somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাবা-মা'র প্রথম সন্তান

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি প্রতিদিন অফিস থেকে বাসায় ফিরে প্রথমেই যে কাজটি করি তা হলো আব্বা-আম্মার সাথে ফোনে কথা বলি। কোনদিন ফোন আব্বা রিসিভ করেন আবার কোনদিন আম্মা ফোন রিসিভ করেন। আম্মা ফোন রিসিভ করলে জিজ্ঞাসা করেন "কে পলাশ ?" "পলাশ" আমার বড় ভাইয়ের নাম। আমি তখন আম্মাকে বলি, "আপনি আমাকে ভালবাসেন না, ভাইয়াকে বেশি ভালবাসেন তাই ফোন ধরেই ভাইয়ার নাম বলেন"। আম্মা একটু রাগ হয়ে বলেন, "বাবা মায়ের কাছে সব সন্তানই সমান"। এই প্রসঙ্গে আম্মা উদাহরণ হিসেবে আমার মরহুম দাদীর কথা বলেন। আমার দাদীর ৮ ছেলে ১ মেয়ে। আমার দাদী সবাইকে নির্দিষ্ট নামে না ডেকে মিয়া নামে ডাকতেন। আমার আম্মার প্রথম সন্তান অথ্যাৎ আমাদের বড়ভাই ১১দিন বয়সে মারা যান, তার নাম ছিল ইমতিয়াজ উদ্দিন মাহমুদ মেনজিস। সেই ৫২ -৫৩ বছর আগের কথা বলে আম্মা এখনও এমনভাবে কাঁদেন যেন আমার ভাই মেনজিস গতকাল মারা গেছেন।

যাহোক আম্মার ফোন ধরেই পলাশ বলার গল্পটি আমি আমার এক চাচার সাথে শেয়ার করি। চাচা জিজ্ঞাস করলো তাতে কি আমার মন মন খারাপ হয়? আমি বললাম কিছুটাতো হয়। কাকা বললো মন খারাপ করোনা। কাকা এরপর জিজ্ঞাসা করলো সব মাসেইতো চাকুরি করে বেতন পাও, কিন্তু প্রথম বেতনটা হাতে পেয়ে কেমন লেগেছিল? আর প্রথম মাসের পুরো বেতনটা যদি হারায়ে ফেলতা তাহলে কেমন লাগতো? প্রথম মাসের পুরো বেতনটা হারানোর পর দ্বিতীয় মাসের বেতনটা হাতে পেলে নিশ্চয়ই আরো বেশি সাবধান এবং আবেগী হয়ে যেতা। তোমার আম্মা প্রথম মাসের বেতন হারিয়ে ফেলেছে এবং দ্বিতীয় মাসের বেতনটা ছিল পলাশ। আমি কাকার কথা অনুধাবন করি এবং আমার মেয়েটার জন্মের পর তোয়ালে পেঁচিয়ে যখন আমার কাছে নিয়ে আসলো সেই অনুভূতিটাও আবার অনুভব করি।

শ্রদ্ধেয় হুমায়ুন আহমেদের একটি লিখা পড়েছিলাম, "বাবা-মা'র প্রথম সন্তান হচ্ছে চমৎকার একটি জীবন্ত খেলনা। এই খেলনার সবই ভালো। খেলনা যখন হাসে, বাবা-মা হাসে। খেলনা যখন কাঁদে বাবা-মা'র মুখ অন্ধকার হয়ে যায়"।

এখন আমি ফোন করলে আমার আম্মা যখন বলে "কে পলাশ" তখন আমার খুব ভালো লাগে এবং তোয়ালে পেঁচানো আমার মেয়েটাকে প্রথম দেখার সুখটা অনুভব করি।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×