প্রিয় ছবি আপুনি,
আমাকে অনেকগুলো নামে ডাকলে তুমি। মনে মনে কি গাইছিলে ???? যাইহোক এইসব নামগুলো সবই স্বাপ্নিক এবং কাব্যিক এবং সে সব আমারই তৈরী নাম। সে যাইহোক, তবে জানি যে নামেই ডাকো না কেনো সব নামগুলিই তোমার কাছে অনেক প্রিয়। যেন এক একটা চমক! তোমার চোখে আমি যেন এক স্বর্গরাজ্যের বাসিন্দা। তুমি এ কথা বলেছোও আমাকে অনেক অনেকবারই। তুমি যখন ব্যস্ত থাকো তোমার হেসেলে, চা বা সকালের নাস্তার সাথে অফিস যাত্রার তাড়াহুড়োয় তখন তুমি ভাবো আমার ব্যস্ততা শুধুই আনন্দে। তাই তো লিখেছো নিশ্চয় আমি আমার আনন্দময় ব্যস্ততায় ছবি আঁকছি বা গল্প বা কবিতার বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছি। হা হা কল্পনার মানুষগুলো এমনই স্বপ্নময় রাজ্যেই বাস করে। যেমন আমি। একটা কথা কি জানো? তোমার এই কথামালাখানা এত্ত এত্ত কাব্যিক হয়েছে যে আমি মুগ্ধ হয়ে গালে হাত দিয়ে বসে দুদিন ভেবেছি তোমার লেখার শব্দগুলি নিয়ে। যেন তুমি এক অচিন দেশের লৌহ কঠিন রাজপ্রাসাদের এক বন্দিনী রাজকন্যা। বাঁধা পড়েছো এক কঠিন বেড়াজালে। এই বেড়াজালটা এক অদৃশ্য ঘেরাটোপ। জাগতিক এবং সাংসারিক যে মায়াজালে আটকে পড়ে বাংলাদেশের নারীরা। তুমি ঠিক সেই খাঁটি মানুষটাই হতে পেরেছো অকাতরে বিলিয়েছো নিজেকে। তবুও তোমার কাব্যিক মন সকল ঝড় ঝঞ্জার পরেও উড়ে চলে পাখা মেলে। কাব্য লেখে আকাশে বাতাসে।
তুমি লিখেছো-
সকল গুণে গুনবতী প্রিয় আপু? তোমার জীবনে কী কষ্ট নেই? কখনো রাগতে দেখি না!
কখনো উচ্চস্বরে কাউকে মন্দ বলতে শুনিনি, তোমার জীবনে কী বিষণ্ণতা নেই?
বিষাদ তোমাকে ছুঁয়েছে কখনো?
কারো উপর রেগে গিয়ে রাগ বুকের বাড়ী পুষেছো কখনো?
ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে কখনো একলা থেকে ফেলেছো চোখের জল?
হা হা তোমার এ সব প্রশ্নের উত্তর কি হবে জানো? তুমি শুনিতে চেওনা আমার মনের কথা..... চোখের জল? অনেক ফেলেছি তবে কখনও সেটা কারো সামনে নহে। জানোই আমি ভাঙ্গি কিন্তু মচকাই না। তাই আমার চোখের জল কেউ দেখে না। আসলে আমি কাউকে দেখতেই দেই না।
না আমার জীবনে কষ্ট নেই। আমাকে রাগতে দেখে কারা জানো ? যে আমাকে চিনতে পারে সেই চেনাতেই চিনি তারে গো এ ছাড়া আর কারো রাগের ধারই ধারিনা আমি! ফুহ!! হা হা ...
নাহ আমার কোনো বিষন্নতাও নেই। বিষাদ ছুঁতেই পারে না আমাকে। মাঝে মাঝে তো ডোপামাইন সেরাটোনিন বেড়েই যায় আমার ভেতরে আমার এমনই ধারনা জানো? যাইহোক আমি এক যোদ্ধা। বিষাদ বিবাদ রাগ অভিমানের সাথে যুদ্ধ করে জয়ী হতে শিখে গেছি আমি। আমাকে কাঁদাবে কার সাধ্য আছে বলো? আমাকে যে কাঁদাবে তার ভাগ্যে আছে কাঁদন
তুমি কী পাথর মানুষ কঙ্কাবতী? কখনো বিতৃষ্ণা দেখিনি তোমার মাঝে। এত হাসিখুশি থেকে জীবনটাকে করে তুলেছো ফুরফুরে। তোমাকে দেখলেই না মানে তোমার লিখাগুলো অথবা খাবারের আয়োজন দেখলেই মনে হয় তোমার কোনো দুঃখ নেই । নেই কোনো বিষাদ বিষণ্ণতা। কখনো বিরহের অনলে জ্বলেছো কি?
