অনুবাদঃ হাসনাত বিন জুবায়ের
সার্জেন্ট মোর্স তার অফিসকক্ষে বসে নাইট ডিউটি পালন করছিলেন।এমন সময় একটা কল আসলো।এক মহিলা ফোন করেছেন।মহিলা বিলি হার্ট নামক এক ব্যক্তির কথা জানতে চাইলেন।
‘স্পেশালিস্ট হার্ট?’মোর্স জানতে চাইলেন।‘তিনিতো এক সপ্তাহ আগেই ইরাকে চলে গেছেন’।
‘আপনি কি শিউর??প্রত্যুত্তরে মহিলা বললেন,’সেতো এ ব্যাপারে কিছুই জানিয়ে যায়নি’।
‘আমি একদম নিশ্চিত’
‘ওহ গড!এটা কি সংবাদ শুনলাম আমি’
‘কিন্তু......আপনি কে তা জানতে পারি??
‘আমি ওর বোন’।
‘আমি আপনাকে উনার ইমেলটা দিতে পারি।একটু অপেক্ষা করুন।আমি খুঁজে দিচ্ছি।
‘না।না।ঠিকাছে। আমার মতো আরো লোক হয়তো কল করার চেষ্টা করছে।আপনজনের খবর জানার জন্য তারাও হয়তো দুশ্চিন্তায় আছে।
‘এক মিনিটও লাগবেনা’
‘সে ঠিকাছে।তাহলে সে চলেই গেছে??
-হুম।যেকোন দরকারে ফোন করবেন নির্দ্বিধায়।যদি কোন সহায়তা করতে পারি’
ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মহিলা ফেলে ফোন রেখে দিলেন।
সার্জেন্ট মোর্স আবার কাগজপত্রের দিকে মনোযোগ দিলেন।কিন্তু বিলি হার্টের ব্যাপারটা তার মনে খচখচ করছিলো।তিনি উঠে দাঁড়ালেন।ওয়াটার কুলারটার সামনে গিয়ে এক গ্লাস পানি খেলেন।এরপর আরেক গ্লাস ভর্তি করে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে রইলেন।রাতের আবহাওয়াটা বেশ গরম আর কেমন যেনো গুমোট ধরানো।তখন যদিও মাত্র পৌনে এগারোটা বাজে।ব্যারাকটা বেশ নিরিবিলি।কিছু কিছু জানালা দিয়ে আলোর ছটা দেখা যাচ্ছিল।একটা ধূসর রঙের পোকা পর্দার আশেপাশে অস্বাভাবিকভাবে উড়াউড়ি করছিলো।
মোর্স বিলি হার্টকে তেমনভাবে চিনতেন না।কিন্তু তার খবর জানা ছিলো তার।হার্ট অ্যাশভিলের পাহাড়ী অঞ্চলের লোক।সে সবসময় তাড়াহুড়ো করে কাজ করতো। পোকার খেলতো আর নতুন লোকদের ঠকিয়ে উঠতি আয়ের ব্যবস্থা করতো।তাছাড়া তার ঘোড়ার গাড়ির ব্যবসাও ছিলো।এ সকল কাজের সাথে জড়িত থাকলেও তাকে কখনো পাকড়াও করা যায়নি।সে ভাবতো—কেউই কিছু জানেনা।এটা তার মুখের ছোট্ট হাসি দেখেই বুঝা যেতো।মাঝেমধ্যে সে ভুরিভোজ করতো।একা একাই।বিলি হার্টের মতোন লোকদের জন্য এখানে অনেক সুযোগ সুবিধা আছে।
সে দেখতে ছিলো সত্যিকারের সৈন্যদের মতোই।কিছুটা ইন্ডিয়ানদের মতোন চওড়া চিবুক আর গভীর কালো চোখের সুদর্শন বিলি হার্ট ছিলো বিড়ালের মতো শান্ত।সে হাঁটার সময় মনে হতো অবসন্ন কোন এক লোক অবজ্ঞাভরে কোন এক জায়গায় অনিচ্ছাসত্ত্বেও যাচ্ছে।সে পা ফেলতো বেশ আলগাভাবে।বিলির সামনে সবসময় আঁটোসাটো হয়ে থাকতো মোর্স।বিলির চোখ আর হালকা হাসি দেখে তার মনে হতো সে বুঝি তার গভীর পর্যবেক্ষন শক্তি দিয়ে তার মনের খবর সব পড়ে নিচ্ছে।
বিলি যে বন্ধুত্বপরায়ণ ছিলো সে ব্যাপারে মোর্স নিশ্চিত।তার সাথে থাকলে মোর্স হয়তো অনেক সুবিধা পেতো।তাছাড়া দুজনের পছন্দের বিষয়গুলোতেও মিল আছে।কিন্তু সে সুযোগ মোর্স নেয়নি।কারন হয়তো তার ঠকবার ভয় ছিলো। আর এখন?? এটাট সম্ভবই নয়।
জীবনের উনত্রিশ বসন্তের বিশটা বসন্ত কাটিয়েছে এই আর্মিতেই-মোর্স ভাবলো।এমন না যে আর্মিতে থেকে সে খুব খুশি।কিন্তু তাকে আর্মিতেই মানায় আর সে ঐসকল লোকদের মতোন যাদের দ্বারা যেকোন কাজ করানো যায়-কাজের প্রতি আগ্রহ বা ভালোবাসা না থাকা সত্ত্বেও।সে ছিলো পুরোদস্তুর সৈনিক।নিজেকে সে সাধারণ জনগণের মতো কল্পনাই করতে পারেনা।সেইসব সাধারনদের মতো যারা ইচ্ছামতো নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারে।কিংবা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে।
নিজের অবস্থান সম্পর্কে মোর্সের ভালো ধারণা আছে।কিন্তু তারপরও সে বিভিন্ন কেলেংকারীতে জড়িয়ে পড়েছিলো।অনেক ঝুঁকিপূর্ন জীবন বিপন্ন হবার মতো কাজও করেছে।
ইরাক ভ্রমণের কিছুকাল আগে এক রেস্টুরেন্টে এক কিউবান বেয়ারার সাথে তার পরিচয় হয়।এই বেয়ারা বিয়ে করতে যাচ্ছিলো আর সে ছিলো জুয়ার নেশাগ্রস্ত।অবশেষে,মোর্স জানতে পারলো যে সে একজন ব্ল্যাকমেইলার।তবে মোর্স ব্ল্যাকমেইলড হতোনা।সে তার কমান্ডিং অফিসারের নাম আর ফোন নাম্বার দিয়ে বলেছিলো,’এই নাও।এই নাম্বারে কল দাও’।যদিও সে বুঝতে পারেনি লোকটা সত্যি সত্যিই ফোন করে ফেলবে।
আর এজন্যই মোর্সের পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ কাটে এক জাহাজে-তার কাজের সম্পূর্ণ বাইরের একটা কাজে।তারপর তাকে বদলি করে দেয়া হয় আর সে ফিরে আসে তার আগের জীবনে। আর তখনি সে পরবর্তী উত্তেজনাকর দিনগুলোর জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকে।
যে সপ্তাহে মোর্স ফিরে আসে সে সপ্তাহেই এক তরুন ল্যাফটেন্যান্ট তাদের ইউনিটে যোগদান করে।তাদের একই সাথে অরিয়েন্টেশন হয়।এরপর আস্তে আস্তে মোর্স টের পেলো যে তরুণটি তার ব্যাপারে কিছুটা আকৃষ্ট।ব্যাপারটি তরুন ল্যাফটেন্যান্ট প্রথমে এড়িয়ে গেলেও পরে ঠিকই স্বীকার করে ফেলে।এতে করে মোর্স কিছুটা ভীত হয়ে যায়।তার সম্মানবোধে এতোটাই আঘাত লাগে যে তার মনে হতো সে এ থেকে রক্ষা পাবার জন্য নিজের কোন ক্ষতি করে ফেলবে।এতে করে দুজনেই কষ্ট পেতে থাকে।পরে পিতৃতুল্য এক কর্ণেলের কাছে অফিসার্স ক্লাবে স্বীকারোক্তি করার মাধ্যমে মোর্স এ থেকে মুক্তি পায়।
কিন্তু ব্যাপারটির মোড় ঘুরে গেলো অন্যদিকে।তারা যখন টহলে ছিলো তখন ঐ তরুণ ল্যাফটেনেন্ট এক-কানওয়ালা একটা বিড়াল দত্তক নেয়।বিড়ালটি তার পায়ের গোড়ালিতে আঁচড় দেয়।আর ঐ জায়গায় ইনফেকশন হয়ে যায়। তারপরো সে চিকিৎসা না নিয়ে বোকার মতো এমন পা নিয়েই খেলাধূলা চালিয়ে গেছে।যার কারনে গ্যাংগ্রিন হয়ে যায়।ফলসস্বরুপ তার পা কেটে ফেলতে হয়।এই অভিযানের পাঁচ মাসের মাথায় তাকে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে মর্মাহত না হয়ে বরং স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিলো মোর্স।
আসলে স্বস্তিরও তেমন অবকাশ ছিলোনা।ওখান থেকে ফেরার পর ওই তরুন ল্যাফটেনেন্ট এর এলাকা থেকে দুজন সিভিলিয়ান ব্যাক্তি তাকে জেরা করার জন্য আসে।এজন্য তাকে সদর দপ্তরে ডেকে নেয়া হয়। ওই দুজন তার সাথে বেশ বন্ধুত্বপুর্ন ব্যবহার করেছিলো।যদিও একই প্রশ্ন বারবার জিজ্ঞেস করে জানতে চাইছিলো তার সাথে ওই ল্যাফটেনেন্টের পরিচয় কেমন ছিলো।মোর্স তেমন কিছুই জানাতে পারেনি বা জানায়নি।সে দেখলো তারা যেখান থেকে এসেছে সেখানকার কংগ্রেসম্যানের এ ব্যাপারে হাত আছে।ব্যাপারটি বেশ স্পর্শকাতর।তাদের ঐ ল্যাফটেনেন্টের ইরাক যাত্রা,সেখানে যুদ্ধক্ষেত্রে তার ভূমিকা আর অন্যান্য বিষয়ের ব্যাপারেও ধারণা রেখেছেন।তারা আবার কয়েক সপ্তাহ পর আবার তার সাথে দেখা করবে বললেও শেষ মুহূর্তে মানা করে দেয়।তবুও মোর্স তাদের সাথে সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করেছিলো।
মোর্স চাইতো যে তার সিদ্ধান্তগুলো তার ইচ্ছেগুলো তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে।কিন্তু প্রায় সময়ই এটা হয়না।সে ভাবতো তারাই ভাগ্যবান যারা নিজের ইচ্ছেমতো চলাফেরা করতে পারে।তারপরো সে আশা আঁকড়ে ধরে রাখে।
গত কয়েক মাস ধরে মোর্স এমন এক ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে পড়ছিলো যা তার মনের ভিতর ভয় ঢুকিয়ে দেয়।লোকটি ইন্টেলিজেন্স বিভাগের মাস্টার সার্জন।তার চেয়ে বছর পাঁচেক বড়ো-বেশ শান্ত স্বভাবের আর চেহারাতে ছিলো পাণ্ডিত্যপূর্ন্য ভাব।এর সংস্পর্শে থাকা সত্ত্বেও মোর্স নিজেকে কাউকে নিজের পার্টনার হিসেবে ভাবতে পারেনা।সে ধীরে ধীরে এন,সি,ও এর কোয়ার্টারে রাত কাটানো বন্ধ করে দেয়।সপ্তাহান্তের দিনগুলো ডিক্সনের এক বদ্ধ রুমে থাকতো।রুমটাতে ডিক্সনের নানান অভিযান আর ভ্রমণে সংগ্রহ করা মালামালে ঠাসা।প্রাচীন অদ্ভুত দেখতে মুখোশ,অস্ত্র,স্টাফ করা জানোয়ার –এইসব।প্রথম প্রথম জাদুঘর ঘরানার বলে মনে হলেও একসময় মোর্সের তা সহ্য হয়ে যায়।এখন বরং এ সকল জিনিসপত্রের পাশাপাশি থাকতে ভালোই লাগে।
কিন্তু ডিক্সনের বিদেশে ঘুরাঘুরি আর মোর্সের সৈন্যদলে নিজস্ব কাজ তাদের সম্পর্ককে জটিল করে তোলে।তাদেরকে শীঘ্রই নিজেদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।পরস্পরের প্রতি কতটুকু অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকবে তাও জানানো লাগবে।এ সবের শেষ কোথায় মোর্স তা জানেনা।কিন্তু এসব তো এভাবেই চলছে।
মধ্যরাতে অন্য এক সার্জেন্টের কাছে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার আগমুহুর্তে বিলি হার্টের বোন আবার কল করলো।মহিলার কন্ঠস্বর চিনতে পেরে দরজার দিকে ইশারা দিতেই অন্য লোকটি স্মিত হেসে বেরিয়ে গেলো।
-‘আপনি কি ঠিকানা চান তাহলে?’,মোর্স জিজ্ঞেস করলো
-‘জ্বি।সেটা হলে ভালো হয়’
মোর্স আগেই ঠিকানাটা বের করে রেখেছিলো।আর এখন তা পড়ে শোনালো।
-‘ধন্যবাদ’মহিলা জানালো,’আমার কাছে কোন কম্পিউটার নেই।কিন্তু স্যালের আছে।‘
-‘স্যাল??’
-'স্যাল ক্রোনিন।আমার কাজিন'
-আপনি তো যেকোন ইন্টারনেট ক্যাফেতে যেতে পারেন।
-হুমম......তা ঠিক,’সন্দেহের কণ্ঠে বললো মহিলা,’আপনি...মানে আপনি কি এ ব্যাপারে আমাকে সহায়তা করতে পারবেন??’’
