এর আগের পর্বটি পড়তে পারবেন এখানেঃ মেলবোর্নের দিনলিপি-৭ঃ পথ চলার আনন্দ (ছবি ব্লগ)
১০ জানুয়ারী ২০২০, সকালে আমরা ছয়জন (বেয়াই দম্পতি, ছেলে-বৌমা এবং আমরা দু’জন) বেরিয়ে পড়েছিলাম ভিক্টোরিয়া প্রদেশের (মেলবোর্নের বাইরে, কিন্তু আশে পাশের) কিছু দৃশ্য দেখতে। চ্যাপমান’স পয়েন্ট নামে একটি উঁচু জায়গায় আমরা নামলাম। ভিক্টোরিয়া প্রদেশের মর্নিংটন উপদ্বীপে অবস্থিত “মাউন্ট আরথার্স সীট রেঞ্জ” যাওয়ার পথে মেলবোর্ন থেকে ৬৬ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই চ্যাপমান’স পয়েন্ট একটি “কেয়ার্ন”। ইংরেজী Cairn কথাটার অর্থ হচ্ছে ‘সীমানা নির্দেশের জন্য কিংবা কোন স্মৃতিরক্ষার্থে উচ্চভূমিতে স্থাপিত শিলাস্তূপ’। এই পয়েন্টটি চ্যাপমান নামক একটি ‘পাইওনীয়ার ফ্যামিলী’র সম্মানার্থে ১৪ ডিসেম্বর ১৯২৯ তারিখে Mr & Mrs G R Dyson কর্তৃক স্থাপন করা হয়। আকাশ পরিষ্কার থাকলে এখান থেকে ‘পোর্ট ফিলিপ বে’ এর তটরেখার নৈসর্গিক শোভা দেখা যায়। কিন্তু সেদিন আকাশটা মেঘাচ্ছন্ন ছিল বিধায় আমরা সে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারিনি। তাই ওখানে আর দেরী না করে আমরা চলে আসলাম “আরথার্স সীট রেঞ্জ” এ, যার নামকরণ করেছিলেন ১৮০২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে আসা Acting Lieutenant John Murray, কারণ এ স্থানটি দেখতে তার জন্মস্থান এডিনবার্গের “আরথার্স সীট” এর মত ছিল।
“আরথার্স সীট” সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩১৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এলাকাটির সৌন্দর্য সম্যক উপভোগ করতে হলে পায়ে হেঁটে পথ চলাই সর্বোত্তম, তবে আমাদের সে বয়স এখন আর নেই। তাই আমরা সে পথ মাড়ালাম না। আর তা ছাড়া এলাকাটি সর্পসংকুল বলে সাবধানবাণী লেখা থাকতে দেখেছি। সেজন্য ঐ এলাকায় ক্যাম্পিং নিষেধ, পোষা প্রাণী নিয়ে যাওয়াও নিষেধ। হাজার বছর ধরে এলাকাটি Boonwurrung আদিবাসীদের দ্বারা অধ্যুষিত ছিল। তাদের দেয়া এলাকাটির নাম ছিল ‘Wonga’, কারণ একসময় লক্ষ লক্ষ ‘ওঙ্গা’ অর্থাৎ কবুতর সেখানে আসতো বাসা বাঁধার জন্য। এলাকাটিতে ঘন মেঘের কারণে ১৯৩৮ এবং ১৯৪২ সালে অস্ট্রেলীয় বিমান বাহিনীর দুটো বিমান পাহাড়ের গায়ে ধাক্কা খেয়ে বিধ্বস্ত হয়, এতে প্রতিবারেই চারজন করে বিমান ক্রু নিহত হয়। এলাকাটিকে প্রায়ই ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন মেঘ ঢেকে ফেলে। ঐ দুটি দুর্ঘটনার পর থেকে এলাকায় ওরকম মেঘের আনাগোনা দেখলে মানুষ সেই মেঘকে ‘শোকবাহী মেঘপুঞ্জ’ বা ‘ক্লাউডস অভ ট্রাজেডী’ বলে সম্বোধন করে থাকে। ২০১৬ থেকে সেখানে পর্যটকদের জন্য গন্ডোলা সার্ভিস চালু করা হয়েছে। বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করেছি যে সেখানে দূরত্বসহ একটি দিক নির্দেশনকারী ‘কেয়ার্ন’ রয়েছে, যেখানে দাঁড়িয়ে লন্ডন, টোকিও, নিউ ইয়র্ক, ইত্যাদিসহ বিশ্বের নানা শহর থেকে আসা পর্যটকগণ তির চিহ্নের সাহায্যে তাদের নিজ নিজ শহরের দিকচিহ্ন এবং দূরত্ব দেখে নিতে পারেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করে আমরা ফেরার পথে রাই ওশেন বীচে অল্প সময়ের জন্য থামি, কারণ এই বীচটি উত্তাল ঢেউ এর কারণে রোমান্চকর সার্ফারদের জন্য একটি প্রত্যাশিত স্থান। তবে এলাকাটিতে ঘন ঘন ওঠা ধুলোঝড় প্রায়ই তাদের এ কাজে বাধ সাধে। সেখান থেকে আমরা আরেকটি বীচে কিছুক্ষণ অবস্থান করে বাড়ী ফেরার পথ ধরি।
ঢাকা
১৫ মে ২০২০
শব্দসংখ্যাঃ ৪০৫
At Chapman's Point, Victoria, Australia
At a cairn at Mt. Arthurs Seat, from where one can find the direction and distance of some renowned cities of the world.
আহামরি কিছুই নয়, তবুও ছবিটার দিকে তাকালে মায়া লাগে.... একদিন এই পথে হেঁটেছিলাম, এই কথা ভেবে!
At Mt. Arthurs Seat, Victoia, Australia.
Direction Pointer at a cairn at Mt. Arthurs Seat, Victoria, Australia.
এই পাখিটির ডান পায়ের পাতাটি নেই। জন্মগত ত্রুটি, নাকি কোন প্রাণী বা সরীসৃপের আক্রমণে সে পায়ের পাতাটি হারিয়েছে তা কে জানে! পাখিটিকে দেখে মনে খুব মায়া হয়েছিল...
This philosopher bird was without its right toe, standing on the post on one leg. May be a congenital defect or she might have lost it to a predator's attack. Felt so much pity on her.....
রৌদ্রস্নান এবং বই পড়া, দুটোই চলছে....
পদচিহ্ন ....
Some footprints....
হয়তো নীড় বাঁধার খোজে...
May be, looking for a nest....
A visitor at Mt. Arthurs Seat, Victoia, Australia.
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫০