পরাজিত, ক্ষমতাচ্যুত ও বিতাড়িত আওয়ামী লিগারদের মনোভাব যতোই দেখছি দেখতে দেখতে শুধু যে হাসি পাচ্ছে তাই নয়, সাথে সাথে রাগও লাগছে আবার অনেক ক্ষেত্রে নতুন করে আশঙ্কাও জাগছে!! একটা জিনিষ খুব পরিষ্কারভাবে ভাবে দেখলাম এরা প্রায় সবাই যেন মনেপ্রাণে চাচ্ছে আমাদের বাংলাদেশটা পাকিস্তান/আফগানিস্তান বা আরেকটি সিরিয়া হোক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বিতাড়িত হওয়ার আগে থেকেই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ ঘিরে তাদের বদ-দোয়া দেয়া শুরু হয়েছিলো। একইসাথে শুরু হয়েছিলো আজেবাজে, নোংরা, আপত্তিকর সমস্ত মন্তব্য আর টিটকারি। এরা যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না তাদের পরাজয়। সবদিক থেকে পরাস্ত হয়ে এখন তারা নিজ দেশের প্রতিও বিরূপ আচরণ করা থেকে বিরত হচ্ছে না। যেন এরা সবাই চাচ্ছে তাদের প্রিয় সরকার ক্ষমতায় নেই বলে দেশটা যেন কোনোভাবেই আর ভালো না হয় বা যেন আর ভালো হতে না পারে। যেন কোনোভাবেই দেশের একটা ভালো ভবিষ্যৎ তৈরি না হয় বা দেশটা যেন একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। খুব করে চাইছে দেশটা সিরিয়ার মতো হয়ে যাক। এই ব্লগেই এ জাতীয় বিরূপ মনোভাব কিছু ব্লগারদের মধ্যে দেখলাম।
অর্থাৎ এদের চিন্তাধারা কি পরিমাণ বিষাক্ত ভেবে দেখুন।
আওয়ামী লীগ নোংরা রাজনীতি করতে করতে এতোটাই ছ্যাঁচড়ামি করেছে যে মানুষের মনোজগৎটাকেও বিষিয়ে দিয়ে গেছে।
তারা প্রগতিশীলতার রূপ পরিগ্রহ করে ঠিকই কিন্তু ভেতরে ভেতরে লালন করে তীব্র প্রতিক্রিয়াশীলতা আর ভয়াবহ রকমের নীচতা। সেই নীচতা এতোটাই যে এখন নিজেদের দেশের একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে উঠুক এটাও তারা চায় না।
কাল হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এর একটি সাক্ষাৎকার দেখলাম ইউটিউবে।
গোটা ভিডিওজুড়েই তিনি অভিযোগের পর অভিযোগ চাড়িয়ে গেলেন ছাত্রদের থেকে শুরু করে বাকীদের দিকেও। সবাইকে একটা অপরাধবোধে ভোগানোর চেষ্টাও করলেন যে তারা নাকি সব মেনে নিয়েছিলেন সবার চাহিদা পূরণ করেছিলেন, দেশের এতো উন্নতি করেছিলেন আর বিনিময়ে আমরা তাদের যেন কতোটা অকৃতজ্ঞদের মতো অন্যায়ভাবে দেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করে তাড়িয়ে দিয়েছি। এখন এই দুঃখে এই কষ্টে হাসিনা নাকি আর রাজনীতিই করবেন না!!
অন্যান্য আওয়ামী লিগারদেরও প্রায় একই জাতীয় কথাবার্তা দেখছি।
এখন দেশটা সিরিয়া হয়ে গেলেই তারা সবচেয়ে খুশি হবেন!!
কথা হচ্ছে অতিমাত্রায় অন্ধ আনুগত্য, অতি দাম্ভিকতা, উন্নাসিকতা আর চরম মাত্রায় দায়িত্বজ্ঞানহীনতা একটা মানুষ তো বটেই, আস্ত একটা গোষ্ঠীকেই ভীষণ রকম অসুস্থ মানসিকতার মানুষ করে গড়ে তোলে।
একসময় জার্মানির হিটলার ও তার নাৎসি পার্টি সেটাই করেছিলো। তাদের সেই পরাজিতের মনোভাব এতোটাই ভয়াবহ ছিল যে শেষের দিকে অর্থাৎ জার্মানির চূড়ান্ত পরাজয়ের মুখে খোদ হিটলারও মিত্রবাহিনীর আক্রমনের তোড়ে অসহায় জার্মানরা প্রাণভয়ে একটি টানেলে আশ্রয় নিলে তার নাৎসি বাহিনীকে দিয়ে সেই নিরীহ মানুষদের পুরো টানেল ফ্লাডেড করে ডুবিয়ে মেরেছিলেন, কারণ তিনি মনে করতেন যে জার্মান জাতী শত্রুর হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে না তাদের সবার মরা উচিৎ। যাক, সেসব ইতিহাস নিয়ে সামনের কোনও একবার লিখবো। সেই নাৎসিবাদের বিষ আজও পুরোপুরি দূর হয়নি ইউরোপ থেকে।
কথা হচ্ছে আওয়ামী লীগও ঐ হিটলারের নাৎসি পার্টির মতো আরেক ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিলো দেশে। সেটা কতোটা খারাপ ছিল সেটা তো আপনাদের আর নতুন করে ব্যাখ্যা করে বলার আর কিছু নেই।
ফ্যাসিবাদ একটা বিষ। বড় ভয়ানক রকমের একটা বিষ। এই বিষ যে মানুষের মনকে যে কতোটা নীচে নামাতে পারে, মনকে কতোটা বিষাক্ত বানাতে পারে তার কোনও ঠিক ঠিকানা নেই।
আজ পরাজিত আওয়ামী লীগের লোকজন আর তার সমর্থকেরা সেই বিষাক্ত মানসিকতার পরিচয়ই দিয়ে যাচ্ছে। হেরে গিয়ে পালিয়ে গিয়েও।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১১:২৩