বাবা কেন যুদ্ধে গেল?
মাগো, সেই গল্প বলো- বাবা কেন যুদ্ধে গেলো?
গভীর রাতে চিঠি হাতে- একা কেন অশ্রু ফেলো?
আমার মতো অন্য সবার- মায়ের মুখে কত হাসি!
তোমার মুখে কালো ছায়া- অন্ধকার এক সর্বনাশী।
সেদিন নাহয় ছোট ছিলাম- অবুঝ ছিলাম শিশুর মতো,
এখন আমি অনেক বড়- শুনবো বাবার গল্প যতো।
বলো মাগো, বলো এবার- শুনবো সব ভয় কী তোমার?
মুক্তিযোদ্ধার ছেলে আমি- শহীদের রক্ত বুকে আমার।
মুখের ভাষা কাড়বে জেনে- দাদু যেদিন মিছিলে গেল,
সন্ধ্যাবেলায় সেই দাদু মোর- শহীদ হয়ে ফিরে এলো।
বাবার শোকে পাগল ছেলে- বুক ফেটে তার কান্না আসে,
আগুন ঝরে দুই চোখে তার- প্রতিশোধের স্বপ্ন ভাসে।
ছেলের বুকে প্রথম সেদিন- ফাগুনে যে জ্বললো আগুন,
একাত্তরে সেই আগুন আজ- নতুন করে জ্বললো দ্বিগুন।
বললো আমি যুদ্ধে যাবো- খোকাকে তুমি আগলে রেখো,
শত্রুছাড়া করবো এদেশ- স্বাধীন হয়েই ফিরবো দেখো।
ভোর না হতেই বাবা যে তোর- এক কাপড়ে যুদ্ধে গেল,
যাবার আগে আদর করে- তোর কপালে চুমু খেল।
তখন তুই ঘুমিয়ে ছিলি- জানলিনা তার কোন খবর,
আজকে তোকে বলছি শোন- উঠোনে তোর বাবার কবর।
দেশতো খোকা স্বাধীন হলো- লাখো শহীদের রক্ত দানে,
শত্রুরা আজও পালিয়ে আছে- কাছে কোথাও কে জানে?
শহীদ বাবার ছেলে যে তুই- রাখবি মায়ের শেষ সম্মান,
দেশের শত্রু করবি নিধন- ক্ষমা নেই ওদের, করে দে সাবধান!
(বিজয়ের মাসে, শেষ নিবেদন)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১১:৪৪