১৯৯৪ সালের কথা ।আমার স্টার্টআপটা শুরু হয়েছিল সিলিকন গলি থেকে । আমি তখন যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন গলি’তে ( আজকের সিলিকন ভ্যালী ) ২০ একর জায়গা কিনে নতুন কিছু করার চিন্তা করছি । সেইসময় সিলিকন গলিতে আজকের মতো এতো জনবল, অফিস, ব্যস্ততা কিছুই ছিলো না । চারিদিকে শুনশান নীরবতা। অফিস বলতে আমারটাই প্রথম । ‘জাম্বুরা’ নামের একটি অফিস খুললাম কারণ সেখানে আমি বিশাল সাইজের একটি টাইপ মেশিনকে আরও আধুনিক করার কাজ করবো । টাইপ মেশিনটার সাইজের কারণে ওটার নাম দিয়েছিলাম ‘জাম্বুরা’ । সেই অফিসে আমিই মালিক ,আমিই কর্মচারী । আমার ঠিক পাশের জায়গাটি কিনে আরেক বাঙালি মেধাবি মাসুদ রহমান ভাই অফিস বানিয়ে ক্যালকুলেটর থেকে কম্পিউটার বানানোর জন্য অমানুষিক পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমি বাঙালি জেনে মাসুদ ভাই আমার সাথে পরিচিত হলেন এবং অল্পদিনেই আমরা খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেলাম । মাসুদ ভাই আমার অফিসটাকেই কাজে লাগানোর চিন্তা করলেন আর আমিও জনমানবহীন এই ভূতুরে সিলিকন গলিতে মাসুদ ভাইকে পেয়ে খুব উচ্ছসিত ও সাহসি হয়ে গেলাম । আমার অফিসের সামনের বিশাল জায়গাটাটুকুকে অনেক ফুল ও ফলের গাছ লাগিয়ে ছোট খাটো বাগান তৈরি করে ফেললাম আমি ও মাসুদ ভাই । সেই বাগানে একটি আপেল গাছও লাগিয়েছিলাম যার নিচে বসে আমি ও মাসুদ ভাই অনেক গবেষণা করেছি কিন্তু কোনদিন একটা আপেল টুপ করে মাথায় পরে আমাদের গবেষণায় নতুন কিছু যুক্ত করার কোন সুত্র দিয়ে সাহায্য করেনি , আফসোস!!! মাসুদ ভাই একদিন আমাকে বললেন ‘’ এলাহী ভাই, আসেন আমাদের কাজের সুবিধার জন্য অল্প বেতনে কিছু ছাত্রকে নিয়োগ দেই এবং এখানে কিছু মানুষ বাড়ানোর চেষ্টা করি । পুরো এলাকা জুড়ে আমি আর আপনি দুজনে সব সামলাতে পারবো না’’ । মাসুদ ভাইয়ের কথায় রাজি হয়ে গেলাম এবং ডেভিড ফিলো, ষ্টিভ জবস, আল্পাগোভিচিনাই স্লোকভিদিচ নামের তিন তরুন ও রান্না বান্না করার জন্য ইয়াং জেরি নামের আরেক তরুণকে নিয়োগ দিলাম । সবগুলাকেই পরীক্ষায় একাধিকবার ডাব্বা মারার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ' ইউনিভার্সিটি অব মেসোপটেমিয়া ' থেকে বের করে দিয়েছে । সবার থাকা খাওয়া ঐ সিলিকন গলির আমার ‘জাম্বুরা’ অফিসের এরিয়াতেই । ষ্টিভ জবসকে রাখলাম আমার সাথে জাম্বুরা নিয়ে কাজ করতে আর ফিলোকে নিলো মাসুদ ভাই , কঠিন আল্পাগোভিচিনাই নামের তরুনটিকে কাজে লাগালাম পরিত্যাক্ত ১০ একর জায়গার উপর নির্মিত বিলের মাঝে ইলিশ মাছ চাষ ও সাথে গরুর খামারের কাজে । ছেলেটি সবসময় বিলের প্রাচীরের সিমানা ঘেঁষা ফটকে বসে থাকতো যেন আমরা ডাক দিলেই শুনতে পায় । তার কঠিন নামটি বাদ দিতে ডাকার জন্য সহজ নাম রাখতে মাসুদ ভাইয়ের সাথে পরামর্শ করে নাম দিলাম ‘বিল গেইটস’ যে নামটি পছন্দ হওয়ায় ছেলেটি আজো এই নামেই সবখানে নিজেকে পরিচিত করেছে ।
শুরু হলো আমাদের বিশাল গবেষণার কাজ । আমি জাম্বুরা টাইপ মেশিনের সাথে একটি টেলিভিশনের পর্দা লাগিয়ে যা টাইপ করি সেটা দেখতে পারার ব্যবস্থা করলাম । জবস আমার কাজে সাহায্য ফুট ফরমায়েশ খাটতো আর গ্যারেজে আমার ' Lamborghini' ও মাসুদ ভাইয়ের ‘BMW’ সিরিজের দুটো জীপ ধোঁয়ামোছা করতো। জবসকে আমার কাজের সুবিধার জন্য আমার জাম্বুরা টাইপ মেশিনের মতো আরেকটা টাইপ মেশিন বানিয়ে দিলাম । পাশের টেবিলে মাসুদ ভাইও ক্যালকুলেটারের সাথে বিশাল পর্দা লাগিয়ে কি সব হাবিজাবি হিসাব নিকাশ করেন কিছুই বুঝিনা । মাসুদ ভাইয়ের আবার আমার মতো বোতল প্রীতি ছিলো না। উনি শুধু মাঝে মাঝে বুদ্ধি বাড়ানোর জন্য ছোট ছোট লতাপাতা কল্কির ভেতর জ্বালিয়ে ‘সিদ্ধি’ নাম দিয়ে টানতেন । আমি প্রায় সময় বোতলের জুস খেতে খেতে রাস্তায় পড়ে গেলে মাসুদ ভাই আমাকে বাড়ীতে নিয়ে আসতেন । রাত জেগে কাজ করতে দেখলে প্রায় সময় এসে বলতেন ‘’ভাই আপনি আপনার অমানুষিক মেধা নিয়ে যেভাবে অমানুষিক পরিশ্রম করছেন তা অবিশ্বাস্য , একটু ঘুমান ভাই ,ঘুমান ‘’ ।
ইন্টারনেট তখনও আবিস্কার হয়নি । একদিন সকালে অফিস ঘরে ঢুকেই দেখি মাসুদ ভাই উনার বিশাল ক্যালকুলেটরের স্ক্রিনের পেছনে নাইলনের রশি ও কিছু তারের এক প্রান্ত লাগালেন আর আরেক প্রান্ত আমার জাম্বুরা টাইপমেশিনের পর্দার পেছনে লাগালেন । আমি দেখে বললাম ‘’ কি করেন? কি করেন মাসুদ ভাই? ‘’ জবাবে মাসুদ ভাই হেসে বললেন ‘’ একটা নতুন কিছু মাথায় ঘুরতেছে সেটাই টেস্ট করার চেষ্টা করতেছি ‘’ বলে উনার চেয়ারে বসলেন । কিছুক্ষণ ক্যালকুলেটরে কি যেন গুঁতো গুঁতো করে আমাকে বললেন ‘’ এলাহি ভাই আপনার মেশিনের পর্দাটা অন করেন তো ‘’ । অন করেই আমার ‘’ টিনের চালে কাক আমি তো অবাক ‘’ হওয়ার উপক্রম । পর্দায় দেখি ‘’ প্রতিঃ এলাহী ভাই , বিষয় – হাবিজাবি , ১+১= ২ , ২+২=৪ ‘’ এমন সব লিখা যা আমি লিখিনি । মাসুদ ভাই আমার জাম্বুরার পর্দার সামনে এসে লিখাগুলো দেখে ‘’ইয়াহুহহহহহহহহহু বলে চিৎকার করে উঠলেন যা শুনে কফি নিয়ে আসা ইয়াং জেরি ছেলেটা হাত থেকে ট্রে ফেলে কফির মগ দুটো ভেঙ্গে ফেললো । আমি মাসুদ ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম ‘’ কি করলেন ভাই ? কিছুই তো বুঝলাম না । ‘’ মাসুদ ভাই আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন ভাই ‘’ আমি আমার ক্যালকুলেটরে টাইপ মেশিন যুক্ত করে টাইপ যুক্ত করে নাইলনের রশি ও তার দিয়ে আপনাকে চিঠি /মেইল পাঠালাম যা আপনার পর্দায় দেখা গেছে । ‘’ ......... এইভাবে সেদিন মাসুদ ভাই ইন্টারনেট ও ইমেইল আবিস্কার করে ফেলেন যা সেদিন জোরে ‘ইয়াহু’ শব্দটি উচ্চারন করায় অফিসের স্টাফ ইয়াং জেরির অনুরোধে ‘ইয়াহুমেইল/ Yahoomail’ নাম দেন ।
