লেখার শুরুতে পাকিস্তানের পেশোয়ারস্হঃ আর্মি পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজের নারকীয় ঘটনায় নিহত ছোট্ট শিশুদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।
কেন এই ঘটনা ঘটলো। সাধারন বিশ্লেষনে যা দেখা যাচ্ছে, তা হলো পাকিস্তানের পোষা সাপ পাকিস্তানকেই দংশন করেছে। আফগানিস্তানকে স্ট্রাটেজিক ডেপ্থ হিসেবে ব্যবহার করে উগ্রপন্হীদের মাধ্যমে ভারতের উপর প্রভাব বিস্তারের কৌশল যে বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে তা হয়ত পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করতে পারেনি। পরবর্তীতে ৯/১১ এর পট পরিবর্তনের পরে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ মার্কিন চাপে পড়ে তালেবানদের বিরুদ্ধে পরিচালিত মার্কিন সামরিক অভিযানে নিজেদের ভূ-খন্ডকে কোয়ালিশন ফোর্সের লজিস্টিক রুট হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দিলে আফগান সীমান্তবর্তী ওয়াজিরিস্তানের অধিবাসীরা সাংস্কৃতিক বিষয়ে আফগানদের সাথে মিল থাকায় তালেবানদের প্রতি সহানুভূতিশীল বিধায় নাখোশ হয়। ফলে তারা পাকিস্তানের ভূমিতে পাকিস্তানের উপর হামলা শুরু করে। পরবর্তীতে নানা ঘটনা প্রবাহের পরে পাক সামরিক বাহিনী ওয়াজিরিস্তানে "অপারেশন জারব-ই-আজব" নামক ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। পেশোয়ারে যে ঘটনা ঘটেছে তা তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের ভাষ্যমতে পাক সামরিক হামলার প্রতিশোধ।
আমাদের দেশে পাকিস্তানের মত ব্যাপক ব্যাপ্তিতে উগ্রপন্হার বিস্তার ঘটেনি সত্য। পাকিস্তানে যে নারকীয় ঘটনা ঘটে গেল তা যে আমাদের দেশে ঘটবে না তার নিশ্চয়তা মনে হয় কেউ দিতে পারবে না।
একজন মানুষের ভেতরের রাগ, ক্ষোভ প্রশমনের জন্য ভেন্টিলেশন খুব জরুরী। মনোবিজ্ঞানীরা হয়ত আমার সাথে একমত হবেন যে অধিকাংশ প্রতিশোধপরায়নতা/প্রতিহিংসার পেছনে ভেন্টিলেশন এর অভাব কাজ করে থাকে। পাঠকরাও খেয়াল করে দেখবেন যে আপনার প্রচন্ড ক্ষোভের কোন কারণ যদি আপনার আপনজন/বন্ধুদের সাথে ভাগ করেন, ক্ষোভ অনেকটাই প্রশমিত হয়। আর যার কারনে আপনার ক্ষোভ, তাকে বলতে পারলে ক্ষোভ অনেকটা নিঃশেষ হয়ে যায়।
আপনি যখন আপনার প্রতিপক্ষের কথা সহমর্মিতা এবং সহনশীলতার সাথে শুনবেন, আপনার প্রতিপক্ষের মনেও আপনার প্রতি সম্মান জন্মাবে। আর আপনি যদি তার কথা না শোনেন, আপনার প্রতিপক্ষ কিছু বললেই তাকে ভারতীয় দালাল, রাজাকার, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি ইত্যাদি নামে অভিহিত করেন, নিশ্চিত থাকুন আপনি আপনার ক্ষতিকেই নিমন্ত্রন করছেন।
আপনার প্রতিপক্ষকে বলতে দিন, তার ক্ষোভ ভেন্টিলেট করতে দিন, সহনশীলতার সাথে তার কথা শুনুন এবং সুন্দরভাবে আপনার যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করুন। ইনশা-আল্লাহ দেখবেন, আমাদের দেশে পাকিস্তানের মত ঘটনা ঘটবে না।