সাকিব নিসিদ্ধ হলেন ৬ মাস, জাতীয় ও ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে। এ যেন কাউকে গুতানোর অপরাধে দুধ দেয়া গাভীকে মালিক এমন শাস্তি দিলো যে তার কাছ থেকে দুধ দোয়া হবে না, তার বাচ্চাকেও খেতে দেয়া হবে না। এখন বলুন তো ক্ষতি টা কার হলো গাভির নাকি তার মালিকের ?
সাকিবরা চিরকালই জিনিয়াস। বলেনা.... ফর্ম ক্ষনস্থায়ী কিন্তূ ক্লাস ই চিরস্থায়ী। দলের জয়ে যাদের অবদান বেশি থাকে তাদের ম্যাচ উইনার
বলে। বাংলাদেশ টিমে সেই ম্যাচ উইনারের তালিকায় প্রথমেই থাকবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। দলের জয়ে তার পারফরমেন্স থেকেই তা প্রমাণিত । সাকিবের খেলা ১৩৩ ওডিআই এর মধ্যে ৫৬ টি জিতেছে বাংলাদেশ! সেই ম্যাচ গুলুতে ব্যাট-বলে সাকিবের পারফমেন্সঃ
# ব্যাটিং
ম্যাচেঃ ৫৬ ইনিংসেঃ ৫১ নট আউটঃ ১৬ রানঃ ১৮৫৪
গড়ঃ ৫২.৯৭ সেঞ্চুরিঃ ৪ হাফ সেঞ্চুরিঃ ৯ স্ট্রাইক রেটঃ ৮৮.১৫
# বোলিং
ম্যাচেঃ ৫৬ উইকেটঃ ৮৪ ইকোনমিঃ ৩.৯১!!
সাকিব যে ম্যাচ উইনিং প্লেয়ার (সাকিব কিন্তু দেশের জন্য খেলে না !!!!)
সাকিবের এই নিসিদ্ধের ফলে বাংলাদেশ দলের ক্ষতির পরিমানটা একবার ভাবুন তো
- প্রথম ক্ষতিটা অবশ্যই বিশ্বকাপ ২০১৫, শুরু হবে ফেব্রুয়ারী তে। সাকিবের সাজা শেষ হবার এক মাসের মধ্যেই বিশ্বকাপ, সকল প্রকার ক্রিকেট থেকে তাকে নির্বাসিত করে এক প্রকারে বিশ্বকাপ দল থেকেই সরানো হলো। তাতে সাকিব হয়ত বিশ্বআসরে খেলার সুযোগ হারাবে, কিন্তু বাংলাদেশ কি কিছুই হারাবে না ? শুধু সাকিবের আচরনের কারনেই যদি বাংলাদেশের পারফরম্যান্স খারাফ হলে, সাকিব বিহিন বিশ্বাকাপে তো আমরা তাহলে চ্যাম্পিয়ন ধরে নিতে পারি !!!
- বাংলাদেশের পরবর্তি সিরিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজে, সিপিএল লীগ শেষের এক সপ্তাহ পরে। এখন সাকিব সিপিএল লীগে খেলা মানে বাংলাদেশের একজন খেলোয়াড় একমাস আগেই বিনা খরচে সেখানকার মাঠ, উইকেট ও পরিবেশ সম্পর্কে আগাম ধারনা থাকা। সাকিবকে হয়ত টাকা থেকে বন্চিত করা গেল, কিন্তু বাংলাদেশ কি একটু সুবিধা হারালো না ? আমার তো মনে হয় বোর্ডেরই উচিৎ ছিল, সাকিব সহ আরো কাউকে সিপিএল লীগে খেলার ব্যাবস্থা করে দেওয়া।
- অক্টোবর-নভেম্বরে জিম্বাবুয়ে সিরিজ। এটা বাংলাদেশের জন্য সবসময় মর্যাদার লড়াই। কিন্তু বাংলাদেশ খেলতে নামছে দলের সবচেয়ে সেরা খেলোয়াড় টিকে ছাড়াই। নাকি বাংলাদেশ দল এখন আর জিম্বাবুয়ে কে গনায় ধরছে না !!!
- আই পি এল, সিপিএল, বিগ ব্যাশ কিংবা কাউন্ট্রি কোথায়ও আর বাংলাদেশের কোন প্রতিনিধি থাকলো না। কোথায়ও গ্যালারিতে বাংলাদেশের প্রতাকা উড়বে না।
তবে আমরা এটা বুঝি, আর যারা ক্রিকেট নিয়ে আছেন তারা তো আরো বোঝার কথা। তাহলে কি জেনে শুনেই এমন সিদ্ধান্ত। অবশ্য মৃত বাবার উত্তরাধিকারে প্রাপ্ত ক্ষমতার দাপট না দেখালে লোকে কিভাবে বুঝবে তিনি ক্ষমতাবান। কাউকে নিষিদ্ধ করা কোন সমাধান নয়। আমরা আসলেই ব্যর্থ, আমরা পাপকে নয় ঘৃণা করতে শিখেছি পাপীকে । আমরা পাপ নাশ চাইতে শিখিনি, শিখেছি পাপীকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে । আমরা আসলেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত নই, নিজেদের ভুলকে অস্বীকার করে অন্যের দায়কে বড় করে দেখে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় নিয়ে গর্ব করতে ভালোবাসি।
অবশ্য একটা পত্রিকায় দেখলাম সাকিবের বউএর সেই ইভটিজার চট্রগ্রামের কোন এক আসনের সাংসদের গুনধর পুত্র। তাদের ক্ষমতার বলি সাকিব আল হাসান। এটা মানতে খুব কষ্ট হচ্ছিল। খুব মনে হচ্ছিল কথাটা যেন মিথ্যা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:০৪