বিরহ! হা হা এবারে কিন্তু অট্টহাস্য হাসছি আমি। আবারও গান মনে পড়ে গেলো আমার। জানো একটা সময় ছিলো আমি আমার জীবনের পাতায় সব কিছুই খুঁজে পেতাম গান আর কবিতায়। জীবনের প্রতি মুহুর্তের প্রতি ক্ষনেই মনে হত আমার জন্য গান লেখা আছে। ভেবে দেখো দুঃখে ভাসা হৃদয়ে কি গান মনে পড়ে আর কারো? হয়ত হ্যাঁ হয়ত না কিন্তু আমার পড়ে। এই যে বিরহের কথা বললে। এই জীবনের কত শত ক্ষনে কত শত ব্যস্ততা কিংবা অবসরে মনে পড়ে আমার বিরহকে। গুন গুন করি এই পাথর হৃদয়ে। বঁধু তোমার আমার এই যে বিরহ এক জনমের নহে... পলি জমে হয় শক্ত পাথর আর হৃদয়ের পলিমাটিতে দুঃখ জমে হয় পাথর হৃদয়।
তোমাকে দেখলে কখনো ভয়ও পাই। কেমন করে যেন হাসতে হাসতে তুমি কঠিন বলে ফেলতে পারো। মাঝে মাঝে তোমার মত হতে ইচ্ছে করে। কিছু কিছু মানুষ আমাকে এমন কষ্ট দেয় ইচ্ছে করে হাসতে হাসতে অনেক কঠিন বলে ফেলি। কিন্তু আমি যে তা পারি না। তোমার মত হওয়া দুঃসাধ্য।
হ্যাঁ তোমরা যা অনেকেই পারো না আমি তা পারি। কেনো জানো? কেমন করে পারি? কারণ আমি এমনটাই পারতে চেয়েছি। তুমি কখনও চাওই নি.....আরও একটা ব্যপার আছে। সহজ কথা যায় না বলা সহজে......এই চর্চাটা বোধ হয় একটা আর্ট। সেই আর্টটাই প্রাকটিস করে ফেলো। না পারলে অবশ্য আমার থেকে ট্রেইনিংও নিতে পারো। এই যে দেখো আমি পেরেছি। কাজেই তুমিও পারবে। হাসতে হাসতে কঠিন কথা। এ এক কঠিন শিক্ষনীয় বিষয় আর একবার চর্চা করে ফেললেই দেখো অনেক দুঃখই কমে যাবে। ডেল কার্নেগী বা কারো বই এ পড়েছিলাম ভদ্রভাবে না বলুন। আমরা অনেকেই আছি অনুরোধে ঢেকি গিলে ফেলি। এই অনুরোধে ঢেকি গেলা তো দূরের কথা মনের বাইরে এক রতি ধুলো কনাও গেলা চলবে না আপুনিমনি। আমি জানি তুমি এমনটা কখনই চেষ্টা করবে না। কারণ তুমি তা চাও না।
আচ্ছা চিলেকোঠার রাজকুমারী, তোমার এমন কোনো কষ্ট আছে যা কাউকে বলোনি। তোমাকে দেখলে কখনো দুঃখীই মনে হয়। মনে হয় রাজ্যের সুখ তুমি নিজেই অর্জন করে বসে আছো। অবশ্য এতে তোমার ক্রেডিটই বেশী। তুমি তো দুঃখ ব্যথা কারো অবহেলাকে পাত্তাই দাও না। তোমার বুকে দীর্ঘশ্বাস আছে কিছু?
