জাতীয় প্রেসক্লাবে এসএ গেমসের সাঁতারে স্বর্ণজয়ী শিলার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বলা কিছু কথা.. #
যতদূর জানি শিলার শুরুটাও ছিল প্রতিভাদীপ্ত। তার মধ্যে আগুন ছিল, শুধু দরকার ছিলো জ্বলে উঠার মতো একটুখানি বারুদের। একটু সুযোগ পেলে শিলা যে কি অসাধ্য সাধন করে ফেলতে পারে, সম্প্রতি সাঁতারে তার স্বর্ণজয়ের রেকর্ডই সেটা প্রমাণ করে। শিলা এখন দেশে জলকন্যা খ্যাতি পেয়েছে। তিনি দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে সোনালি ইতিহাসের জনক। আর আমাদের ভালো লাগে শিলা আমাদের বোন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের জলে জ্বলে উঠা নক্ষত্র। তাই মনে হয়, শিলা যখন সাঁতারের ট্রাকে দুহাত প্রসারিত করে ক্ষীপ্র বেগে সামনে আগায়, তখন সে সাফল্যে আমরাও তার সঙ্গে ছুটে যাই। আর এ জলমানবী যখন সবাইকে ছাড়িয়ে সোনা জিতে যায়, তখন মনে হয় আমরাও জিতে যাই। সেই সঙ্গে উল্লাস করে পুরো জাতি, ফুলঝুরি ঝরে বিশ্বমিডিয়ায়।
দেশে বস্তুগত ও অবস্তুগত সংস্কৃতি ভেঙ্গে পড়ছে সর্বত্র দল ও ইজম মানসিকতা চর্চার দরুণ। তারুণ্য, শিক্ষা, কলকারখানা ও দেশপ্রেম কোথায় যেন একটা রাজনৈতিক ব্র্যান্ডিং হয়ে যাচ্ছে। তখন ব্যতিক্রম শুধু এ দেশের ক্রীড়া। দেশের ক্রীড়াক্ষেত্র এমন একটা অবস্থানে পৌঁছেছে যে, যেখানে সবুজের বুকে লাল মিলে মিশে একাকার। যে ভালোবাসার কথা বলতে গেলে দুচোখ বুজে আসে পরম সুখে তেমন ভালোবাসা অনুভূতি ঝরে এদেশের ক্রীড়ার জন্য। ভক্তকূলে এক্ষেত্রে কোনো জাত-পাত, লিঙ্গ, ধর্ম ও ভূসীমানা খুজে না। তাইতো শিলারা যখন ঢাকা, শ্রীলংকা কিংবা গোহাটি যেখানেই বিচরণ করে, তাদের সাফল্য কামনায় ষোলো কোটি মানুষও একটি স্বপ্ন পূরণের লড়াইয়ে দুহাত উর্ধ্বে বাড়ায়
এই যেমন গোহাটিতে এসএ গেমসে শিলা যখন দক্ষিণ এশিয়ার অন্য বাঘা মেয়েদের হারিয়ে সাঁতারে হয়ে উঠলো জলপ্রতিভা, তখন পুরো দেশজুড়ে জনস্রোত বয়ে গিয়েছিল। টুইটুম্বর সে ভালেবাসা কেবল শিলারই জন্য। তার অবিস্মরণীয় এই জয়ে আমাদের ভালোবাসার কোনো শেষ নেই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতার বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন সিইউজেএডি সহ পুরো জাতির পক্ষ থেকে শিলাকে উষ্ণ অভিবাদন। সাঁতারে শিলার সমস্ত নৈপুণ্য ও দক্ষতা অটুট থাকুক। বেঁচে থাকুক পরিবার ও রাষ্ট্রকে ঘিরে শিলার সকল স্বপ্ন। যাপিত জীবনের চলমান অস্থিরতায় শিলা একটু প্রশান্তি হয়ে ফুটুক সবার হৃদয় গহীনে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩০