সকাল সকাল বাসে উঠেছেন। সকালবেলার বাস, পুরো ভর্তি! নানান কিসিমের মানুষ দেখা যায় ঐ সকালবেলার বাসে। কেউ এই সকাল সকালই ফোনে গালিগালাজ শুরু করে দিয়েছে, কেউ আবার একদম চুপচাপ; কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনছে। কেউ এই শীতেও দরদর করে ঘামছে। কেউ আবার সোয়েটার গায়ে রীতিমত কাঁপছে, তারপরও তিনি জানালার পাশেই বসবেন এবং জানালাটাও খুলে রাখবেন! আজব!!!
এদের মধ্যে একটা জিনিস কিন্তু কমন। সবাই জীবিকার খোঁজে ছুটছে, সবাই বেঁচে থাকতে চায়।
আপনার নিজের কথা মনে পড়ে। আপনি না মরে যেতে চেয়েছিলেন?
হাসপাতালে বসে আছেন আপনি। কেন, সেটা আরেকদিনের গল্প। চারপাশে মানুষ কম নেই। কেউ হাত ভেঙে বসে আছে, কেউবা কাশতে কাশতে ক্লান্ত। আছে মা-বাবার আদরের দশ বছরের ছেলেটা, আছেন ছেলের সাথে আসা সত্তর পেরোনো বৃদ্ধাও।
এদের মধ্যে কিন্তু একটা জিনিস কমন। এরা সবাইই বেঁচে থাকতে চান।
আপনার নিজের কথা মনে পড়ে, আপনি না মরে যেতে চেয়েছিলেন?
রাস্তায় ভিড় বেড়েছে। বাহারি মানুষের অভাব কই রাস্তায়? কেউ পপকর্নের প্যাকেট বিক্রি করছে, কেউ বা সুবাসিত সুন্দর গোলাপ ফুল। কেউ আবার এতটাই নিঃস্ব, বিক্রি করার কিছুই তার বেঁচে নেই। আপনার দয়ার আশায় হাত পেতে আছে।
এদের সবার মাঝে কিন্তু একটা জিনিস কমন। এরা টাকা চায়, এদের টাকার দরকার। বেঁচে থাকার জন্য টাকা চাই যে! এরা সবাই বেঁচে থাকতে চায়।
আপনার কখনো মরে যেতে ইচ্ছা করেছে? করেছে হয়ত, করার কথা। সবারই করে!
ওভারব্রিজ-এর উপরে উঠে ব্যস্ত রাস্তাটার দিকে তাকালেন আপনি। কেউ থেমে আছে, কেউ ছুটছে। শহরের পথে পথে, অলিতে-গলিতে মানুষ। হাসছে, কাঁদছে; খেলছে, ভুলছে।
বেঁচে আছে!
কঠিন জীবনটা কারো আরেকটু কঠিন হয়ে গেল হয়ত। সে হয়ত টেরও পেল না। অথবা টের পেয়েও বুঝতে দিল না। সেও তো বেঁচে থাকতে চায়। একটু হাসি দিয়েই হয়ত তাই জীবনটা জোর করেই সহজ ভাবতে চেষ্টা করে!
আপনার নিজের কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে, আপনার হাসি পায়! আপনি না মরে যেতে চেয়েছিলেন..........?