প্রবাসী প্রেমিকাকে ঈদের উপহার পাঠাতে টাকার জন্য অপহরণ নাটক সাজিয়ে ধরা পড়েছে চট্টগ্রামের এক কলেজ ছাত্র। তাও অন্য কারও সঙ্গে নয়, সে অপহরণ নাটক করেছে নিজের পিতামাতার সঙ্গে। তাদের ব্ল্যাকমেইল করে মুক্তিপণ বাবদ দুই লাখ টাকা নিতে চেয়েছিল। তবে পুলিশের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ধরা পড়ে সে। তার নাম ইসমাইল রাসেল। সে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ৬ষ্ঠ সেমিষ্টারের ছাত্র। নগরীর মাঝিরঘাটে সেলিম ভবনে তাদের বাসা। ধরা পড়ার পর ‘জীবনে আর এ ধরনের কাজ করব না’ মর্মে মুচলেকা দিয়ে গ্রেফতারের হাত থেকে রেহাই পায় সে। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাসেলের পিতা মোঃ মিরাজ কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, তার ছেলে রাসেল আগের দিন বুধবার রাত ৮টায় তার কয়েকজন বন্ধুসহ টেরিবাজারে কেনাকাটা করতে যায়। টেরিবাজার মোড়ে পৌঁছামাত্র একটি অজ্ঞাত ফোন এলে রাসেল আড়ালে গিয়ে কথা বলে। এরপর তার বন্ধুরা তাকে আর খুঁজে পায়নি। পরদিন রাসেলের পিতা মিরাজ থানায় উপস্থিত হয়ে জানান, তার ছেলেকে অজ্ঞাত অপহরণকারীরা অপহরণ করে ফোনে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। তার ছেলে একটি এয়ারটেল নম্বর থেকে তার মাকে ফোন করে মুক্তিপণ দিয়ে তাকে মুক্ত করতে বলেছে। ঘটনাটি রহস্যজনক মনে হওয়ায় রহস্য উদঘাটনে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম মাঠে নামে। মুক্তিপণ দেয়ার ফাঁদ পেতে শুক্রবার রাতে নগরীর টাইগার পাস মোড় থেকে রাসেলকে উদ্ধার করে পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) সদীপ কুমার দাশ জানান, ধরা পড়ার পর রাসেল জানিয়েছে, ফেসবুকের মাধ্যমে দু’বছর আগে তার সঙ্গে পরিচয় হয় দুবাই প্রবাসী তরুণী আয়েশার। পরিচয়ের পর থেকে প্রতিনিয়ত আয়েশার সঙ্গে চ্যাট ও স্কাইপির মাধ্যমে কথা হয়। এভাবে দু’জনার প্রেম হয়। রাসেলের বাসায় ডেক্সটপ কম্পিউটার থাকলেও ল্যাপটপ না থাকায় বাইরে কিংবা অন্য যে কোনস্থানে ইচ্ছামাফিক যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে একটি ল্যাপটপের প্রয়োজন অনুভব করে সে। এছাড়া আসন্ন ঈদ উপলক্ষে আয়েশাকে দামি উপহার দেয়ার জন্য বেশ কিছু টাকার প্রয়োজন হয়। এ অবস্থায় বন্ধুদের সঙ্গে টেরিবাজারে যাবার নাম করে সে অপহরণ নাটক সাজায়। প্রথমে সে তার ব্যবহƒত একটেল নম্বর পরিবর্তন করে একটি এয়ারটেল সিম কেনে। তারপর লালদিঘির পাড়ের আবাসিক হোটেল পূবালীতে গিয়ে একটি কক্ষ ভাড়া নেয়। সেখানে অবস্থান করে কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে পিতামাতাকে জানায়। তাকে মুক্ত করার জন্য মায়ের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে।