সময়ের পরিক্রমায় আমরা এখন জিলহজ মাসের সূচনায়। সারা বছরের অন্য দিনগুলোর তুলনায় এ মাসের প্রথম দশদিন আল্লাহ পাকের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ ও মহিমান্বিত দিন হিসেবে বিবেচিত।
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিলহজ মাসের প্রথম ৯ দিন রোজা এবং অন্যান্য আমলের প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন।
জিলহজ মাসে শুধু কুরবানী নয় বরং মাসের শুরু থেকে কুরবানীর দিন পর্যন্ত প্রতিটি প্রহর আল্লাহ পাক এ সুযোগ দিয়ে রেখেছেন। হাদীসের গ্রন্থসমুহে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, জিলহজের প্রথম দশদিনকে বছরের সর্বোত্তম দিন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
পবিত্র কুরআনে সূরা ফজরের প্রথমদিকের আয়াতে আল্লাহ পাক এ দশদিনের রাতের কসম করেছেন। এতেই এ দশদিন ও রাতগুলোর মর্যাদা প্রতীয়মান হয়।
বুখরী শরীফের বর্ণনায় সাহাবী হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম বর্ণনা করেছেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ পাকের কাছে এ দিনগুলোর আমলের মতো প্রিয় আর আমল নেই। কেউ আরয করলেন, জিহাদও নয় কি? তিনি বললেন, না, জিহাদও নয়। তবে ওই ব্যক্তির কথা ভিন্ন যে তার জান ও মালের সব কিছু নিয়ে জিহাদে বের হয়েছে এবং সে কিছুই নিয়ে ফিরে আসতে পারেনি।
আবু দাউদ এবং সুনানে তিরমিযীসহ আরও কয়েকটি হাদীস গ্রন্থ থেকে জানা যায় হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসের প্রথম নয়দিন, আশুরার দিন এবং প্রতি মাসে যে কোনো তিন দিন নিয়মিত রোজা রাখতেন।
কাজেই এ দিনগুলোতে একজন প্রকৃত মুসলমানরা তার প্রিয়নবী ) হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম . উনার অনুসরণ করে সাধ্যমত আল্লাহর ইবাদতে নিমগ্ন হতে পারেন। রোজা, নামাজ ও কুরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে এ সময়গুলো অতিবাহিত করলে তা পূণ্যের খাতায় অনেক বড় সঞ্চয় হিসেবে সুনিশ্চিত হয়ে থাকবে।
শুধু কুরবানীর দিনটি নয়, বরং অন্যান্য দিনগুলোও আল্লাহ পাকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, সে কথাও মনে রাখা উচিত। যারা নিশ্চিতভাবে কুরবানী করার ইচ্ছা পোষণ করেন, তাদের উচিত, কুরবানীর আগে এ দশদিন যেন নিজের চুল কিংবা নখ না কাটেন। মুসলিম শরীফের বর্ণনায় উম্মে সালামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম থেকে বর্ণিত, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা জিলহজের চাঁদ দেখবে এবং তোমরা কুরবানীর পশু জবেহ করার ব্যাপারে সুনিশ্চিত থাকবে, তখন তোমরা এ কয়দিন নিজেদের চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকবে। তবে এ নিষেধ হারামের পর্যায়ে নয়, বরং কেউ করলে তা মাকরুহ হবে বলে উলামায়ে কেরাম মত দিয়েছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২৯