দীর্ঘশ্বাস! কষ্ট! দুঃখ বেদনা! এত কিছু নিয়ে ভাবো কেনো বলোতো! আমি তো ভাবি না। না আমার এসব নেই। এসব কিছুই নেই আমার। তবে আমার আছে দুঃখ বিলাস। সেও আমার এক শখ। সেই দুঃখ বিলাসেই আমি সুখের সাগরে ভাসি। দুঃখ বিলাস আছে বলেই তো আজ আমি রাজ্যের সুখে সুখী হতে পেরেছি।
কত গুণ মহাব রব তোমাকে দিয়েছেন। মুহূর্তেই মানুষকে কাবু করার ক্ষমতাও তোমার আছে মাশাআল্লাহ। তুমি জ্ঞানী মানুষ। তোমার তুলনায় আমি নির্বোধ। বেভোলা মানুষ আমি আর তুমি দুনিয়ার সবার কথা মনে রাখতে পারো।
তোমার মন্তব্যগুলো পড়তে বেশ লাগে। কী সুন্দর করে মানুষের তিতে কথার উত্তর মিষ্টি ভাষায় দিয়ে দেও বাপরে। আমি তো কেঁদেই ফেলি মানুষ কটু কথা বললে। কিছু বলতেই পারি না। অফিসে কাজের ঝামেলায় আছি কাউকে বলতে পারি না অথচ কেঁদে ফেলি একা একা।
ঐ যে আবারও বলছি। তুমি কাঁদতে চাও তাই তুমি কাঁদো। নয়তো তিতে কথার মিষ্টি উত্তর কি দিয়ে বানাতে হয় তা এতদিনে জেনেই যেতে। কি দিয়ে বানাতে হয় বলোতো? তাও জানোনা!!! মিছরীর ছুরি দিয়ে। হা হা হা তারপর মিছরীর ছুরি দিয়ে সকল তিতে কথাকেই কচ কচ কচ কচ । হা হা হা ......
তোমাকে সামনা সামনি দেখার বড় ইচ্ছে। জানি তুমি সহজে দেখা দিবে না। তা না হলে বইমেলাইতে হয়তো দেখা হয়ে যেত। আচ্ছা আমি নির্গুণ মানুষ দেখা নাই বা করলে। একদিন কফি খেতে খেতে তোমার গল্প শুনতেও ইচ্ছে করে। ইচ্ছে করে তোমার সাথে সারাটি দিন ঘুরে বেড়াই। মনের গোপন ব্যথাগুলো তোমাকে বলে দেই।
আমাকে দেখার ইচ্ছে! জানোনা আমি স্বপ্নলোকে থাকি! কেউ কখনও খুঁজে কি পায় স্বপ্নলোকের চাবি! হা হা হা তবে যদি কখনও সেই চাবিটা পেয়েই যাও তো কথা দিলাম তোমাকে নিয়ে উড়ে বেড়াবো সারা আকাশ জুড়ে.......আর যারা তোমার মনে কষ্ট দিলো, উপর থেকে তাদের মাথায় ঢিল ছুড়বো মেঘের গোলা করে অথবা আকাশ থেকে ঝড় ঝঞ্ঝা বজ্রপাতের অগ্নিবাণ। প্রমিজ!!!
আমি ব্যস্ত খুব। অফিস আমাকে সময় দিচ্ছে না। অথচ আমি সময় চাচ্ছি। আমি ঘুরে বেড়াতে চাচ্ছি, ছবি তুলতে চাচ্ছি আর লিখতে চাচ্ছি অজস্র কবিতা। তোমাকে নিয়ে লিখার ইচ্ছেও মাটি হয়ে যায়। আজ লিখলাম পনেরো মিনিট সময় পেয়েছি হাতে।
কি হবে এত কাজ করে! যদিও আমি নিজেকেও নিজে এমন প্রশ্ন করেছি বার বার। তারপর বুঝেছি কাজ ছাড়া আসলে আমি অচল। একটা মুহুর্তও থাকতে পারবোনা যত দিন যত ক্ষন বেঁচে থাকবো শেষ নিশ্বাসটা পর্যন্ত। কাজ মানেই গতি আর গতি মানেই জীবন। তারই মাঝে আসুক আনন্দক্ষন।
রাজকন্যা আজ তবে আসি। কাজ পড়ে আছে। কেমন করে যেন সময়গুলো উধাও হয়ে যাচ্ছে। সকালের আলোয় চোখ রাখতেই সন্ধ্যা এসে ডাকে। আমি নীড়ে ফিরে যাই, সাংসারিক কাজে ব্যস্ত হই, তারপর স্বপ্নময় ঘুমে হই আচ্ছন্ন। তোমার রোজকার কর্মগুলো হতে তুমি কী করে সময় বের করো। সময় নিজের করে নিতে আমায় শিখাবে?
আচ্ছা ফিরে যাও তোমার এক রাজ্য কাজের মাঝারে। ডুবে যাও কঠিন কঠোর দায়িত্বে আর জাগতিক কাজে। তোমার স্বপ্নময় চোখে তন্দ্রা নামুক। প্রগাঢ় শান্তির ঘুমের মাঝে চলে এসো আমার স্বপ্নলোকের রাজপ্রাসাদে যতদিন স্বপ্নলোকের চাবিটা নিজ হাতে খুঁজে না পাও ততদিন ....
স্বপ্নেই হোক তোমার সাথে আমার দেখা
রাজকন্যা
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৫:২৪