somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিপ্লবের এক মাসঃ বিষাদময় বিপ্লব বেহাত হবে না যদি...

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ভোর ৪:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইতিহাস আমাদের বলে, একটি বিপ্লবের সাফল্য শুধুমাত্র পুরাতন শাসন ব্যবস্থার পতনে নয়, বরং একটি নতুন, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে নিহিত। যেকোন সাংস্কৃতিক বা রাজনৈতিক পরিবর্তন সময় সাপেক্ষ, যুক্তিশীল মানুষমাত্রই তা জানে, কিন্তু সকালের সূর্য্য দেখে কিছুটা হলেও দিন কেমন যাবে তা অন্তত অনুমান করা যায়। নিজেদের তাঁরা তত্ত্বাবধায়ক বললেও আহ্লাদ করে আমি বিপ্লবী বলতে চাই, তাঁদের বহু কাজ দ্বারা তাঁরা ইতিমধ্যেই মানুষের মনে আশা জাগিয়েছে বটে, কিন্তু আঠারো কোটি মানুষের পরস্পরের প্রতি অসহিষ্ণুতা একুশজন আসমানী ফেরেশতাকেও ব্যর্থ করে দিতে পারে।



ইতিহাসের পাতায় আমরা দেখতে পাই বহু বিপ্লব, যেগুলি তাদের মহৎ উদ্দেশ্য থাকা সত্ত্বেও, বিজয়ের পর ভেঙে পড়েছিল। ১৭৮৯ সালের ফরাসি বিপ্লব “স্বাধীনতা, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব” এর প্রতিশ্রুতি নিয়ে শুরু হয়েছিল। কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এটি রক্তপাত আর আতঙ্কের রাজত্বে পরিণত হয়েছিল। ১৯১৭ সালের রাশিয়ান বিপ্লবও সমতা আর ন্যায়বিচারের স্বপ্ন নিয়ে শুরু হলেও, এর পরিণতি ছিল অত্যাচারী শাসনের অধীনে কোটি মানুষের ভোগান্তি।

এই ইতিহাস আমাদের বাংলাদেশে চলমান বিপ্লবের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করতে পারে। বাংলা বিপ্লবের এগিয়ে যাওয়ার ভিত্তি হবে মানুষের প্রতি মানুষের মমতা (empathy)। বিপ্লবের পর অতি সহজেই পুরানো ক্রোধ কষ্ট আর প্রতিশোধের পাথরে আটকে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু বাংলাদেশকে সেই ফাঁদে পড়লে চলবেনা প্রকৃত বিপ্লব শুরু করতে হবে আমাদের হৃদয় পরিবর্তনের মাধ্যমে, পারস্পরিক সহানুভূতি হবে যার ভিত্তি।

পুরাতন শাসন ব্যবস্থার পতনের পর, নতুন সমাজ গঠনের দায়িত্ব প্রতিটি নাগরিকের উপর এসে পড়ে। এখন শুধুমাত্র আমাদের নেতাদের থেকে পরিবর্তনের দাবি করাই যথেষ্ট নয়, আমাদের নিজেদের প্রতিটি পদক্ষেপে সেই পরিবর্তন আনতে হবে। এই বিপ্লব সাম্যের দাবিতে শুরু হয়েছিল, কিন্তু এই সাম্য শুধু বিশেষ কিছু মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সাম্য আর সহনশীলতা মানে হচ্ছে যারা আমাদের সাথে ভিন্ন মতামত রাখে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো, তাদের অধিকার রক্ষা করা।

এই বিপ্লবের সাফল্য নির্ভর করছে আমাদের একসাথে কাজ করার ক্ষমতার উপর, ব্যক্তিগত লাভের চেয়ে দেশের মঙ্গলকে অগ্রাধিকার দিতে পারার উপর, একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল ও দায়িত্বশীল থাকার উপর। আমাদের উচিত নিজেদেরকে নতুন করে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করা—যাতে এই বিপ্লবের স্মৃতিগুলি শুধুমাত্র ইতিহাসে না থেকে, প্রতিদিনের জীবনে প্রতিফলিত হয়। এবং এভাবে বাংলাদেশ সত্যিকারের শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যায়

০৫.০৯.২০২৪
বার্লিন থেকে
জাহিদ কবীর হিমন
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ভোর ৪:৩৭
৮৬ বার পঠিত
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

১. ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ভোর ৬:৩৪

প্রহররাজা বলেছেন: এই বিপ্লব সবার জন্য স্বাধীনতা নিয়ে আসুক। পিচ্চি হান্নান সুইডেন আসলাম সহ ৫/৬ জন শীর্ষ সন্ত্রাসী মুক্তি পেলো৷ বিপ্লবের আসল উদ্দেশ্য এখন প্রকাশ পাচ্ছে।

২. ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪৯

আলামিন১০৪ বলেছেন: পিচ্চি হান্নান ২০০৪ সালে র‌্যাবের গুলিতে নিহত হয় মিথ্যা ছাড়ুস, ভালা হয়া যান @ প্রহররাজা

৩. ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:৩৬

প্রহররাজা বলেছেন: @আলামিন১০৪: ওটা পিচ্চি হেলাল হবে, আজকের ইত্তেফাক দেখেন, রিজেন্ট এর শাহেদ সহ পুরানো শীর্ষ সন্ত্রাসী রা মুক্তি পাচ্ছে। আমেরিকা বাংলাদেশ ভ্রমণে রেড এলার্ট দিসে। আন্দোলন কিসের জন্য হলো সব পরিষ্কার হচ্ছে।

৪. ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

কামাল১৮ বলেছেন: বিপ্লব সফল হবার জন্য একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক সংগঠন লাগে।এখানে যেটা হয়েছে,সরকারের অপশাসনের জন্য জনগন এই সরকারের উপর ক্ষিপ্ত ছিলো,সেই সাথে যুক্ত ছিলো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র।যেই ষড়যন্ত্রের ফলে আর্মি নিষ্ক্রিয় ছিলো।সাফল্য ধরে রাখতে হলে সাবধানে পা ফেলতে হবে।নানামুখি শক্তি এখানে ক্রিয়াশীল।

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলমানেরা ভাগ্যন্নোয়নের জন্য পশ্চিমে গিয়ে, পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করে ধর্মের নামে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২০



এখন পশ্চিম চাহে যে, মুসলমানেরা যেন "ভাগ্যান্নষন"এর জন্য তাদের দেশে আর না যায়; কারণ, মুসলমানেরা পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে। একই আব্রাহামিক ধর্মের লোকজন হলেও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অতঃপর সচিবালয়ের সেই পুড়ে যাওয়া কুকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:০০




সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আর পাল্টাপাল্টি দোষারোপের কারণে তদন্ত রিপোর্টে কী উঠে আসে সেটি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ ছিল অনেকের। দুই দিকের আলাদা কক্ষে আগুন লাগা, কুকুরের মৃতদেহ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭২-এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র ২০২৪-এর অর্জন না

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৩৯


৭২-এর রক্তস্নাত সংবিধান বাতিল করে । নিজেদের আদর্শের সংবিধান রচনা করতে চায় এরা‼️বাংলাদেশের পতাকা বদলে দিতে চায়! বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ভালো লাগেনা এদের!জাতিয় শ্লোগানে গায়ে ফোস্কা পরা প্রজন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্টেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়েও ছিল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্টেই ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়, হোটেল এমনকি ব্যক্তিগত বাড়িতেও ছিল। আপনারা শুধু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০০

প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ায় এখন আর কেউ নিজের মতো হতে চাই না, হতে চাই বিশ্ববরেণ্যদের মতো। শিশুকাল থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। সব ছাত্রদের মাথায় জিপিএ ৫, গোল্ডেন পেতে হবে! সবাইকেই ডাক্তার,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×