শিকারী রাইফেলটা হাতে তুলে নিলেন। ট্রিগারে চাপ দিতে যাবেন, হঠাত বাঘটা বলে উঠল, ওয়েইট।
শিকারী অবাক হয়ে গেলেন। বাঘটা কি তাহলে মরার আগে ফাইনাল স্পিচ দিতে চায়?
-কি চাস? শিকারী গম্ভীর কন্ঠে জানতে চান।
-তোমার কাছে বন্দুক আছে। একটা নিরস্ত্র প্রানীকে বন্দুক দিয়ে মেরে বাহাদুর হতে চাও??
-তো কি চাস?
-সাহস থাকেতো খালি হাতে আমার সাথে লড়াই কর। বিজয়ী হয়ে এরপর নিজেকে বীর বলে দাবি কর।
-আমার ধারাল দাত বা নখ কোনটাই নেই। তোর মত জোরে ছুটতেও পারি না। তাহলে খালি হাতে জিতব কি করে?
-তার মানে প্রকৃতিই তোমাকে শিকার হওয়ার জন্য তৈরী করেছে, শিকার করার জন্য নয়। তাহলে কে তোমাকে অস্ত্র হাতে শিকারীর ওই মাচায় বসার অধিকার দিয়েছে?
-আমার অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদ।
গল্প: অস্তিত্ব
০৮.১১.১৭
অবশেষে বাঘটা ধরে ফেলল হরিণটাকে।
-সেই কখন থেকে ছুটিয়ে বেড়াচ্ছিস।এইবার তোকে পেয়েছি।এখনি তোর ঘাড় মটকাব।
-প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও।আমি মরতে চাই না।
-তোকে ছেড়ে দিলে খাব কি?
-যদি আমাকে ছেড়ে দাও তবে কথা দিচ্ছি প্রতিদিন আমার একটা করে জাতভাইকে ধোঁকা দিয়ে তোমার গুহায় নিয়ে আসব।খাবারের কোন অভাব হবে না তোমার।
-যে নিজের জাতভাইদের সাথে বেঈমানি করবে তাকে আমি ভিনজাত বিশ্বাস করি কি করে? বলেই হরিণের ঘাড় মটকে দিল বাঘটা।
গল্প: বিশ্বাস
০৮.১১.১৭
বাঘটা ঘুমিয়ে ছিল। হঠাত চোখ মেলে দেখে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটা তরুণ হরিণ।
-তোর সাহসের তারিফ করতে হয়।হরিণ হয়ে নিজ থেকেই বাঘের ডেরায় ঢুকেছিস!! শিকার হওয়ার খুব শখ বুঝি?
-আজ শিকার হবে, তবে আমার না, তোর। চেয়ে দেখ।
গুহা মুখে অস্ত্র হাতে শিকারীর ছায়া দেখতে পায় বাঘ।
-শিকারীকে পথ দেখিয়ে নিয়ে এসেছিস বুঝি?
-হ্যা, তুই আমার বাবাকে মেরেছিলি। আজ হিসাব পুরো করার পালা।
হঠাত করেই হো হো করে গুহা কাপিয়ে হাসতে শুরু করে বাঘ।
-হাসছিস কেন? অবাক হয়ে জানতে চায় হরিণ।
-সেটাই যদি বুঝতি, তাহলে আর ঘাস খাওয়া হরিণ থাকতি না, বনের রাজা বাঘ হয়ে যেতি।
হরিণ অবাক হয়ে চেয়ে থাকে। ইতিমধ্যেই গুহায় শিকারী ঢুকে পড়েছে। তার ট্রিগারের এক চাপেই থেমে যায় বাঘের আত্মা কাঁপানো হাসি।
প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হরিণ আনন্দে নেচে ওঠে। তখনও সে বুঝতে পারেনি শিকারীর রাইফেলটা তার দিকেই তাক করা। যখন বুঝতে পারে, তখন বড্ড দেরী হয়ে গেছে।
-কিন্তু... কিন্তু... আমি তোমাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে এসেছি।
-তা এনেছিস। তবে ভুলে গিয়েছিলি শিকারী শুধু বাঘ না, হরিণও শিকার করে।
গল্প: জিঘাংসা
০৮.১১.১৭
চোখ খুলে অবাক হয়ে যান মতিন মাস্টার। বুঝতে পারেন না ভয়ে মারা যাবেন, নাকি তার আগেই ঘাড়টা মটকে যাবে।তার সামনে একটা বাঘ বসে আছে।
-ভয় পাবেন না মাস্টার সাহেব। আমি আপনাকে শিকার করতে আসিনি।
-তবে... কি জন্য এসেছ?
-আমি এসেছি একটা আবদার নিয়ে।আমি লেখাপড়া শিখতে চাই।
-বাঘ হয়ে পড়ালেখা!!! কিন্তু কেন?
-আমরা যদি লিখতে না শিখি, তাহলে জিম করবেটরা যে চিরকাল "নায়ক" থেকে যাবে।
গল্প: নায়ক
০৮.১১.১৭
===============================================================
সিরিজের আগের পর্বসমূহঃ
পরমাণু গল্পসমগ্র-১
পরমাণু গল্পসমগ্র-২
পরমাণু গল্পসমগ্র-৩
পরমাণু গল্পসমগ্র-৪
পরমাণু গল্পসমগ্র-৫
পরমাণু গল্পসমগ্র-৬
পরমাণু গল্পসমগ্র-৭
পরমাণু গল্পসমগ্র-৮
পরমাণু গল্পসমগ্র-৯
পরমাণু গল্পসমগ্র-১০
পরমাণু গল্পসমগ্র-১১
পরমাণু গল্পসমগ্র-১২
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০২