্ক থাকতে বলা উচিত। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে ইন্টেরিম সরকারের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের কারণে দেশের পরিস্থিতি আরো অবনতি হলে ইন্টেরিম সরকারের উপর জনরোষ আরো বাড়বে।
বিএনপির হাই কমান্ড থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ঠিক যেভাবে আওয়ামী লীগের সময় তাদের যে কোন কর্মসূচী প্রতিহত করতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ মাঠে থাকতো একই ভাবে পাড়া মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা। জনগণের জানমালের দায়িত্ব একক ভাবে এই দূর্বল সরকারের পক্ষে নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব নয়। জনগণের সাথে এতে করে বিএনপির জনসম্পৃক্ততা বাড়বে।
ইসলামিক দলগুলোর এসব রাজনৈতিক আন্দোলনে না মাঠে থাকাই ভালো। বিশ্ব মিডিয়াতে ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলোর মাঠে নেমে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়লে ভুল মেসেজ যাওয়ার ভয়ংকর সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের ভিতরের গণতান্ত্রিক ভাবধারার মানুষজন এমনিতেই প্যানিকে আছে ইসলামিক দলগুলোর ভুল কার্যক্রমে। বিদেশি সহায়তা আমেরিকার পর সুইজারল্যান্ড বন্ধ করে দিয়েছে।
ছাত্রদের মধ্য থেকে রাজনীতি করতে আগ্রহীদের নিয়ে নতুন দল আসতে যাচ্ছে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি। সরকারের পেশী শক্তি হিসাবে তারা পুলিশের পাশাপাশি থাকতে পারে। তবে সাধারণ ছাত্রদের পুনরায় রাস্তায় নামিয়ে আওয়ামী লীগ কে প্রতিহত করতে চাইলে মানুষের মধ্যে ছাত্রদের প্রতি বিরূপ মনোভাব দেখা দিবে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আন্দোলনে দেশবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের সামনে সুন্দর ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। তাই এসব রাজনৈতিক বিষয় সরকারের উপর ছেড়ে দিয়ে পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকার বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের ফেব্রুয়ারিতে মাঠে নামার ঘোষণা শুনে চিটাগং, রাজশাহী ও ঢাকায় ছাত্ররা আন্দোলন ও অনশন করছে বলে নিউজে এসেছে। আন্দোলনকারী ছাত্ররা রাজনৈতিক দলগুলোর ছাত্র সংগঠনের সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সর্বোপরি ইন্টেরিম সরকারের দায়িত্ব হবে ছাত্র-জনতা কে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দাঁড় না করিয়ে প্রশাসনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। অন্যথায় জনগণের অসন্তুষ্টি নিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত সরকারের পথচলা দুঃসাধ্য হবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:১৪