রাজাকার হবার কিছু শ্রেষ্ট উপায়
যদি আপনার বয়স ৪০ বছরের কম ও হয় আর আপনি রাজাকারের খাতায় নাম লিখাতে চান তাহলে নিম্ন লিখিত কাজ গুলো করে যান।
১. আপনি বলুন ফারাক্কা বাঁধের কারনে বাংলাদেশের একাংশ মরুভুমিতে পরিনত হচ্ছে, অতএব এ বাঁধের ব্যাপারে জাতিসংঘে প্রতিবাদ জানাতে হবে। ব্যাস, আপনার মধ্যে তরুন রাজাকারের একটি গুণ জন্ম নিলো।
২. পার্বত্য অঞ্চলের “শান্তি বাহিনী” ভারতের সেনাবাহিনী দ্বারা প্রশিক্ষিত হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ধ্বংশ যজ্ঞ চালিয়েছে এবং চালাচ্ছে। আপনি ভারতের এসব কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করুন। আপনি অটোম্যাটিক্যালি নব্য রাজাকার হয়ে যাবেন।
৩. দীর্ঘদিন বাংলাদেশের সীমান্তবর্তি একটি দ্বীপ “তালপট্টি দ্বীপ” ভারতীয় সেনাবাহিনী দ্বারা অধিকৃত। সেখানে আজো বাংলাদেশী পতাকার স্থলে ভারতীয় পতাকা ওড়ে। একজন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আপনি ওই ভুখন্ডের দাবীকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতে বলুন। খুব সহজে ইয়াং রাজাকার হয়ে যাবেন।
৪. পশ্চিমবঙ্গে অনেক দিন ধরে সেখানকার রাষ্ট্রিয় সহযোগিতায় একটি “বঙ্গভুমি আন্দোলন” নামে একটি আন্দোলন জমিয়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। যাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় ছয়টি জেলা নিয়ে একটি তথাকথিত স্বাধীন বঙ্গভুমি প্রতিষ্টা করা। এ ব্যাপারে ওখানকার আর বাংলাদেশের পত্র পত্রিকায় অনেক লেখা লেখি ও হয়েছে। আপনি ভারতের ওসব ন্যক্কারজনক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করুন। আপনি অটোম্যাটিক্যালি আজকের রাজাকার হয়ে যাবেন।
৫. ভারত চায় ৫২টি যৌথনদীর উপরে বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশকে মরুভুমি বানাতে। সে পরিকল্পনা অনুসারে তারা পদ্মার উপরে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে। তারা এবার চাচ্ছে সুরমা কুশিয়ারার মুল স্রোতের উৎস বরাক নদীর উপরে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ করতে। তারা আরো পরিকল্পনা চালাচ্ছে যমুনার উপরে ও একটা বাঁধ নির্মাণ করতে। আপনি টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন, প্রতিবাদ করুন, আন্দোলন করুন। আপনি অটোম্যাটিক্যালি রাজাকারের বাচ্চা রাজাকার।
৬. ১৯৯০ সনে ভারতীয় এক লেখক নীরদ সি চৌধুরী যে কিনা বাংলাদেশের অনেক দেশপ্রেমিক? লেখকের ভালো বন্দু, তিনি এক প্রবন্ধে বাংলাদেশকে তথাকথিত বাংলাদেশ লেখেন। তার দৃষ্টিতে ভারতের পরাধীন প্রদেশ পশ্চিম বাংলা নাকি আসল বাংলাদেশ। এখনো সেখানকার অনেক লেখক বাংলাদেশকে নিয়ে হেয় করে প্রবন্ধ নিবন্ধ বই লিখে যাচ্ছে। আপনি একজন বাংলাদেশী হিসেবে তার প্রতিবাদ করুন। ব্যাস আপনি একজন ইয়ং রাজাকার হয়ে গেলেন।
৭. ভারত চায় তার পুর্বাঞ্চলীয় সাতটি প্রদেশে সরাসরি যাতায়াত করার জন্য বাংলাদেশের কাছ থেকে একটি করিডোর। কখনো তার নাম দেয়া হয় ভারত বাংলাদেশ ট্রানজিট, আবার কখনো বলা হয় এশিয়ান হাইওয়ে যেটা নাকি শুধুমাত্র ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে বদ্ধ থাকবে অর্থাৎ ভারত থেকে ঢুকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে আবার ভারতেই প্রবেশ করবে। সবাই জানে এটা কোন এশিয়ান হাইওয়ে নয় ভারতের জন্য একটা করিডোর মাত্র। কারন এই রুট টা সরাসরি কোন তৃতীয় দেশেরে সাথে যুক্ত করছেনা। আপনি একজন তরুন বাংলাদেশী হিসেবে তার প্রতিবাদ করুন। ইয়াং রাজাকার হতে আর টেকায় কে
৮. ভারত প্রতিদিন সীমান্তে পাখি শিকারের মতো বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা করছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হত্যা করার পর সীমান্তের ওপাড়ে নিহতদের লাশ ও নিয়ে যাচ্ছে। আপনি একজন বাংলাদেশী হিসেবে ওইসব হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করুন। নতুন প্রজন্মের রাজাকার হতে কোন বেগ পেতে হবেনা।
(আর লিখতে পারছিনা পরবর্তিতে লিখার আশা রাখি)
আমরা চাইনা ভাঁড়ত আর ফাকিস্তানের দালাল হতে। আমরা চাই মাতৃভুমি বাংলাদেশের দালাল হয়ে বেঁচে থাকতে আর একজন বাংলাদেশী হয়ে মরতে। সেই সুযোগ টুকুই আমাদের দেয়া হোক।
আমি জানি না একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমি এই লেখা লিখার স্বাধীনতা রাখি কিনা। তবুও লিখলাম, সবাই বাক স্বাধীনতা আর লেখার স্বাধীনতা ধারন করে বলে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৩