ইতার বাপের নাম হইলো ইজহার। আছিলো আমার নানার ছাত্র। আমার নানার জানাজা ইতার বাপে পড়াইছিলো। আমার নানারে খুবই ইজ্জত করতো তার বাপে। আর তার বাপ মোল্লা ওমর থিকা সরাসরি জঙ্গি ট্রেনিং নিয়ে আসছিলো আফগানিস্তান থিকা। আর মোল্লা ওমর আছিলো ওসামা বিন লাদেনের রাইট হ্যান্ড।
ট্রেনিং শেষে তার বাপ সিরিয়াতে জিহাদ করতে গেছিলো। দেশে ফিরা ইতারে জঙ্গি ট্রেনিং দিছে। কথিত আছে ইতে হাঁটতে হাঁটতে বোমা বানাইতে পারে। লালখান বাজার মাদ্রাসায় বোমা বানাইতে গিয়া একবার বিকটশব্দে বোমা ফেটে গিয়ে মাদ্রাসার ছাদ উড়ে যায়। আতংকে মানুষ এদিক সেদিক ছুটোছুটি করে। পুলিশ আসার আগেই আহত অবস্থায় পালিয়ে যায় সে। কিছুদিন পর গ্রেফতার হলেও অদৃশ্য শক্তির ক্ষমতা নাকি ওহী নাজিলের বদৌলতে জামিনও পেয়ে যায়। তার বাপকেও বহুবার জঙ্গি কানেকশনের জন্য গ্রেফতার করা হয় কিন্তু সেও সাক্ষী প্রমাণের অভাবে খালাস পেয়ে যায়।
বাঙলাদেশে যেকজন আন্তর্জাতিকভাবে ট্রেনিং প্রাপ্ত জঙ্গি আছে তাদের মধ্যে বাপ-পুতের নাম সবার আগে। এরাই বাকিদের ট্রেনিং করায়। হারুন ইজহার এবং মুফতি ইজহার হইলো বাঙলার জমিনে সকল জঙ্গিদের শিরেতাজ মানে মাথার মনি।
এই হারুন ইজহারের লগে আমার রাজনৈতিক এবং আদর্শিক শত্রুতা রইছে। সময়টা তখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য উত্তাল। আমিও লড়ছি। পাড়ায় মহল্লায় গ্রামে গঞ্জে শহরে বন্দরে অনলাইনে অফলাইনে সমান ভাবে। হারুন ইজহারের গ্রামের বাড়ি এবং আমার গ্রামের বাড়ি একই থানায়। আমার এলাকার রাজাকারের নষ্টবীর্যরা আমাকে রাজনৈতিক ভাবে প্রতিহত করতে না পাইরা ধর্মীয়ভাবে প্রতিহত করার কৌশল নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় হারুন ইজহারকে প্রধান অতিথি করে এক মহা আকাঈদ সম্মেলনের ডাক দেয় স্থানীয় এক মাদ্রাসার ময়দানে। আর সেখান থেকেই আমাকে নাস্তিক ঘোষণা দিয়ে সামাজিকভাবে প্রতিহত করার ডাক দেয় এই হারুন ইজহার।
তার যখন গ্রেফতারের খবর শুনলাম তখন মনে হলো অন্ধকার যতো বেশিই হোক না ক্যান ভোর হলে সূর্য উঠবেই। যারা ধর্মের লেবাসে অন্ধকার ছড়ায় তাদের অনেকেই এখন আইনের আওতায় আসছে। বাঙলার আকাশে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে নতুন ভোরের সূর্য। সেই সূর্য্যের আলোতে ধর্মের লেবাসে অন্ধকার ছড়ানো বাইঞ্চোদরা নিজেদের মুখ লুকাতেই ব্যস্ত। আর আমরা যারা অন্ধকার জনপদে ধর্মনিরপেক্ষতার আলো আনতে লড়ছি তারা একটু হলেও স্বস্থির নিশ্বাস ফেলতে পারছি। আর এটাই শান্তি। জয় বাঙলা ♥
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৪৯