বাংলাদেশে গণমাধ্যমের করোনাকালীন সংকট বিষয়ক সাম্প্রতিক আলোচনায় রাষ্ট্রের অসহযোগীতা, সাংবাদিকদের অনৈক্যসহ আরো নানা বিষয় আলোচনায় আসছে। ঘাঁটতে গিয়ে মনে হলো, এক্ষেত্রে বিনিয়োগের চরিত্র বা মালিকদের স্বভাব বিশ্লেষণ সবচেয়ে জরুরী।
প্রবীণ সাংবাদিক আফসান চৌধুরীর মতে, দেশের গণমাধ্যমের বেশিরভাগ মালিকই এদিক সেদিক করে পয়সা বানায়, সরকারের সাথে খাতির করে। তাদের সঙ্গে বাজারের সম্পর্ক নেই। স্রেফ ইজ্জত বাড়াতে বা নানা উপায়ে অর্জিত সম্পদ নিরাপদে রাখার জন্য গণমাধ্যম চালু রাখে।
“তারা গণমাধ্যম দিয়ে মুনাফা করতে চান না, বরং সেখানে উপরি আয়টা ব্যবহার করতে চান। সেই আয় কমে গেলে তারা আর এটা টানতে আগ্রহী হন না। মালিকের দুইশ কোটি টাকা থাকলেও তখন তিনি বেতন দেবেন না। এটা আমাদের গণমাধ্যমের কাঠামোগত সমস্যা,” বলেন আফসান চৌধুরী।
ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই খণ্ডকালীন শিক্ষকের দাবি, “স্রেফ ক্ষমতাচর্চার জন্য এত গণমাধ্যম চালু রাখার বিপদটা কী হতে পারে এবার তারই বড় একটি প্রমাণ পেলাম আমরা। মূলত এ কারণেই করোনাভাইরাস জনিত সঙ্কটের প্রথম ধাক্কাতেই আক্রান্ত গণমাধ্যম।”
এ ব্যাপারে গণমাধ্যম বিশ্লেষক খন্দকার আলী আর রাজি বলেন, “করোনা না এলেও বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের জন্য এই পরিণতি এড়ানো কঠিন ছিল। কারণ মানুষের সংবাদ কেনার সামর্থ্যের ওপর ভিত্তি করে এগুলো গড়ে ওঠেনি। আবার যে ধরনের সংবাদের জন্য মানুষ মূল্য দিতে রাজি, সে ধরনের সংবাদ পরিবেশন করে না তারা।”
“ভোক্তার চাহিদার সাথে সম্পর্কহীন সংবাদমাধ্যম যে টিকে থাকার কথা না তা এ মুহূর্তে কিছুটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যদিও ইতিহাস বলে কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম সরকারকে বিবিধ সেবা দেওয়ার মাধ্যমে তাদের অস্তিত্ব একভাবে রক্ষা করে চলবে,” যোগ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই সহকারী অধ্যাপক।