সমস্ত আবাল পুলিশ অফিসারের দায় ভোগ করতে হলো বাবুল আক্তারের মতো একজন সৎ, নির্ভিক পুলিশ কর্মকর্তাকে। চাপাতিওয়ালারা ঠিকই তাদের শত্রুকে চিহ্নিত করতে পেরেছিল। একজন বাবুল আক্তারের বুকটা ভেঙ্গে দিতে ও তার নাবালক সন্তানদের মা-হারা করতে চাপাতি জঙ্গিরা তার স্ত্রী মাহমুদা খানমকে খুন করে। এর আগে একই কৌশলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সহ ব্লগারদেরও প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছিল।কিন্তু পুলিশ প্রশাসন সবগুলো হত্যাকাণ্ডে বারংবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অনেক সময় ওই হত্যাকাণ্ডগুলোকে বিছিন্ন ও উত্তর বাড়ির ঘটনা বলে অবহেলাও করেছেন পুলিশের উর্দ্ধতন অফিসাররা। কিন্তু এবার তারাই টার্গেটে পরিণত হয়েছেন। আগুন যখন লাগে দেবালয়ও পুড়ে।
তবে বাবুল আক্তার অন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের মতো নয়। তিনি একজন চৌকস, দ্বিমুখীমননের অধিকারি পুলিশ অফিসার। চট্টগ্রামে জঙ্গিবাদি শক্তি দমনে উচ্চকণ্ঠ ওয়াচডগ তিনি। আম জনতা, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকবান্ধব একজন নিবেদিতপ্রাণ মানুষ। চট্টগ্রামে ‘দৈনিক আমাদের সময়ে’ সাংবাদিকতাকালিন সময়ে বাবুল ভাইয়ের সঙ্গে মেশার সুযোগ হয়েছিল। মেধাবী এ পুলিশ অফিসার খুব সহজেই অপরাধি শনাক্ত করতে সক্ষম। বন্দরনগরীতে মা-মেয়ে খুনের ঘটনা সহ অনেক ভয়াবহ নিউজ সংগ্রহে তার সঙ্গে ছিলাম। নিজে গাড়ি চালিয়ে সাংবাদিকদের অকুস্থলে নিয়ে যেতেন। সিএমপি্ এর ডিবি কার্যালয়ে গেলে প্রায়শই গল্প করতেন। সেসব গল্পজুড়ে থাকতো তার দুই সন্তানের নানা বিষয়আশয়। আজ প্রিয় দুটি সন্তান তাদের মা হারিয়ে অসহায়। তাদের বাবা প্রিয়তমকে হারিয়ে নির্বাক। এমন পরিস্থিতিতে বাবুল ভাইকে সান্তনা দেয়ার ভাষা জানা নেই। তবে আশা করি, খুব দ্রুতই তিনি এ শোককে শক্তিতে পরিণত করে জঙ্গিবাদ দমনে সর্বোপরি একটি মুক্ত সমাজ বিনির্মাণে আরো সাহসী হবেন। আর অন্যপুলিশ অফিসারদের মাঝেও তার এ গুণ ছড়িয়ে দিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১১:২৯