কদিন পর মাসুদ ভাই ও আমি দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেই । এতো ‘অমানুষিক মেধা’ নিয়ে বিদেশে পরে থাকার কোন মানে নেই , এর চেয়ে এই মেধা দিয়ে দেশের কাজে লাগাই এমন সিদ্ধান্তে দুজনেই উপনীত হয়ে সিলিকন গলির সবকিছু বিক্রি করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম । আমাদের চলে আসার কথা শুনে ছেলেগুলোর মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো । ওদের সেই কি কান্নাকাটি শুরু হয়ে গেলো । এই দুইটা বছরে সবাই খুব আপন হয়ে গিয়েছিলাম । ছেলেগুলার কান্নাকাটি দেখে আমাদের দুজনের দয়ার শরীর মোচড় দিয়ে উঠলো । সিদ্ধান্ত নিলাম বিক্রি না করে সবকিছু ওদেরকে দান করে দিবো যেন ওরা কিছু করে খেতে পারে । আমরা তো দেশে গিয়েই নিজেদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে বিরাট করে খেতে পারবো । মাসুদ ভাই উনার বিরাট ক্যালকুলেটরটি বিল গেইটস কে দিয়ে দিলেন আর ইন্টারনেটের নাইলনের দড়ি, তারগুলো ও ইয়াহু মেইলের ইউজার নেইম ও পাসওয়ার্ড ডেভিড ফিলো ও ইয়াং জেরিকে দিয়ে দিলেন । আমি আমার ‘জাম্বুরা’ টাইপ মেশিন জবসকে দিয়ে দিলাম আর পুরো ২০ একর জায়গা ৪ জনের নামে সমান ভাগে ভাগ করে দানপত্র দিয়েদিলাম । ফেরার দিন সবাই যখন আমাদের এগিয়ে দিতে অফিসের গেইট পর্যন্ত আসছিল তখন আমি প্রিয় আপেল গাছটির নিচে দাঁড়িয়ে জবসকে কিছু পরামর্শ দিচ্ছিলাম । জবস আমাকে জড়িয়ে ধরে শুধুই কাঁদছিল আর বলছিল ‘’স্যার আমি আপনাকে কোনদিন ভুলবো না । আমার জীবনের সবকিছুতে আপনি জড়িত থাকবেন চিরদিন । আপনার নাম জড়িত থাকবে চিরদিন ‘’ । আমি জবসকে বলছিলাম ‘’জবস যদি এই জাম্বুরা টাইপ মেশিনকে আরও উন্নতি করাতে পারো তাহলে এর নাম জাম্বুরা থেকে বদলে ফেলো এবং সুন্দর একটা নাম দিও ‘’ । জবস বলছিল ‘’ আমি যদি কিছু করতে পারি তাহলে আপনার এলাহী নামের ‘A’ অক্ষর দিয়ে কোন ফলের নামে রাখবো নাম ‘’ । আশ্চর্যের বিষয় হলো যে আপেল গাছটি থেকে কোনদিন কোন ঝড় তুফানে একটি আপেল মাটিতে পড়লো না অথচ সেইসময়ে টুপ করে একটা আপেল জবসের মাথায় পড়লো। জবস আপেলটি হাতে নিয়ে বললো ‘’ স্যার আমি পেয়ে গেছি , জাম্বুরার নামটি বদলে আমি আপেল রাখবো যার শুরুটা আপনার এলাহি নামের ‘A’ দিয়ে ।