সহ-ব্লগার প্রলয়-টিয়া জটিলতার পর ব্লগে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা তুলে দেওয়া ঠিক কিনা তা নিয়ে গত রাতে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। অনেকেই সেখানে তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন। এতো বেশি মতামত সেখানে এসেছে যে, প্রত্যেককে উত্তর দেওয়া কঠিন ছিল। তাই ঘটনার সমাপ্তি টানতে আমার কিছু পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করলাম নিচে-
প্রলয়ের দোষ কোথায় এবং কোথায় নয়?
প্রলয় ইন্টারনেটে 'ভিডিও ভালোবাসাবাসি'র প্রস্তাব দিয়েছেন তার বান্ধবীকে, এতে দোষের কিছু দেখছি না। তিনি সেটা পারেন, আবার ওই বান্ধবীও সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রাখেন। এটা একান্তই তাদের দুজনের ব্যক্তিগত ব্যাপার। ব্লগে তা নিয়ে সালিশ-বিচার হতে পারে না। প্রলয়-টিয়ার কনভার্সেশন বিশ্লেষণ করে আমরা দেখছি, তাদের মধ্যে লিঙ্গের আকার-প্রকার ছাড়াও ঋতুকাল-টাল নিয়েও প্রাণবন্ত আলোচনা হয়েছে। এটাও আমি মনে করি, দোষের কিছু নয়। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এ নিয়ে কৌতূহল থাকবে, ইনিয়ে-বিনিয়ে তারা এ বিষয়ক আলাপ আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইবে- সেটাই স্বাভাবিক। তাহলে কি প্রলয়ের কোনোই অপরাধ নেই? আছে। প্রলয়কে আটকানো যায় কেবল একটি জায়গায়- বান্ধবীকে হয়রানি বা ব্ল্যাকমেইলিংয়ের হুমকি দেওয়া। এটা অবশ্যই নিন্দনীয়।
টিয়ার দোষ কোথায় এবং কোথায় নয়?
টিয়া তার অনলাইন বন্ধু প্রলয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা ব্লগে তুলে দিয়েছেন। বেশিরভাগ ব্লগারই এ বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, এই কাজটা অনৈতিক হয়েছে। ব্যক্তিগত আলাপচারিতা ব্লগে তুলে দেওয়া ঠিক হয়নি। তবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্লগার টিয়ার প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে বলছেন, ওই আলাপচারিতা কিংবা ছবি ব্লগে তুলে না দিলে তা ব্লগারদের বিশ্বাস করানো কঠিন হতো। ব্লগের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝি যে, এ কথারও সত্যতা আছে। এ সঙ্গে এটাও একটি গুরুতর বিষয় যে, একটি মেয়ে সাহস করে অভিযোগ তুলেছে বলে আমরা পুরুষ ব্লগাররা তার ওপর হামলে পড়ে একটি অভিযোগকে গুরুত্বহীন করে দিচ্ছি কিনা।
পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন
প্রশ্ন উঠছে, টিয়া সত্যিই মেয়ে কিনা? নাকি কোনো মহল পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রলয়কে ফাঁদে ফেলল? এ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে কনভার্সেশন বিশ্লেষণ করে টিয়াকে সত্যিকারের মেয়ে বলেই মনে হচ্ছে।
লোকটা প্রলয় কিনা- এ নিয়েও সন্দেহের তীর উঠছে। প্রলয় নিজেই মন্তব্যে জানাচ্ছেন, লোকটি তিনি নন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তিনি "প্রলয় জিরো সেভেন এট ইয়াহু" ছাড়াও তার সমধিক পরিচিত ঠিকানা 'গ্রেট গিটারিস্ট এট ইয়াহু' থেকেও টিয়ার সঙ্গে চ্যাট করেছেন। এছাড়া কনভার্সেশনের প্রকৃতি ও ধরন দেখে একে সত্যিকারের প্রলয় বলেই মনে হচ্ছে।
সত্য স্বীকারে গ্লানি থাকা উচিত নয়
প্রলয়ের যারা গুণগ্রাহী, তাদের কাছে তার বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন হয়েছে- এতে কোনো সন্দেহ নেই। এখন প্রলয় নিজেই যদি পুরো বিষয়টা কোনো আড়াল না রেখে পরিস্কার করেন- তাতে লাভও তারই। সত্য স্বীকারে কোনো গ্লানি থাকা উচিত নয়।