বহুত দিনকে বাদ আরেক খানা হিন্দি ফিলিম দেখা ( না দেখু??!! হিন্দি তো পারি না )
ভাবলাম একটা রিভিউ লিখা ফালাই
ফিলিম ঃ ক্রিশ থ্রি
ডিরেক্টর ঃ রাকেশ রোশান
হিরো ঃ ব্যাটম্যানের কাস্টিউম পরা সুপারম্যান
ভিলেন ঃ ম্যাগনিটো এর পাওয়ার ওয়ালা চার্লস জেভিয়ার আর তার মিউট্যান্ট গ্যাং ( এক্স মেন না কিন্তু ) -- তবে মুভির শেষাংশে ভিলেন রোবোকপ কাস্টিউম ধারন করে টিনম্যান বনতা হ্যায় ।
এইবার রিভিউ -
জাদুর কাছ থেকে পাওয়ার পাওয়া দাদু মেহরা সিনিয়ার সূর্যের আলোর জ্যামিতিক প্যাটার্ন আবিশকার করলেন । রেসিডেন্ট ইভিল এর আমব্রেলা করপোরেশনের ভাইরাসের, থুক্কু কাল ফারমার ভাইরাসের এন্টিডোট বানাইলেনও তিনি । কনফিউশনে পরে গেলাম । আসলে তার ফিল্ড অফ এক্সপারটিজ কি? মাইক্রোবায়োলজি না ফিজিক্স? যেই ডক্টর এহেন দামি মাইন্ডের অধিকারী তিনি নোবেল প্রাইজ মিস করলেন এইটা একটা আফসোসের কথা । এমনকি তার ল্যাব “সাইন্টিফিক এন্ড টেকনোলজিকাল এডভান্স রিসার্চ ( স্টার ল্যাব )” ... শিট, এইটা তো ডিসি কমিক্স এর... তার ল্যাব “ইন্ডিয়ান রিসার্চ” এ ইন্ডিয়ান গভমেন্ট কোন নিরাপত্তার ব্যবস্থাই রাখে নাই !! মিউট্যান্ট রা যা মন চায় তাই কইরা বেড়াইল ।
আর ক্লোনিং?? বিজ্ঞানী রাকেশ রোশান, আই মিন ডিরেক্টর রাকেশ রোশান ক্লোনিং কে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন ।ঠান্ডা মাথায় পড়ুন । দাদু মেহরার ক্লোন হইল ভিলেন চার্লস জেভিয়ার – থুক্কু – কাল । কালের ডিএনএ’র সাথে অন্য জন্তুর ফিউশন করে তৈরি হল মিউট্যান্ট গ্যাং । কিন্তু, মেহরা আর কালের চেহারায় কোন মিল নাই! আবার কাল আর তার গ্যাং এর কারো চেহারায় কোন মিল নাই! অবাক হলাম যে মিউট্যান্ট রা কেউ কথা বলতে পারে না, যদিও একজনের জিহ্বা মাশাআল্লাহ এক্স মেনের টোডের চাইতে বড় । তবে একজন মিউট্যান্ট কথা কইতে পারে – শেপ শিফটার মিস মারশিয়ান, আবার থুক্কু – শেপ শিফটার কায়া । কিন্তু আমার মাথায় ঢুকল না যে শেপ শিফটিং আর ডেনসিটি শিফটিং ( যেইটা ডিসি কমিক্স পর্যন্ত মারশিয়ান রে দিয়া দিছে এলিয়েন পাওয়ার বইলা
) – এই পাওয়ার কোন “এনিম্যাল” থেকে কালেক্ট করল কাল দ্য সুপার ভিলেইন? ইয়াপ! কাল কিন্তু আসলেই সুপার ভিলেইন । পুরা সাইকো । তার উদ্দেশ্য দুনিয়া, স্পেশালি মানবজাতিকে ধ্বংস করা । কিন্তু কি কারণে তাহার মানব জাতির উপর এত অভিমান তা ডিরেক্টর মহাশয় খোলাসা করে বললেন না । ছোট থেকে প্রতিবন্ধি ছিল তাই? নাকি পাওয়ার ছিল তাই?
আর, হায় রে হিরো । নিজের নায়িকারেও ভালমত চিনে না । কোন জায়গার কোন শেপ শিফটার রে নিয়া সে ঘর সংসার করতে থাকল সমস্যা হইল, কায়া কিন্তু হিসাবে ক্রিশের ভাস্তি লাগে! কিভাবে? কাল মেহরা রে কয় ড্যাড, আর ক্রিশ রে কয় ব্রাদার কারণ সে মেহরার ক্লোন । আবার কায়া হইল কালের ক্লোন । তাইলে কায়া আর ক্রিশের রিলেশন কই গিয়া দাঁড়ায় বুঝছেন?? বুঝেন নাই? স্বাভাবিক । রাকেশ রোশান নিজেও বুঝে নাই ।
তবে একটা ভাল কাজ করছে রোশান । ডার্ক নাইট রাইজেস এ ক্রিস নোলান ( ক্রিশ না ) ব্যাটম্যানের মূর্তি বানায় ব্যাটম্যান মরার পরে, আর রোশান ক্রিশের মূর্তি আগেই বানাইছে – নাচা কুদাও করছে – ভাল ভাল । তবে ফ্ল্যাশ মিউজিয়ামের ফ্ল্যাশের মূর্তির মত ক্রিশেরতাও ভাইঙ্গা গেল এইটা আসলেই দুঃখের কথা । সেই শাস্তি হিসাবে ম্যান অফ স্টিল এর লাস্ট ফাইটের মত ক্রিশের লাস্ট ফাইটে কাল রে আরেকটু মাইর দেয়া উচিত ছিল । তবে মেট্রোপলিসের মত মুম্বাই যাতে চুরমার না হয়া যায় তাই এই “কম” মাইর সেটা আমি বুজছি ।
শেষে বলা যায়, অনন্ত জলিল ক্লাসের এনিমেশন ( এইটা একটা কমপ্লিমেন্ট – সিরিয়াসলি ) আর ডিসি কমিক্স-মারভেল কমিক্স এর সব এলিমেন্টের মিক্সার হিসাবে ক্রিশ থ্রি খারাপ না । তবে একটা জিনিস এখনও তার শেখা হয় নাই, সেটা হল , সুপার হিরো ভিলেইন কে খুন করে না – হিরো একজন এভেঞ্জার, একজন সোলজার অফ জাস্টিস – কিন্তু এক্সিকিউশনার না । যে খুন করে তাঁকে বলে মারডারার – হিরো না ।
তাই বলা যায় এখনও ক্রিশ ঠিক হিরো হয়ে উঠতে পারেনি...