-আসলে আমি ঠিক জানিনা
-আপনিতো তাও বলেছেন
-হুম।আর আপনি হেসেছেনও
-ওটা আসলে হাসি ছিলোনা
-ওহ! হাসি ছিলোনা!!
-তেমনই...আমি ঠিক জানিনা।
মোর্স অপেক্ষা করলো
-'দুঃখিত,’মহিলা বললো,’দেখুন আমি কোন সাহায্য চাচ্ছিনা,ওকে? এই একেটু কৌতুহল আরকি’’
-কোন দরকার ছিলোনা।আমি ওরকমভাবে নেইনি ব্যাপারটা;
-তাহলে ঠিকাছে
এরপর একদিন মহিলার কথামতো ঐ প্যানকেকের দোকানে গেলো মোর্স মহিলার সাথে দেখা করতে।এই দোকান থেকেই সে কল করেছিলো।আগে বলে রাখা কথা অনুযায়ী,মহিলা ক্যাশ রেজিস্টারের পাশে দাঁড়িয়েছিলো।দরজা খুলেই মোর্স তাকে দেখতে পেলো।মহিলাটি প্রস্তুত হয়ে দাঁড়ালো।মোর্স দেখলো বিলির বোন-বেশ লম্বা-প্রায় তার মতোনই।আর চুলগুলো কালো-বাঁকানো।মুখে কিছুটা ক্লান্তির ছাপ,চোখ দুটো কালো-গভীর।এছাড়া বিলের সাথে আর কোন মিলই পেলোনা মোর্স।কেন জানি হঠাৎ মোর্স হতাশ হয়ে গেলো আর এখান থেকে দ্রুত চলে যাবার একটা তাগিদ অনুভব করলো।
মহিলা মোর্সের দিকে এগিয়ে এলো।মাথাটা একপাশে হেলিয়ে যেন পর্যবেক্ষন করছে মোর্সকে।তার চোখের ভ্রু বেশ বড় আর ঘন ছিলো।পরনে ছিলো একটা হাতাকাটা ব্লাউজ।
-‘আমার কি আপনাকে কল করা উচিত ছিলো,সার্জেন্ট....??মহিলা জিজ্ঞেস করলো
-‘ও’য়েন;
-সার্জেন্ট ও’য়েন
-শুধু ও’য়েন বললেও চলবে
-' ওকে।ও’য়েন',বিলির বোন প্রত্যুত্তরে বললো।সে তার হাত সামনে বাড়িয়ে দিলো।হাতটা ছিলো শুকনো এবং রুক্ষ।
-জুলিয়েন।আমরা একটা কর্নারে গিয়ে বসতে পারি’
সে তাদেরকে একটা বড়ো জানালাওয়ালা পার্কিং লটে পাশের বুথে নিয়ে গেলো।একটা মোটামুখো বালক-যার বয়স সাত কি আট হবে বসে বসে সসেজ,কেক,ডিম রাখার একটা জায়গার সামনে বসে পেইন্টিং করছিলো।
সে হাতের রঙ্গিন খড়িটাকে গজালের মতো ধরলো যখন মোর্স তার পাশের বেঞ্চের সামনে আসলেন।বিলির বোনকে দেখেও একই আচরন করলো।মোর্সের দিকে একটা লম্বা চাহনি দিয়ে সে নিজের কাজে আবার ডুবে গেলো।
‘হ্যালো,চার্লি;
সে একবার পেইন্টংটাতে আঁচড় দিলো আর এরপর বললো,’কি অবস্থা??’
সে এখন আর হ্যালো বা হাউডি বলেনা।তার বদলে ‘কি অবস্থা’ ব্যবহার করে।কোথা থেকে শিখেছে কে জানে!!
‘এইতো চলছে’।আশা করি ভালোই আছো,চার্লি।
‘তোমাকে দেখতে একটা ব্যাঙ এর মতো লাগছে',ছেলেটি বললো।সে আরেকটা রঙ্গিন খড়ি তুলে নিলো।
‘চার্লি’,মহিলা বললেন,’বাজে ব্যবহার করোনা’।এতো মৃদুভাবে বললো যেমন রেস্তোরাঁয় বেয়ারারা কাপে কফি ঢালে।
‘না।না।ঠিকাছে’,মোর্স বলে উঠলো।সে জানতো এমন কিছু একটা ঘটবেই।এজন্য না যে তার মুখ আসলেই ব্যাঙের মতোন কিন্তু তার চোয়াল কিছুটা মোটা বটে।
‘এই মহিলাটার সমস্যাটা কি!!,’জুলিয়েন বললো।কারন ওয়েট্রেস মহিলাটি সারা ঘরময় শুধু শুধু পায়চারি করছিলো।এরপর জুলিয়েন তাকে চোখে ইশারা দিলে সে ধীরে তাদের টেবিলে এসে জুলিয়েনের কাপে কফি ঢেলে দিলো।
‘আপনি বোধহয় কয়েকটা পেইন্টিং বানাচ্ছেন?ওয়েট্রেসটি জিজ্ঞেস করলো।‘ওটা কি??”
