ইউনিফর্মের প্যান্টের পকেটে ১০ টাকা পাওয়া গেছে। নীল জিন্সটায় মোটামুটি ২৭ টাকা, কালো জিন্সটায় আরো ২০ পাওয়া গেছে। সাথে শার্টের পকেটে থাকা ১০, আর মানিব্যাগের ২০। সব মিলায় ৮৭ টাকা।
নিজ দায়িত্বে ৮৭ টাকা থাকার পরেও সারাদিন ধইরা নিজেরে ফকির লাগতেছিল। হাঁইটে চলার জন্য ৮৭ টাকা বেশ হেলদি একটা এমাউন্ট। স্পেশালী যখন টাকাটা খরচ করার কোনো প্রয়োজনই নাই।
ওভারব্রিজের উপরে যেয়ে বসি।
"আজকাল সারাদিন তরে ওভারব্রিজের উপর দেখা যায় ক্যান? ওভারব্রিজে নতুন ডেটিং-স্পট বানাইছস নাকি? ব্রিজে যাইবি না।" গত কয়েকদিনে খাওয়া সমস্ত ধমকের সারমর্ম এই কয়টা লাইন। সরকার মানুষেরে ঠেলায়-ধাক্কায় ওভারব্রিজে নিতে পারতেছে না, আমাকে কিনা ধমক খাইতে হইতেছে ওভারব্রিজে যাইবার কারণে।
ব্রিজের সামনেই একটা দোকানে চা বানায়। হেব্বি চা!! তবে চায়ের কাপটা হাতে নিলেই এলাকার লোকজনের ভেতরের রাজনীতিবিদ জেগে উঠে মেবি। অমন চিল্লাচিল্লিতে কেমনে তাঁরা চায়ের মজা পান, আমি বুঝি না। আমি ব্রিজের উপরে উইঠে খাই। চাচা কিছু কয় না। বড় ভালো মানুষ!!!
ব্রিজের উপরের মানুষগুলা এতটা ভালো না। তাঁদের মেন্টালিটি হইল, "টাকা-ওয়ালা মানুষেরা ওভারব্রিজের উপর দিয়া হাঁটবে। বসে থাকবে তারাই, যাদের টাকা-পয়সার অভাব। তারা বইসা বইসা ভিক্ষা করবে।" তাই সিঁড়ির উপর বসে চা খাইতে দেখলে তারা "পোলায় পাগল হইয়া গেছে"-টাইপ একটা লুক প্রদর্শন করে।
পিচ্চি বাচ্চাকাচ্চা পাইলে আমিও দুই-একটা শয়তানি করি। পিচ্চিগুলা হাসে, তাদের বাপ-মা বিরক্ত হয়। নিজের সন্তানের হাসিমুখ দেখে কেন তার বাবা-মা বিরক্ত হবে? আমার মাথায় ঢোকে না।
চায়ের দাম ৬ টাকা। বাকি আছে আরও ৮১। এক ভাইয়ার ওয়াই-ফাই ব্যাবহার করি মাঝে মাঝে। ইনিও বড় ভালো মানুষ। উনাকেও এককাপ চা খাওয়ানো দরকার।
9gag, বা এই টাইপের পেজে মাঝে মাঝে এক ধরণের পোস্ট হয়। তাঁদের মতে, "খুব ভালো ধরণের কম্পিউটার আর আনলিমিটেড ওয়াই-ফাই পাইলে তাঁদের আর গার্লফ্রেন্ড লাগবে না।" এই ভাইয়ার ওয়াই-ফাই আছে, খুব সুন্দরী টাইপের একটা গার্লফ্রেন্ডও আছে। আমার সন্দেহ, ভাইয়ার কম্পিউটারটা ভালো না!
আমি আমার কম্পিউটার নিয়া যথেষ্টই সন্তুষ্ট। ভাইয়ার ওয়াই-ফাই দিয়েও আমার দিব্যি চলে যায়। ভাগ্যে মনে হয় গার্লফ্রেন্ড নাই!
গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি নামছে। কাউকে সাথে নিয়ে ভিজতে পারলে ভালো লাগত। যাক, একা ভেজাটাও খারাপ না। আমি, আর আমার অবশিষ্ট ৮১ টাকা..........