‘’ আমি সেদিন জবসকে কিছুই আর বলিনি শুধু জবসের মাথায় হাত রেখে অনেক আশীর্বাদ দিয়ে এলাম । সত্যি সত্যি জবস তাঁর কথা রেখেছিলো , আমার জাম্বুরাকে সে আপেল নামে পরিচিত করে তুলেছে আজ সারাবিশ্বে। একই ভাবে মাসুদ ভাইয়ের সেই ক্যালকুলেটরের সাথে আরও অনেক কিছু যুক্ত করে প্রোগ্রাম তৈরি করে ফেলে বিল গেইটস নামের আমাদের সেই খামারের তত্ত্বাবধায়ক ছেলেটি যে প্রোগামের নাম সে মাসুদ ভাইয়ের নামের ‘M’ দিয়ে ‘Microsoft’ রাখলো যার সাথে আমাদের দুজনের নরম মন ও অফিস কক্ষটির স্মৃতি বুঝাতে ‘’Microsoft Office’’ যুক্ত করে সিলিকন গলির সেইসব সংগ্রামী দিনগুলোকে আজো স্মরণ করে চলেছে । ......... মাসুদ ভাই দেশে এসে আজ চাকরী করছে ও উত্তরায় সংসার পেতে সুখে দিনযাপন করছে আর আমি সিলেটে বসে বসে মাথার চুল ছিঁড়ে আঁটি বেঁধে বস্তায় ভরছি । আহ।।
এবার ফেইসবুক শুরু হওয়ার আগের একটি ঘটনা বলবো । ২০০১ সালের দিকে আমি আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাই । জাকারবার্গ তখন নিউইয়র্কের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে । ২০০৩ সালের একদিন আমি নিউইয়র্ক শহরে গেলে কনকনে শীতের রাতে আমার কালো ' Lamborghini' জীপটা চালিয়ে নিজের বাড়ীতে ফিরছিলাম । বাড়ির গেইটের কাছে আসা মাত্র দেখলাম বিপরীত পাশের ফুটপাতে একটা ছেলে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছে। দেখে খুব মায়া লাগলো। আমার আবার খুব দয়ার শরীর , কারো কষ্ট সহ্য হয়না। আমি ছেলেটিকে আমার গায়ের ১০০০০ ডলার দামের জ্যাকেটটা ওর গায়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম '' কি নাম তোমার ? '' উত্তরে বললো ''জাকারবার্গ।'' । আমি জিজ্ঞেস করলাম '' কি করো ? এখানে কেন এসেছো ?'' সে জানালো '' পড়ালিখায় ডাব্বা মারতে মারতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দিয়েছে । এখন একটা চাকরী খুঁজছি।তাই আপনার সাথে দেখা করতে এসেছি স্যার। '' ছেলেটিকে দেখে সেদিন খুব মায়া লেগেছিল এবং চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম ছেলেটার ভেতর কিছু একটা আছে তাই সেদিন রাতে আমার বাড়ীতে আশ্রয় দিলাম । পরের দিন সিলিকন গলিতে আমার 'ফজলেবুক ' নামের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অফিসে নিয়ে গেলাম । তাঁকে ''fazlaybook'' নামের আমার আবিষ্কৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওয়েবপেইজটা দিয়ে বললাম '' এটা রাখো। আমি আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে চলে যাচ্ছি দুদিন পর ।এইদেশে থাকবো না । আমার দেশের জন্য কিছু কাজ করতে হবে তাই দেশে চলে যাচ্ছি, তোমাকে চাকরী দিতে পারিনি কিন্তু একটা অমূল্য সম্পদ দিয়ে গেলাম ,তুমি বুদ্ধি খাটিয়ে এটা দিয়ে কিছু করে খেয়ো । এটা তোমাকে একদিন অনেক বড় করবে । '' আমার কথা শুনে ছেলেটি আমাকে ধরে কেঁদে দিলো এবং আমার পা ছুঁয়ে সালাম করে বললো '' স্যার , আমি আপনার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আপনার এই ঋণ আমি কোনদিন শোধ করতে পারবো না তবে আপনাকে চিরদিন স্মরণ রাখতে আমি জীবনে