ছেলেটি পাত্তা দিলোনা।
‘আপনি দেখি এই বাচ্চা পেইন্টারের মতো বোবা থাকতে পছন্দ করেন।‘কথাটা জুলিয়েনকে জানালো।
জুলিয়েন তার কফিতে দীর্ঘ সময় ধরে চিনি ঢাললো।
‘চার্লি কি তোমার ছেলে??”
বিলির বোন বেশ কড়াভাবে তাকালো,’না’
‘তুমি আমার মা না’ বিড়বিড় করে বললো ছেলেটা
আমি কি এটা বলেছি??তিনি তার হাত দিয়ে গাল মুছলেন।
‘এখনো নয়’।ছেলেটি ভয়ানকভাবে নীল রঙের লাইন আঁকছিল যেন কোন বিশেষ কাজের তাড়া আছে।
‘আপনি কিছুই মিস করছেন না;
;অহ! আমি ভেবেছিলাম আমি হয়তোবা কিছুই বুঝতে পারিনি’
‘তেমন কিছুনয়।চার্লি বিলির ছেলে।বিলি আর ডিনার।‘ জুলিয়েন বললো
মোর্স আগে কখনো এধরনের কথাবার্তা শোনেনি। সে ঘুনাক্ষরেও জানতো না যে বিলি হার্টের একটা ছেলে আছে।সে আশা করলো মহিলাটি এ ব্যাপারে বেশি ঘাঁটাঘাটি করবেন না্।যদিও কথাটা তার নিজের কাছেই অদ্ভুত ঠেকলো আর পরিষ্কার পানির মতোন স্বচ্ছ লাগলো।
‘সেতো নয়ই।যেভাবে সে আচরন করতো।সে আর বেলা( বিলির মা) কেউই চার্লিকে চায়নি,’জুলিয়েন বলে চললো।‘ডিনা তো দ্বিতীয় সপ্তাহের জন্য রিহ্যাবে গেছে।জুলিয়েন আর বেলা চার্লির দেখাশুনো করছেন।কিন্তু ব্যাপারটি বেশি দূর গড়ায়নি।বেলা ফ্লোরিডা চলে যায় তার এক বয়ফ্রেন্ডের সাথে।এতে করে বিপদের সাগরে পড়ে জুলিয়েন।বাঁচার তাগিদে সে একটা স্কুল বাসের ড্রাইভার ছিলো,আবার শুকনো মৌসুমে গার্লস স্টুডেন্ট ক্যাম্পে বাবুর্চির চাকরিও করেছে।কিন্তু চার্লিকে সঙ্গে নিয়ে –তার উপর বাচ্চাটার খেয়াল রাখার জন্য টাকা পয়সা না থাকাতে সে ক্যাম্পের চাকরি ছেড়ে দেয়।
একারনেই সে এখানে এসেছে।দেখতে যে বিলি যদি কোন সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারে।কিংবা আগের স্কুলের চাকরিটা যদি ফেরত পাওয়া যায় বা বেলা এসে তার সাথে খরচ শেয়ার করুক।
মোর্স ছেলেটির দিকে তাকালো।এধরণের কথাবার্তা তার তেমন পছন্দ নাহ।তাই তেমন মনোযোগও দিতে পারলোনা।কিন্তু জুলিয়েন বলেই চলেছে যেন সে মোর্সের ভাবভঙ্গি লক্ষ করছেনা।তার কন্ঠটা নীচু ধরনের।অনেকটা করাত দিয়ে কাঠ কাটলে যেমন শব্দ হয় তেমন।
জুলিয়েনের কাছে এমন কোন গানও ছিলোনা যে মোর্স নাচতে পারতো। সে বরং তার ফ্যামিলির ফাঁকফোকর আর সমস্যার কথাই বলে গেলো।তাছাড়া সে নিজেদের খামার নিয়ে আশান্বিত।সে এমন সব লোকেদের কথা বলতে লাগলো যেন মোর্সও তাদেরকে ওইভাবেই চিনে।মোর্স প্রথমদিকে চাইলো মহিলা নিজ থেকে তার প্রতি আগ্রহ দেখাক।কিন্তু তা হলোনা।সে বুঝতেই পারলোনা ঠিক কি চায় এ মহিলা তার কাছে,কেন চায়!!যদি কিছু না-ই চায় তবে আজ রাতে এখানে ডেকে আনার মানেটা কি!!
-‘তাহলে সে চলেই গেছে’,সে বললো,’অবশেষে।আপনি কি নিশ্চিত?
-‘হুম।মনে হয়।’
-‘আমার ভাগ্য ভালোই চলছে।এর চে আর কি আশা করতে পারি।’সে পেছনদিকে হেলান দিলো আর চোখ বুজলো।
-আপনি আরো আগে ফোন করেননি কেনো??
-কি??আপনি আমাদের বিলিকে চিনেনই না তাহলে।
জুলিয়েন একটা ঘোরের মধ্যে পড়লো এবং শীঘ্রই মোর্সেরও তাই হলো।একসময় বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো আর অস্পষ্ট কন্ঠস্বরেরা এলোমেলোভাবে ঘরময় ছড়াতে লাগলো।তারা জানেনা ঠিক কতক্ষণ ওখানে বসে ছিলো।মোর্সের নিমগ্নতা ভেঙ্গে গেলো বৃষ্টির ছিটার কারণে।জানালার কাঁচে বৃষ্টির ফোঁটা এসে পড়তে লাগলো।একসময় বৃষ্টি থেমে গেলো।তারপর হঠাৎ লোকজনের হুড়াহুড়ি,পিচঢালা রাস্তায়-ভিজে পার্কিং লটের দিকে সবাই এগিয়ে গেলো।দেখতে বেশ লাগলো।বিশেষ করে কর্মময় একটা দিনের পর।
‘বৃষ্টি’ মোর্স বললো
জুলিয়েন তাকানোর কোন চেষ্টা করলোনা।সে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে।কিন্তু নড়াচড়া দেখে বুঝা যায় যে সে আসলে ঘুমায় নি।
মোর্স পাশের টেবিলে বসা তার কোম্পানীর দুজন লোককে দেখলো।মোর্স তাদের দিকে তাকিয়ে থাকলো যতক্ষন না তারা ফের তার দিকে তাকায়।তারা তাকালে পর মোর্স মাথা নোয়ালো।তারাও মাথা নুইয়ে সম্মান জানালো।
ব্যাংকে রাখা টাকাগুলোর কথা ভাবছে এখন মোর্স। একসময় একটা স্ত্রী,এক ছেলে সহ সে হয়তো প্যানকেক হাউজে থাকতে পারতো।কিন্তু,না।এ ধরনের চিন্তা তাকে মানায় না।তাছাড়া এখানে একটা ফ্যামিলির প্রতিচ্ছবি কল্পনা করা অসম্ভব।কিন্তু আসলেইতো একটি পরিবারের মতো সবকিছু আছে এখানে—জুলিয়েন চোখ বুজে বসে আছে—ছেলেটা তার পেইন্টিং নিয়ে মগ্ন আর মোর্স—নিজেকে একজন স্বামী বা অভিভাবক হিসেবে কল্পনা করলো নিজেকে।
‘তোমাকে ক্লান্ত দেখাচ্ছে”,মোর্স আপনি থেকে তুমিতে নামলো
তার কন্ঠস্বরের আশ্চর্য কোমলতা তাকে অবাক করলো এবং চোখ এমনভাবে কাঁপলো যেন জুলিয়েনও অবাক হয়েছে।জুলিয়েন তার দিকে কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে দেখলো।
মোর্সের হঠাৎ মনে হলো ঐদিন ফোনে দয়া করে কোমল স্বরে কথা বলার জন্যই হয়তো জুলিয়েন কৃতজ্ঞতার নিদর্শনস্বরুপ এখানে দেখা করার কথা বলেছে,
-‘আমি সবসময় এমনই,সে বললো,’ক্লান্ত থাকি’।
-‘দেখো,জুলিয়েন।তোমার কি খারাপ লাগছে??
-না।ওসব ভুলে যাও।আমি শুধু ব্যাপারটা ভিতর থেকে তাড়াতে চাইছি।
-আমি বদান্যতার কথা বলছিনা।ঠিকাছে??এটা একটা ঋণের মতোন।সেটাই।
-সব ঠিক হয়ে যাবে
‘এটা ঠিক অপেক্ষা করার মতো না,’মোর্স বললো।তার বাবা আর বড় ভাই অনেক আগেই মারা গেছেন।ইরাক থেকে ফেরার পর মস্যের সাথে থাকতে চেয়েছিলো মোর্স।কিন্তু সে আসার কিছুকাল পরেই মা মারা যায়।
মোরসের নতুন উইলে তার মা যেখানে জীবনের শেষ সপ্তাহগুলো কাটিয়েছে তার কথা উল্লেখ আছে।তবে ডিক্সনের ব্যাপারটাও চলে আসে।ওটা একটা হঠাৎ সিদ্ধান্ত ছিলো।হয়তো তার প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরনের জন্য এমন হয়ে থাকবে।তবে সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ব্যাপারটা পরিষ্কার করতে সাহায্য করেছে।
-আমি ঠিক পারছিনা,’জুলিয়েন বললো,’কিন্তু ব্যাপারটি বেশ ভালো’।
-আমার বাবা একজন সৈন্য,’ ছেলেটি বলে উঠলো।তার মাথা এখনো ম্যাটের নীচেই।
-আমি জানি’,মোর্স বললো,’সে খুব ভালো সৈনিক। তার জন্য তোমার গর্ব করা উচিত।
জুলিয়েন তার দিকে চেয়ে হাসলো।সত্যিকারের হাসি।সে রাতের জন্য প্রথমবার।সে এমনভাবে মুখ চেপে হাসলো যেন অন্য কেউ হাসছে।
মোর্স দেখলো তারও সৌন্দর্য্য রয়েছে।তাছাড়া তার প্রতি জুলিয়েনের আস্থা ওর সৌন্দর্যের পাপড়ি মেলে ধরতে সাহায্য করেছে।মোর্স কিছুটা বিব্রতবোধ করলো।
সে হঠাৎই একটু কপটতা অনুভব করলো আর অপ্রস্তুতভাবে বলে উঠলো,’আমি তোমাকে বাধ্য করতে পারিনা।এটা তোমার ব্যাপার।‘
হাসিটা মুহুর্তেই গায়েব হয়ে গেলো।‘আমি চেষ্টা করবো’,জুলিয়েন বললো।সেই একই স্বরে যে স্বরে মোর্স বলেছিলো।‘যা হোক।আমার আপনাকে ধন্যবাদ দেয়া উচিত।উঠার সময় হলো।‘এরপর ছেলেটিকে বললো,'তোমার জিনিসপত্র গুছিয়ে নাও’।
-আমার এখনো কাজ শেষ হয়নি
-আগামীকাল শেষ করো তাহলে
মোর্স জুলিয়েনের উঠার জন্য অপেক্ষা করলো।আর ছেলেটিকে তার জিনিসপত্র গুছাতে সাহায্য করলো।এরপর লবণ রাখার পাত্রের মধ্যে বিল সাঁটানো দেখলো এবং তা তুলে নিলো।
‘আমি ওটা নিবো,’জুলিয়েন বললো।এমনভাবে হাতটা বাড়ালো যে না দিয়ে পারা গেলোনা।
মোর্স প্রস্তুতভাবে দাঁড়িয়ে রইলো যখন জুলিয়েন বিল মিটাচ্ছিলো।তারপর সে দুজনের সাথে একসাথে বাইরে বেরিয়ে এলো।বাইরে শামিয়ানার নীচে তারা কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে রইলো।কেননা তখন বাইরে প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি চলছে।তারা পার্কিং লটে চলা ঝড়ের তান্ডব অনুভব করলো।বৃষ্টির অস্পষ্ট ফোঁটা তাদের মাথার উপর ল্যাম্পোস্টে ঝিলিমিলি আলো তৈরি করলো।চারপাশের গাছপালাগুলো প্রচন্ডভাবে হেলছে দুলছে।রাস্তার পীচের উপর বাতাসের ঢেউ যেন খেলা করলো।
জুলিয়েন ছেলেটির মাথায় একবার হাত বুলিয়ে বললো,’আমি রেডি।তুমি?”
-‘না’
-‘আচ্ছা।চার্লস ডিউ হার্টের জন্য এখন বৃষ্টি পড়া থামবেনা,’জুলিয়েন কিছুটা চিৎকার করে বললো ।
-তুমি কোথায় থাকবে??',মোর্স জিজ্ঞাসা করলো।
-পিক আপে
একটা পিক আপে?? তুমি একটা ট্রাকে ঘুমাতে যাচ্ছো???
-অতটা ভালো চালাইনা,’যে দৃষ্টি জুলিয়েন তার দিকে হানলো তার কিছুটা প্রত্যাশিত আর বাকিটা বিদ্রুপকারী।
মোর্স ভাবলো সে হয়তো জুলিয়েনকে একটা মোটেল রুমে থাকবার অফার দিতে পারে।আর জুলিয়েন ইতিমধ্যেই এরকম অফারের জন্য প্রস্তুত ছিলো।কিন্তু মোর্স সেরকম কোন চেষ্টা করেনি।
-'গ্রাম্য গর্ব,’ডিক্সন বললো সব শোনার পর।‘তোমার ওদেরকে এখানে নিয়ে আসা উচিত ছিলো।এখানে থাকতে পারতো ওরা।‘
বিশেষ করে পাহাড়ী অঞ্চলের লোকেরা এটা পছন্দ করে,’ডিক্সন বলে চলে,’’আরবদের মতো।আতিথিয়তা পছন্দ করে কিন্তু তারা টাকা নিতে চায়না। আথিতিয়তা একটা পবিত্র কাজ।তুমি তা দিতে অস্বীকার করতে পারবেনা আবার নিতেও অস্বীকৃতি জানাতে পারবেনা।‘
‘আমার সাথে এমন হয়নি;,মোর্স বললো।কিন্তু সত্যি হলো তারো সেইরকম মনোভাব ছিলো। যখন ও দুজনের সাথে রেস্তোরাঁর বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলো।সাথে তার হাতে ছিলো তার ওয়ালেট।
এমনকি সে জুলিয়েনকে একটা রুম ভাড়া নেয়ার জন্য টাকা দিতে চেষ্টা করেছিলো।ঝড়ের অজুহাত দিয়ে।তাছাড়া ছেলেটিকে একটা শুকনো জায়গায় রাখার দরকার ছিলো।সে জানতো অথবা তার মনে হয়েছিলো সে যদি জুলিয়েনকে এখানে থাকতে অফার দিতো তো সে না করতে পারতো না।কিন্তু তারপর কি হবে??
ডিক্সনের ঘুম ভাঙ্গাতে হতো।নতুন তোয়ালে বের করে গেস্ট রুমে দিতে হতো।কফি বানাতে হতো। ডিক্সন বাচ্চাটার সাথে খুনসুটি করতো---এবং এমনভাবে মোর্সের দিকে তাকাতো যেভাবে সে সবসময় তাকায়।আর এটার মানে জুলিয়েনের কাছে জলের মতো স্বচ্ছ হয়ে যেতো।হয়তো সে ভিতরে ভিতরে শক পেতো,বিরক্তও হতো।ভাবতো তার সাথে প্রতারণা করা হয়েছে।
মোর্স এমনটাই ভেবেছিলো কিন্তু একবারে এ ব্যাপারে ভীত হয়ে যায়নি।সে ডিক্সনকে পছন করতো।তার মনে হয়না সে এমন কাজ করতো।বরং ভয় এইটাই যে –সে এমনভাবে জুলিয়েনকে ডিক্সনের সামনে নিয়ে যেতে পারেনা।
বিশেষ করে তার প্রতি ডিক্সনের তাকানোর ভঙ্গিটা কাজ করেছিলো এ ব্যাপারে।তারপর যদি দেখা যায় সে ওদেরকে ঠিকভাবে আপ্যায়ন করতে পারেনি।তখন???
তাই সে যখন জুলিয়েনকে থাকার প্রস্তাব দিচ্ছিলো তার মনে হয়েছিলো সে বুঝি জুলিয়েনকে ঠকাচ্ছে বা ভুল করছে।কিংবা কে বলতে পারে যে তার মনে হয়নি সে জুলিয়েনকে কিনছে।
আর বিল মিটানোর ক্ষেত্রে সে জুলিয়েনের সাথে পাল্লা দিতে পারেনি বলে একটা অপরাধবোধও কাজ করছিলো।তারপর সে কিনা জুলিয়েনকে ট্রাকে থাকতেই বলেছিল যা ছিলো জঘন্য একটা ব্যাপার।
‘আমি কোন ট্রাকে ঘুমাতে পারবোনা,’ ছেলেটি বললো
-তুমি বরং আরো খুশি হবে,’জুলিয়েন বললো,’এখন এসো না হয় থাকো এখানে’
-শুধু বাড়ি ফেরার চিন্তা করবেনা
জুলিয়েন ছেলেটার কাঁধে হাত রাখলো এবং পার্কিং লটের দিকে এগিয়ে গেলো।
‘তুমি খুব ক্লান্ত”,মোর্স জুলিয়েনকে বলেছিলো।কিন্তু সে জবাব দিয়েছিলো কিনা তা সে বুঝতে পারেনি।হয়তো প্রচন্ড ঝড়ের কারনে কিংবা ধাতু পেটানোর আওয়াজে তার জবাব হারিয়ে গেছে।
তারা পিচঢালা পথ হেঁটে পার হলো।বাতাস এতো তীব্র ছিলো যে মোর্সকে প্রায় লাফিয়ে রাস্তা পার হতে হয়েছে।জুলিয়েনের মুখ আর চুল পুরো ভিজে গেছে।কিন্তু তবুও সে মাথা ঝাঁকিয়ে জল ঝরাবার চেষ্টা করলোনা।ছেলেটিও না।চার্লি,সে হয়তো জুলিয়েনের কাছ থেকে কিছু একটা পাচ্ছে।তারা দুজনেই পথ ধরে এগিয়ে চললো।এমনভাবে বৃষ্টির মধ্যে যেনো বৃষ্টি হচ্ছেইনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৩৭