যেদিন তোমায় প্রথম দেখি সেদিনি আমার খুব ভালো লেগে গিয়েছিল । খুবই সুদর্শন তুমি দেখতে । মাথায় এলোমেলো কোকড়ানো চুল । অপূর্ব । ইশ , দেখলেই হাত বুলিয়ে দিতে ইচ্ছে হতো । আর তোমার হাসিটা এতো মিষ্টি ! মুগ্ধতা নিয়ে চেয়ে থাকতাম । তোমার অসাধারণ চাহনী দেখে আমার মন আলোড়িত হতো । যখন চোখে রোদ চশমা লাগিয়ে হেঁটে যেতে কি যে চমৎকার লাগত । আড়চোখে অপলক চেয়ে রইতাম । হৃদয়ে উথাল পাতাল ঝড় বয়ে যেত । তুমি বুঝতেই পারতেনা । সেদিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম , আমি তোমার হবো । তোমায় নিজের মতো করে পাবো ।
বসন্তের কোন এক মায়াবী জোছনা রাতে ঠিকই তোমার ঘরে ওঠে এলাম । দেয়ালে নীল ডিসটেম্পার করা রূম। ট্যাবল ল্যাম্পের হালকা আলোয় আলো-আধারি অদ্ভুদ পরিবেশ । আমার এত্তো পছন্দ হলো । দখিনের জানালা দিয়ে ভেসে আসা মিষ্টি বাতাসের সাথে কাঁঠাল চাপা আর হাস্নাহেনার গন্ধে ঘর মৌ মৌ করছিল । যেন বাসর ঘরে ফুলের সৌরভ ! আজ যে আমার বাসর । আমার শত জনমের স্বপ্ন। আজ তুমি শুধুই আমার । তোমাকে ভালোবেসে আজ আমার সব কিছু উজাড় করে দেব । আদরে আদরে ভরিয়ে দেব । সারারাত গুণগুনিয়ে গান শুনাবো ।
সারাদিনের ব্যস্ততায় হয়তো ক্লান্ত ছিলে । তাই আমার দিকে তেমন নজর দিতে পারোনি । আমি এক কাণে জড়সড় হয়ে বসে রইলাম । আর মনে মনে তোমায় চাইছিলাম । কখন একটু সময় তোমার হবে। আর আমি চুমোতে চুমোতে তোমার সমস্ত অঙ্গে ঘুড়ে বেড়াবো ।
রাত গভীর হলো একসময় । নীরব রাত আরো নির্জনতায় ছেয়ে গেল । নিস্তব্ধতা ভেদ করে দূরে কোথাও হতে মাঝে মাঝে পেঁচার ডাক ভেসে আসছে । তুমিও ঘুমিয়ে পড়লে একসময় । আমাকে একা রেখে ঘুমোতে দেখে কি যে কষ্ট হলো । তবুও মন খারাপ করিনি । সত্যিই তোমাকে ভালোবাসি বলে । তাইতো সাহস করে ঘুমন্ত তোমার কাছে এগিয়ে গেলাম । আলতো করে তোমার মুখে একটা চুমো খেলাম । তুমি বোধহয় একটু নড়ে ওঠলে । আমি সাহস পেয়ে তোমার কানের কাছে গুন গুন করে গান শুনাতে লাগলাম । তুমিতো গান শুনতে খুব পছন্দ করতে। মাঝে মাঝে তোমার বুকে হাতে পায়ে চুমোর স্পর্শ দিয়ে ভরিয়ে দিতে লাগলাম । আমার ঠোঁটের উষ্ণ স্পর্শ পেয়ে তুমি কেঁপে কেঁপে ওঠছিলে ।
হঠাৎ কি যে হলো । প্রচন্ড বেগে আমাকে চড় মেরে বসলে । তোমার আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে কোনভাবে গলে বেড়িয়ে আসতে পারলাম । মশা হয়েছি বলেই কি আমাকে এতো নির্দয় ভাবে চড় মারতে পারলে ? মশাদের কি ভালোবাসতে নেই ?