যা কিছুই করবো বা বানাবো সেগুলোর নাম আপনার 'fazlay' নামটির প্রথম অক্ষর 'f' দিয়ে রেখে আপনাকে আমি চিরদিন স্মরণ করবো।'' ...... সেদিন সেই ছেলেটির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দেশে আসার পর প্রায় প্রতিদিন সে আমাকে তার কাজের আপডেট দিতো, আমার খোঁজ খবর নিতো। ২০০৫ সালে এক মধ্যে রাতে ছেলেটি আমাকে ফোন করে বলে '' স্যার , আমি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির ওয়েবপেইজ ডেভেলপ করে এখন বাণিজ্যিক ভাবে সবার জন্য ওপেন দিচ্ছি ।'' খবরটা শুনে খুব খুব ভালো লাগলো । জানতাম ছেলেটি আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবে ।ছেলেটিকে সেদিন বললাম '' তুমি ফজলেবুক নামটা চেঞ্জ করে তোমার পছন্দমতো একটা নাম দাও , আমার নামটি মুছে দাও ''। আমার কথা শুনে ছেলেটি কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বললো '' না স্যার, আমি আপনার দেয়া নামটি রাখবো'' । আমি ওকে বুঝিয়ে বললাম জাকা শোন , সেদিন তোমাকে আমি যা দিয়েছিলাম সেটা ছিল আমার ব্যক্তিগত পরিচিত মানুষদের সাথে যোগাযোগ ব্যক্তিগত ওয়েবপেইজ যার নাম সেদিন তাই ' fazlaybook' রেখেছিলাম । আজ তুমি বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে এই যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁদের পরিচিতজনদের সাথে যুক্ত করবে সেখানে কোন একজন ব্যক্তির নাম রাখাটা খারাপ দেখায় । সে কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বললো ''স্যার রাখি, আমার জন্য দোয়া করবেন , সব সময় ভালো থাকবেন '' । ২ দিন পর সে আমাকে ফোন দিয়ে জানালো ''স্যার , আমি আপনার কথাটা রেখেছি তবে 'বুক' শব্দটি রেখে আগের মতো রেখেই তার আগে আপনার নামের একটি নয় প্রথম ও ২য় অক্ষর রেখে আমি এমন একটা নাম রেখেছি যে নামটি বুঝাবে পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের মুখ কিন্তু কোটি কোটি মানুষ নীরবে আপনার মুখটিই দেখবে আর আমার চোখে আপনার মুখটি সবসময় ভাসবে যার নাম দিলাম '' facebook'' ।এই ফেইসবুক দিয়েই আপনি চিরদিন আমার পাশে থাকবেন। প্লিজ স্যার না করবেন না ।'' সেদিন জাকারের কথা শুনে আমার চোখে জল এসেছিল এই ভেবে যে আমি নিউইয়র্ক শহরে ২০০৩ সালের সেই শীতের রাতে মানুষ চিনতে ভুল করিনি তবে এতো ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা পাবো সেটা ভাবিনি । আমার চোখের আনন্দ অশ্রু নিয়ে '' জাকা তুমি একদিন অনেক্কক্কক্কক্কক্কক বড় হবে। বিশ্বের সেরা মানুষগুলোর একজন হবে '' বলে ফোনটি রেখে দিলাম ।
তথ্যসুত্রঃ জাতীয় তথ্যবাবা কবি ও কাব্যর অপ্রকাশিত ‘ আমার যত আবিস্কার’ শীর্ষক গ্রন্থ থেকে চুরি করে অনূদিত ।।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩২