নজরুলের ডাক নাম ছিল দুখু মিয়া। খুব ছোট থাকতেই, ১৯০৮ সালে নজরুলের পিতা মারা যান। এ সময় জীবিকার তাগিদে তিনি মাজারের সেবক ও মসজিদের মুয়াজ্জিম হন। তিনি গ্রামের মক্তব থেকে নিম্ন প্রাথমিক পরীক্ষা পাস করেন। এরপর তিনি লোকনাট্য লেটো দলে যোগ দিয়ে পালাগান রচনা ও অভিনয় শুরু করেন। তাৎক্ষণিকভাবে কবিতা ও গান রচনার কৌশল তিনি এ সময় রপ্ত করেন।
১৯১০ সালে নজরুল আবার ছাত্রজীবনে ফিরে যান। রানীগঞ্জ সিয়ারসোল রাজ স্কুল ও পরে মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুলে পড়াশোনা করেন। ষষ্ঠ শ্রেণীর পর নজরুল আর্থিক কারণে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে প্রথমে বাসুদেব কবি দলে ও পরে এক রেলওয়ে গার্ডের খানসামা পদে এবং শেষে আসানসোলে চা-রুটির দোকানে কাজ নেন। ১৯১৪ সালে তিনি আবার পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯১৭ সালে নজরুল পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
করাচির সেনানিবাসে থাকার সময়ে নজরুলের আনুষ্ঠানিক সাহিত্যচর্চা শুরু হয়। প্রথম মহাযুদ্ধ শেষে ১৯২০ সালের মার্চে নজরুল কলকাতায় সাহিত্যিক-সাংবাদিক জীবন শুরু করেন। বিভিন্ন পত্রিকায় নজরুলের কবিতা, উপন্যাস প্রভৃতি প্রকাশিত হলে বাংলা সাহিত্যের এ প্রতিভার প্রতি সাহিত্যানুরাগীদের দৃষ্টি পড়ে।
১৯২০ সালে দৈনিক নবযুগ প্রকাশিত হলে নজরুলের সাংবাদিক জীবন শুরু হয়। এরপর তিনি বৃটিশ বিরোধী অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন এবং অন্যান্য সাহিত্যের পাশাপাশি পরাধীনতার বিরুদ্ধে সাহসী গান ও কবিতা রচনা করতে থাকেন।
ধুমকেতু পত্রিকায় নজরুলের রাজনৈতিক কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে প্রকাশিত হলে পত্রিকাটির সেই সংখ্যা নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯২২ সালের তার প্রবন্ধগ্রন্থ যুগবাণী বাজেয়াপ্ত হয় এবং নজরুলকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৩০ সালে প্রকাশিত কবিতা ও গানের সঙ্কলন চন্দ্রবিন্দু বাজেয়াপ্ত হয় এবং প্রলয়-শিখার জন্য নজরুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর নজরুল বিভিন্ন রেকর্ড কম্পানিতে ও রেডিওতে কাজ করেন। ১৯৩৪ সালে তিনি বাংলা সনিমোর সঙ্গেও যুক্ত হন।
১৯৪২ সাল থেকে নজরুল অসুস্থ ও ক্রমেই নির্বাক হয়ে যান। ১৯৭২ সালে তাকে ঢাকায় আনা হয়। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকার পিজি হাসপাতালে কাজী নজরুল ইসলাম মারা যান।
আজ ২৫ মে বিদ্রোহী কবির জন্মবার্ষিকী। কবিকে শ্রদ্ধা।
(ছবি - ইন্টারনেট)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০০৮ সকাল ১১:১৬