আমার অফিস (হানজিন শিপইয়ার্ড) থেকে সবচেয়ে কাছের (মাত্র ১৮ কিমি দুরে) মসজিদ টি হলো সুবিক টাউনের "বারাল্লাহ মসজিদ" এটি অবশ্য কেপেল সুবিক শিপইয়ার্ড থেকে মাত্র ২ কিমি। যেহেতু ফিলিপাইনে শুক্রবার কর্মদিবস, তাই অফিস থেকে জুম্মার নামাজের জন্য লাঞ্চ এর সাথে আরো ১ ঘন্টা ছুটি নিয়ে নামাজ পড়তে যাই। (এ জন্য আমার ফিলিপিনো ম্যানেজার কে ধন্যবাদ)। অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে যখন যে নামাজ পাই, পড়তে চেস্টা করি।
এখানকার ঈমাম সাহেব সহ প্রায় সকল মুসুল্লিই মরো মুসলিম যাদের আদিবাড়ি মিন্দানাও। ভাংগা ভাংগা ইংরেজিতে তাদের সাথে কথা হয়। জানতে পারি এখানে প্রায় ৫০০ মুসলমানের বাস (পরিবার পরিজন সহ)। এ মসজিদটি গত ২ বছর ধরে নির্মানাধীন, অধিকাংশই এখানে আসা বিদেশীদেরই সাহায্য। এখানকার মুসলমানরা খুবই গরিব, যেহেতু মরো মুসলিমরা মিন্দানাও এর স্বাধীনতার সংগ্রাম করছে তাই মুসলিমদের এখানে সাধারনত কেউ চাকরিতে নেয় না। তাই তারা খুবই ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে এদের কাছে বাংলাদেশের মানুষের জন্য অনেক শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনে প্রথম থেকেই আমার প্রতি তাদের আন্তরিকতা লক্ষনীয়। মসজিদে গেলে সবাই সালাম দেয়, হাত মিলায়। বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন করে। তাদের কাছে বাংলাদেশর মানুষ অনেক ধনী, অনেক বেশী ধার্মিক। আমি অবশ্য মিলাতে চেষ্টা করি, অলংগাপো তে বাংলাদেশ মসজিদ তেরীতে বাংলাদেশী ভাইয়ের কারনে আজকে আমার বা আমাদের এই সমাদর।
গত শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়ে আমরা তিন বাংলাদেশী চিন্তা করলাম মসজিদের আমরা কিছু করতে পারি কিনা। নিজেদের পূন্যের চেয়েও বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের এই বিশ্বাস গুলো টিকিয়ে রাখার জন্য। প্রথমে টাকা পয়সার কথা মনে এলেও পরে মনে হলো আমাদের এমন কিছু দেওয়া উচিৎ যেটা মূল্যবান, উপকারী এবং দেখানো সম্ভব (এই দেখানোটা শুধুই দেশের জন্য, এমন কিছু যেটা দেখিয়ে বলা যবে যে এটা বাংলাদেশ থেকে পাওয়া গিফট)। তাই আমরা প্রাথমিক ভাবে এমন দুইটি জিনিষ নির্বাচন করেছি (১) পানির ডিসপেনসার, সুপেয় পানি ঠান্ডা ও গরম পাওয়া যাবে, দাম আনুমানিক ৫০০০ পেসো (১পেসো = ১.৭৫ টাকা) (২) একটি ২ টন এয়ার কন্ডিশন, এই গরমের দেশে সারা বছরই এটা দরকার, দাম মোটামুটি ৪৫,০০০ পেসো। তার মানে আমাদের দরকার ৫০,০০০ পেসো। তাৎক্ষনিক ভাবে আমরা ১০,০০০ পেসো দেওয়ার নিয়ত করলাম। রোজার প্রথম দিনেই আমরা ইন সা আল্লাহ ১ নং আইটেমটি কিনে মসজিদে দান করতে পারব। বাকি থাকলো শুধু এসি টা। এটা আমরা মাসে মাসে জমিয়ে ইন সা আল্লাহ করতে পারব বলে আশা রাখি। বাকিটা আপনাদের সকলের দোয়া।
পরিশেষে আমাদের মনের একটা সুপ্ত ইচ্ছার কথা বলি। যদি পবিত্র রমজান মাসের মধ্যে এসি টা দিতে পারতাম তাহলে একটু বেশী খুশী হতাম। তাই আপনারা কেউ যদি আমাদের এই উদ্যোগের সাথে শরিক হতেন, তাহলে হয়ত এটা সম্ভব। সাবধান ভুলেও কেউ জাকাতের টাকার নিয়তে দিবেন না, কারন জাকাতের টাকা গরীব মানুষের হক, এটা মসজিদে দেওয়ার নিয়ম নেই। বাংলাদেশের বাইরে থেকে সহজেই ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নে এখানে টাকা পাঠেনো সম্ভব। আমার মোবাইল নং +৬৩ ৯১৭ ৫১৫ ৯৪৬৭, এলিয়েন কার্ড নং F1406004072TV। বাংলাদেশ থেকে কেউ আগ্রহী হলে জানাবেন, কোন একটা উপায় হয়ত থাকবে। আরো কিছু জানতে আমাকে মেইল করতে পারেন [email protected]
(কারো কাছে উদ্যোগটি খারাপ লাগলে দু:খিত, দয়াকরে বাজে কোন কমেন্ট করবেন না )
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ সকাল ১০:৫৭