মানুষ দেখলে সরে দাঁড়ানো, পথ ছেড়ে দিয়ে সামনে থেকে আসতে থাকা মানুষটাকে যেতে দেয়া, এসবই পারফেক্ট শহুরে শুকনা দিনের ফরমালিটি। সামান্য কাদামাখা রাস্তাতেই তাই ভদ্রতার যথেষ্ট অভাব দেখা যায়।
কবিরা বলেন মানুষকে নাকি পুরোপুরি ভাবে চেনা যায় শুধুমাত্র তাঁর বন্ধ ঘরে, যখন সে একা।
আমি বলি মানুষকে চেনার জন্য তাঁকে বলাকার বাসগুলায় উঠার জন্য লাইনে দাঁড় করায় দেয়াটা যথেষ্ট।
সবারই অনেক বেশি তাড়া। কে কাকে আশা দেবে? কে কাকে ভরসা দেবে? সিরাজউদ্দৌলাহ বাঙালীর এই রূপ দেখে আরও একবার বলে ফেলতেন, "অভাগা বাঙালী"।
তাড়া থাকাটা কিন্তু সমস্যা না। সমস্যা হইল, যাঁদের এত বেশি তাড়া, বলাকার বাসে উঠাটা তাঁদের জন্য কিভাবে উপকারে আসতে পারে, আমি শিওর না।
সময়ের মূল্য অনেক। কথায় আছে,
"Time and tide wait for none."
শুধু বলাকার বাসগুলা এই কথাটা বুঝল না, they wait for everyone!!! যেখানেই মানুষ দেখা যায়, যেন সেখানেই তাদের বাসস্টপ।
(গাড়িগুলারে অলরেডি তাঁরা "বামে প্লাস্টিক" বইলা ভুল করে। কবে জানি রাস্তায় দাঁড়ায় থাকা মানুষগুলারে ম্যানিকুইন ভাইবা তুইলা নিয়ে আসে.....)
প্রত্যেকটা সিট ভর্তি থাকা বাসে ঠিকঠাক পা রেখে দাঁড়াতে পারলেই নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। পাশ দিয়ে চলে যাওয়া গাড়িগুলোর দিকে সবগুলো মানুষই তাকিয়ে থাকে। মধ্যবিত্তের চিরকালের ইন্সপিরেশন, একদিন নিজের গাড়ি হবে, থাকার একটা বাড়ি হবে। সেই আশায় আশায় বাসের হ্যান্ডেলে ঝুলে থেকে কেটে যায় জীবন। মধ্যবিত্ত হয়ে জন্মানোটা এক আজিব ধরণের পাপ। একে খুব খারাপ বলে অভিশাপও দেয়া যায় না, আবার খুব ভালো ভেবে সুখেও থাকা যায় না........