S.S.C, H.S.C লেভেলে বাংলা নামক বিষয়টা পড়তে বেশিরভাগ ছাত্রেরই তেমন আগ্রহ থাকে না । বাংলা পড়ার সময় হলেই সবার মনোভাব থাকে এরকম, “মুখস্তকে না বলুন” :-* । তারপরও পরীক্ষায় পাশ করার জন্য অনিচ্ছাসত্বেও বাংলা পড়া ছাড়া উপায় থাকে না । তবে এই ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পর্যায়ে objective থাকার কারণে বাংলা এখানে তূলনামূলকভাবে কম বিরক্তিকর / । অদ্ভূত-অদ্ভূত কিছু অবজেকটিভের দেখা মিলত মাঝে মাঝে । যেমন- ‘স্বাধীনতা তুমি’ কবিতাটিতে ‘স্বাধীনতা তুমি’ কয়বার উচ্চারণ করা হয়েছে? ক। ১৩ বার খ। ১৮ বার গ। ১৯ বার ঘ। ১বার......২বার......৩বার......এভাবে ১৪ বার । (লাস্ট অপশনের ব্যাপারে একটু ফাইজলামির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে, তবে এইরকম প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার ব্যাপারটা বানানো না, ইহা অতীব সত্য ) ও ভাল কথা, উত্তরটা হবে ১৯বার ।
ক্লাস ৯-১০এ প্রমথ চৌধুরীর একটা প্রবন্ধ পাঠ্য ছিল, নাম ‘বই পড়া’ । ঐ প্রবন্ধে বই পড়ার ব্যাপারে খুব ভাল ভাল কথা বলা হয়েছিল । প্রমথ চৌধুরী মুখস্তবিদ্যকে বাজিকরের গুলি গেলার সাথে তূলনা করেছিলেন । শিক্ষার্থীরা গুরুপ্রদত্ত নোট পড়ে পরিক্ষার খাতায় তা উগড়ে দিয়ে আসত । বইয়ে লেখা ছিল, এটা আসলে প্রমথ চৌধুরীর একটা ভাষণ( প্রচলিত অর্থে প্রবন্ধ নয় )। এই নির্দোষ ভাষণটাকে প্রবন্ধ বানিয়ে এই মুখস্তবিরোধী ভাষণ থেকে আমাদের মুখস্ত করতে বাধ্য করা হয়েছে(। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে কোন লেখককে এভাবে অপদস্থ করার দৃষ্টান্ত খুবই কম আছে বলে আমার ধারণা। জানি না বাংলা বই যারা সংকলন করেন তারা নিজেদেরকে বাংলা সিনেমার নায়ক মনে করেন কিনা, তা না হলে চৌধুরীকে সাইজ করার জন্য তারা এত উঠেপড়ে লাগবেন কেন?
S.S.C, H.S.C তে বাংলা সহপাঠ ছিল যথাক্রমে ‘হাজার বছর ধরে’ এবং ‘পদ্মানদীর মাঝি’ । কাক্তালীয় ভাবে ২টা উপন্যাসেই পরকিয়া একটা গুরত্বপুর্ণ অংশ দখল করেছে । এটা কি আসলেই কাকতালীয়, নাকি............ যাই হোক, অনেক বলিউডবোদ্ধা হয়ত ‘পদ্মানদীর মাঝি’ র সাথে ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’র মিল খুজে পেয়েছেন। এইসব থেকে যেন মানুষ ভালটাই গ্রহণ করে । নাহলে খবর খারাপ হওয়া বিচিত্র না ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫১