ভাল থেকো পাখি তুমি, ভাল থেকো।
আজীবন সুখে থেকো, আদরে আদরে।
ভালবাসায়, মমতায়,
স্নেহের বাঁধনে থেকো।
চোখের তারায় তারায় দুষ্টুমি নিয়ে থেকো,
টোল পড়া দুটি গালে হাসি নিয়ে থেকো।
যে তোমার দুষ্টুমিকে হাসিমুখে দেবে প্রশ্রয়,
এমনই কারো কাছে থেকো তুমি চিরদিন, সদা হাসিময়।
ইমিগ্রেশন চত্বরে যাবার আগে, তোমার কান্নার আওয়াজে
আমার বুক ভেঙেছিল। এখনো তা আমার কানে বাজে।
তুমিহীন এ ঘরে ফিরে এসে আমি আর ঘুমোতে পারিনি,
সরাসরি চলে গেছি ঈদের জামাতে। তোমার ছায়াহীন
শূন্য এ ঘরে আজ ইউ টিউবের গানগুলো আবেদনহীন।
গান শুনতে শুনতে, শোনাতে শোনাতে আর কখনোই
আমাদের দুপুর একসাথে কাটবে না। এখনো আমি
তোমার সেই ছোট্ট বালিশটাকে বুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোই।
রেখে যাওয়া তোমার খেলনাগুলো আজ নিদারুণ নিঃসঙ্গ।
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আজও আমি টিয়া পাখি দেখি।
গাছের ডালে ডালে আজও বানরেরা ঝাঁপাঝাঁপি করে,
পায়রার দল ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যায়, ঘুরপাক খায়,
শুধু সেগুলো দেখে উল্লসিত হবার মত আজ কেউ নেই!
শূন্যতার হাহাকার নিয়ে আমি অপলকে তাকিয়ে থাকি,
টেবিলের নীচে রেখে যাওয়া তোমার ছোট্ট দুটো স্যান্ডেল,
আর শয্যায় বিছিয়ে রাখা তোমার ছোট্ট বালিশটার দিকে।
(২০১৭ সালের ঈদুল আযহার চাঁদরাতে আমার বড় ছেলে, বৌমা আর আদরের নাতনি আনায়া অভিবাসনে প্রবাসে চলে যায়। তাদের প্রস্থানে ঈদের দিনটা বুকে ফাঁকা শূন্যতার অনুভূতি নিয়ে অতিবাহিত করি।)
ঢাকা
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
এ কবিতাটি পোস্ট করার দুই বছর তিন দিন পর আজ আবার এসে নিজের এ কবিতাটি পড়ে গেলাম। লক্ষ্য করলাম, ইত্যবসরে আমার অলক্ষ্যেই কবিতাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছে- হাজার পাঠসংখ্যার মাইলফলক।
পাখিটিকে গত ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে স্কুলে ভর্তি করে দেয়া হয়েছে। সে দেশের নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ বছরের আগে কোন শিশুকে স্কুলে ভর্তি করানো যায় না। পাঁচ বছর পূর্ণ হবার ১৫ দিন পর থেকেই আমার পাখিটির স্কুল জীবন শুরু হয়ে গেল!
স্কুল শুরুর তিন দিন আগে ওর মা বাবা ওকে সাথে নিয়ে স্কুলে যায় এবং ওকে ক্লাস টীচার এবং ক্লাসরুমের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আসে। সেদিনের তিনটি ছবি এখানে দিলাম। আপনারা সবাই আমার এ পাখিটির জন্য দোয়া করবেন।
ঢাকা
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩০